Also read in

বারোটা থেকে তিনটে পর্যন্ত তিন ঘন্টার জন্য হাইলাকান্দিতে কারফিউ শিথিল

 

হাইলাকান্দি জেলায় বারোটা থেকে তিনটা পর্যন্ত তিন ঘন্টার জন্য কারফিউ শিথিল করা হয়েছে। জনগণের কষ্টের কথা ভেবেই হাইলাকান্দি প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। কারণ হঠাৎ করে ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় হাইলাকান্দিবাসী মোটেই প্রস্তুত ছিলেন না। এ খবরে ইন্টারনেট পরিষেবা বিহীন হাইলাকান্দির ঘরবন্দি জনগণের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে। তারা তাদের দৈনন্দিন রেশন সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী সংগ্রহের জন্য কিছুটা সময় হাতে পেয়েছেন। এখানে উল্লেখ্য, দুষ্কৃতীরা পাইপ লাইন ভেঙ্গে দেওয়ায় হাইলাকান্দি শহরে পানীয় জল পরিষেবাও ব্যাহত হয়েছে।

সর্বশেষ প্রাপ্ত খবরে জানা যায়, বর্তমানে জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং আর কোনো হিংসাত্মক ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।হাইলাকান্দিতে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।যদিও গতকাল রাত পর্যন্ত স্থানে স্থানে উত্তেজনা অব্যাহত ছিল। শনিবার রাত নটা নাগাদ নামাজের সময় হাইলাকান্দি শহরের পার্শ্ববর্তী এলাকায় আরো একবার হইচই এর ঘটনায় বোঝা যাচ্ছে উত্তেজনা পিছু ছাড়ছে না হাইলাকান্দির। শহরের সৎসঙ্গ বিহার লাগোয়া হাইলাকান্দি লক্ষীরবন্দ বাইপাস খালের পাড় এলাকায় শনিবার আবার উত্তেজনা দেখা দেয়। প্রচুর মানুষের চিৎকার চেচামেচি, হইচই শোনা যায় বলে জানা গেছে। সঙ্গে সঙ্গে এস পি সহ পুলিশের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ, জেলা উপায়ুক্ত কীর্তি জল্লি সহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থলে ছুটে যান। ফলে ঘটনাটি বেশিদূর এগোতে পারিনি।তবে প্রশাসন কিংবা পুলিশের পক্ষ থেকে ঘটনার সত্যতা বিষয়ে নিশ্চিত করা হয়নি।

যদিও ইন্টারনেট পরিষেবা কেটে দেওয়ায় সোশ্যাল মিডিয়ায় কোন পোস্ট করা সম্ভব হচ্ছে না।এদিকে হাইলাকান্দি শহর সহ গোটা জেলায় জনমনে এখনো কিছুটা আতঙ্ক অব্যাহত রয়েছে।প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভয় বার্তা শোনানো সত্ত্বেও গোটা হাইলাকান্দি জেলায় উত্তেজনা এখনো পুরোপুরি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে গোটা জেলায় সিআরপিএফ এবং সেনাবাহিনীর জওয়ান টহল দিচ্ছে। জেলা উপায়ুক্ত কীর্তি জল্লি শান্তি বজায় রাখার জন্য সবার কাছে আবেদন করেছেন।

জেলা উপায়ুক্ত কীর্তি জল্লি পুলিশ কর্তৃপক্ষকে সঙ্গে নিয়ে রাত দুপুরে গোটা জেলা চষে বেড়াচ্ছেন এবং জেলার জনগণকে অভয় বাণী দিচ্ছেন।

এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, শুক্রবারের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে টিএসআই টিংকু গোস্বামীকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।

এখানে আরও উল্লেখ করা যেতে পারে,  জেলা উপায়ুক্তের কার্যালয়ে জেলায় শান্তি ফিরিয়ে আনতে শনিবার এক শান্তিসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা উপায়ুক্ত ছাড়াও বরাক উপত্যকার তিন বিধায়ক, আসাম সরকারের মন্ত্রী – পরিমল শুক্লবৈদ্য সহ আরও অনেকে । এরপর তারা হাইলাকান্দি পরিদর্শন করে শান্তি বজায় রাখার জন্য জনগণের প্রতি বিশেষ আবেদন রেখেছেন। এছাড়াও প্রশাসনের পক্ষ থেকে হাইলাকান্দির বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত পুলিশ স্টেশনেও শান্তি সভার আয়োজন করা হয়েছে।। এইসব শান্তি সভায় পুলিশ স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত অফিসার জনগনকে শান্তি বজায় রাখার জন্য আহ্বান জানাচ্ছেন।

এদিকে সরকারের পক্ষ থেকে ঘটনায় নিহতের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে। মন্ত্রী, বিধায়ক ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ নারাইণপুরে গিয়ে গ্রামবাসীদের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং নিহত জমির উদ্দিন তাপাদারের বাড়িতে গিয়ে পরিবারের অন্যান্যদের সঙ্গেও দেখা করেন।

Comments are closed.

error: Content is protected !!