যুবতীকে ধর্ষণের সাজায় যুবকের দশ বছরের কারাদণ্ড হাইলাকান্দিতে
এক যুবতীকে ধর্ষণের অপরাধে এক যুবককে দশ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করল হাইলাকান্দির আদালত । ঘটনায় প্রকাশ, এক সন্ধ্যারাতে যুবকটি হাইলাকান্দির ঐতিহ্যবাহী রবীন্দ্র মেলা থেকে ফেরার পথে ওই দুঃস্থ যুবতীকে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার নামে গাড়িতে তুলে নিয়ে গিয়ে এক নির্জন স্থানে ধর্ষণ করে। সোমবার হাইলাকান্দির জেলা ও দায়রা বিচারপতি দেবাশিস ভট্টাচার্য এই চাঞ্চল্যকর রায় দিয়েছেন।
এ বছরের ২৬ জানুয়ারি ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটেছিল। ওই ধর্ষণ মামলার সরকারি আইনজীবী উজ্জ্বল কুমার দাস জানান, ঘটনার দিন দুঃস্থ অসহায় পরিবারের এই যুবতী কন্যা সন্ধ্যা রাতে হাইলাকান্দির রবীন্দ্রমেলা থেকে শহরের এস কে রায় হাসপাতালের পাশে থাকা তার ভাড়া বাড়িতে ফিরছিল। তখন ভাড়াঘর মালিকের সৎপুত্র মঞ্জুর আহমেদ বড়ভুইয়া সেই যুবতীকে গাড়িতে তোলে নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে।।
দক্ষিন হাইলাকান্দির প্রত্যন্ত গ্রামের বাসিন্দা এই ধর্ষিতা যুবতী হাইলাকান্দির এক বাড়িতে ভাড়াটে হিসাবে থাকতেন। কিন্তু ঘটনার দিন সন্ধ্যায় গাড়ির চালককে সঙ্গে নিয়ে ঘরের মালিকের পুত্র মঞ্জুর আহমেদ বড়ভুইয়া এই কুকাণ্ড ঘটায় বলে ধর্ষিতা যুবতী পুলিশ এবং আদালতকে জানান। তিনি আরও জানান, হাইলাকান্দি শহরের এস কে রায় হাসপাতালের পাশের মাঠে নিয়ে গিয়ে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছিল।। তারপর এই ঘটনা কাউকে না বলার জন্য ধারালো অস্ত্র দেখিয়ে ধর্ষণকারী তাকে হুমকি দিয়েছিল বলেও নির্যাতিতা যুবতী আদালতকে জানান ।
ঘটনার পর বিধ্বস্ত অবস্থায় ভাড়াবাড়িতে ফিরে এসে তিনি ঘরের মালিকের পত্নী(দ্বিতীয়)কে ঘটনার কথা জানান। তখন মালিকের পত্নী তাকে পুলিশে মামলা করার পরামর্শ দেন। নির্যাতিতা যুবতী তখন তার পরামর্শে পুলিশে মামলা করেন। পুলিশ মামলাটি নথিভুক্ত করে। পুলিশ অফিসার সাহাবুদ্দিন বড়ভুইয়া তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেন। আদালতে ৩৭৬ ধারায় মামলাটির বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়।
আদালত ধর্ষিতা যুবতী , ঘরের মালিকের পত্নী সহ মোট চারজনের স্বাক্ষী গ্রহণ করে । প্রায় এক বছরের মাথায় সোমবার এই মামলার চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করে হাইলাকান্দির জেলা ও দায়রা আদালত । বিচারপতি উভয়পক্ষের বক্তব্য শুনার পর অভিযুক্ত মঞ্জুর আহামেদকে দশ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন । সেইসঙ্গে অভিযুক্তকে আরও দশ হাজার টাকা জরিমানা করেন । জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের অতিরিক্ত সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন বিচারপতি। তাছাড়া ধর্ষিতা যুবতী অত্যন্ত দরিদ্র এবং অসহায় হওয়ার জন্য আদালত সেই যুবতীকে পঞ্চাশ হাজার টাকার আর্থিক সাহায্য প্রদান করতেও জেলা লিগ্যাল সার্ভিসেস অথরিটিকে নির্দেশ দেন বিচারপতি দেবাশিষ ভট্টাচার্য।
Comments are closed.