জনস্রোত শিলচর রেল স্টেশনে: অভিভূত দিলীপ পাল বললেন "নিজের মানুষের কাছে ফিরে ভালো লাগছে
আসাম বিধানসভার উপাধক্ষ্যের পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর প্রথমবারের মতো শিলচর পৌঁছোলেন বিধায়ক দিলীপ কুমার পাল। তিনি ট্রেনে গুয়াহাটি থেকে যাত্রা করে দুপুর আড়াইটার কাছাকাছি শিলচর স্টেশনে পৌঁছেন যেখানে তাকে বিরাট ভাবে স্বাগত জানানো হয়। ৬০০ মোটরসাইকেল, ১২০ ই-রিক্সা রেলওয়ে স্টেশন থেকে ইটখোলার বিজেপি অফিস পর্যন্ত র্যালি করে।
দিলীপ পাল বলেন, “এটা ঘর ওয়াপসির মতো” তিনি সঙ্গে যোগ করেন “যেহেতু আমি শিলচর থেকে এতদূর ছিলাম তাই আমি আমার নির্বাচনী এলাকার উন্নয়নে অবদান রাখতে পারিনি। এখন আমি যেখানে ছিলাম সেখানেই ফিরে আসলাম, নিজের মানুষদের মধ্যে আবার ফিরে আসতে পেরে অনেক ভালো লাগছে। ”
দিলীপ পাল ডেপুটি স্পিকারের পদ থেকে ইস্তফা দেন কারণ তিনি মনে করেন যে প্রটোকলের বেড়াজালে তার শ্বাসরুদ্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। যদিও অসমীয়া সংবাদমাধ্যম মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল,২০১৬ নিয়ে সংঘাতের জন্যই এই পদত্যাগ বলে উল্লেখ করতে চায় কিন্তু তিনি এই সমস্ত অভিযোগকে একেবারে নস্যাৎ করে বলেন, “আপনাদের এটাই সমস্যা, আপনারা কিছু না থাকা সত্ত্বেও একটা গল্প বানিয়ে দেন। বাংলায় একটা প্রবাদ আছে গল্পের গরু গাছে চড়ে যায়।” তিনি আরও যোগ করেন “সর্বানন্দ সোনোয়াল একজন ভালো মানুষ, তার যোগ্য নেতৃত্বের অধীনে উন্নয়নমূলক কাজ চলছে এবং আমাদের অবশ্যই উনাকে সহযোগিতা করা উচিত।”
বিজেপি দলের কর্মকর্তাদের সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি জানান “তারা আমাদের দলের সম্পদ।” পদত্যাগ করার পরিস্থিতি পুনর্ব্যক্ত করতে গিয়ে তিনি বলেন, “গত দেড় বছর ধরে আমি বেশ কয়েকবার মুখ্যমন্ত্রীর কাছে গিয়েছি কারণ আমি অনুভব করেছি যে এই পদটি আমার জন্য উপযুক্ত নয়। আমি বিলাসিতা মূলক জীবনের সাথে সামঞ্জস্য বজায় রাখতে পারিনি। আমি মুখ্যমন্ত্রী, কর্মকর্তা, বিধায়ক এবং সচিবালয়ের কর্মচারীদের কাছে কৃতজ্ঞ।”
২০১৪ সালের উপ নির্বাচনে তার স্লোগান ছিল “কাছের মানুষ, কাজের মানুষ”। ২০১৬ সালে এটি পরিবর্তন করে হয় “কাছে ছিলাম, কাছে আছি, কাছে থাকবো”। “তাই ব্যাপার হল, আমার মধ্যে এবং মানুষের মধ্যে দূরত্ব বেড়ে গিয়েছিল। একজন উপাধ্যক্ষ হিসেবে কিছু প্রোটোকল আছে যেমন অবাধে কথা বলা ও ঘুরে বেড়ানোর মধ্যে সীমাবদ্ধতা। তাই আমি অবাধে চারপাশে চষে বেড়ানোর জন্য পদত্যাগ করি” বলেন দিলীপ পাল।
আসামের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ভাবা হচ্ছিল যে দিলীপ পালকে কোণঠাসা করে দিয়েছিল রাজ্য হাই কম্যান্ড এবং তিনি সক্রিয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করতে পারছিলেন না। বিজেপির একটি অংশ মনে করে যে পাল ২০১৯ সালের এমপি নির্বাচনের জন্য একজন প্রতিদ্বন্দ্বী, যদিও তিনি এটি সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করেন।
Comments are closed.