টাকা ছিনতাইকারীদের বাইকের ফটো প্রকাশ্যে এনে নগদ পুরস্কার ঘোষণা করল কাছাড় পুলিশ
গতবছরের শেষ দিকে এবং এই বছরের প্রথম কয়েক মাস শিলচর শহরে প্রকাশ্যে দিনের আলোয় একের পর এক ছিনতাই হচ্ছিল। প্রত্যেক ঘটনার ধরন প্রায় একই ছিল এবং পুলিশ একসময় কিছু লোককে আটক করায় সাময়িকভাবে সেটা বন্ধ হয়ে যায়। তবে গতকাল শহরে একই কায়দায় পরপর দুটি ছিনতাইয়ের ঘটনা হয় এবং প্রায় সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় দুষ্কৃতিরা। পুলিশ বিভিন্ন এলাকায় সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে ছিনতাইবাজের বাইকের ফটো সংগ্রহ করতে পেরেছে। পুলিশসুপার বৈভব চন্দ্রকান্ত নিম্বালকর শনিবার সেই ফটো জনসমক্ষে তুলে ধরেছেন। যারা বাইকের বা দুষ্কৃতিদের পর্যাপ্ত এবং বিশ্বাসযোগ্য তথ্য পুলিশের হাতে তুলে দেবে, তাদেরকে নগদ টাকার পুরস্কার দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন তিনি।
পুলিশসুপার জানিয়েছেন, যে কেউ ছিনতাইকারীদের বিশ্বাসযোগ্য তথ্য যদি পুলিশের হাতে তুলে দিতে পারে তাহলে তাকে নগদ টাকার পুরস্কার দেওয়া হবে। এজন্য তিনি দুটো মোবাইল নম্বর জনগণের উদ্দেশ্যে তুলে ধরেছেন, ৯৭০৬৬০৩০৮৮ এবং ৮৬৩৮৬২২৪১১। তিনি জানিয়েছেন, যারা এসব তথ্য তুলে ধরবেন তাদের পরিচয় গোপন রাখা হবে এবং প্রয়োজনে তাদের সুরক্ষার ব্যবস্থা পুলিশ করবে।
শুক্রবার সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ শিলচর শহরের মালুগ্রাম এলাকার এক ব্যক্তির সাড়ে তিন লক্ষ টাকা ছিনিয়ে নেয় বাইকে আসা দুই দুষ্কৃতি। এরপর দুপুর দেড়টা নাগাদ রাধামাধব কলেজের এক কর্মী কলেজের এক কর্মচারি ও কলেজের ২ লক্ষ টাকা নিয়ে ফেরার পথে ছিনতাইকারীর হামলার শিকার হন। পরপর দুই ঘটনায় সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা ছিনতাই করেছে দুষ্কৃতিরা। এব্যাপারে থানায় মামলা হয়েছে। কিন্তু পুলিশের তরফে দুষ্কৃতিদের কোনও হদিস খুঁজে পাওয়া সম্ভব হয়নি।
মালুগ্রাম ডাইভারশন রোডের বাসিন্দা ৫২ বছর বয়সের শিবজি রাম বৃহস্পতিবার সকালে বাড়ির কিছু কাজে টাকা তুলতে ব্যাঙ্কে গিয়েছিলেন। স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার পার্ক রোডের ব্রাঞ্চে তিনি টাকা তোলেন এবং তার ছেলের সঙ্গে বাইকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। তাদের মনে হয়েছিল একটি কালো পালসার কিছু সময় ধরে একেবারে কাছাকাছি ঘেঁষার চেষ্টা করছে এবং বরাবর তাদের অনুসরণ করছে। তবে তারা স্বপ্নেও ভাবেননি এই বাইকে টাকা ছিনতাইকারী দুষ্কৃতি রয়েছে।
শহরের প্রসিদ্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রাধামাধব কলেজের কর্মী হরিপ্রসাদ কুর্মী নামের এক কর্মী কলেজেরই কিছু টাকা তুলতে রাঙ্গিরখাড়ি সংলগ্ন স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার নিউ শিলচর ব্রাঞ্চে গেছিলেন। কলেজের এক লক্ষ টাকা এবং এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আরেক ব্যক্তির এক লক্ষ টাকার চেক নিয়ে তিনি ব্যাঙ্কে জমা করেন। ক্যাশ টাকা তুলে সেটা খুব সাবধানে বুকের পাশে ব্যাগের মধ্যে রেখে সাইকেলে করে কলেজে ফিরছিলেন। তখন হঠাৎ মুখ ঢাকা দুই ব্যক্তি বাইকে চড়ে তাকে ধাঁওয়া করে এবং তার ওপর হামলা করে এবং টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
দুর্ঘটনায় আবার শহরের সুরক্ষা ব্যবস্থা প্রশ্নের মুখে এসে দাঁড়ায়। এবার পুলিশসুপার যে পদ্ধতি নিয়েছেন তাতে কতটুকু লাভ হয় এটা সময় বলে দেবে।
Comments are closed.