Also read in

বরাক উপত্যকা উত্তাল করা সেই কিনিরুংকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত জসিম, সাজা ঘোষণা ৪ অক্টোবর

 

হাইলাকান্দি জেলার বেতছড়া গ্রামের ত্রয়োদশী কিশোরী কিনিরুং রিয়াংকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় অভিযুক্ত জসিম উদ্দিনকে দোষী সাব্যস্ত করল হাইলাকান্দি আদালত।
সোমবার হাইলাকান্দির জেলা এবং দায়রা বিচারপতির আদালতে এই হত্যা এবং ধর্ষণ মামলার চূড়ান্ত রায়দান হওয়ার কথা ছিল। বিচারপতি দেবাশিস ভট্টাচার্য মামলার রায় ঘোষণা করতে গিয়ে জানান যে, দক্ষিন হাইলাকান্দির বেতছড়া গ্রামের উপজাতি কিশোরী কিনিরুং রিয়াংকে ধর্ষণ করে হত্যা মামলার প্রধান অভিযুক্ত জসিম উদ্দিন বড়ভুইয়ার বিরুদ্ধে আনা যাবতীয় অভিযোগ প্রমানিত হয়েছে ।। এখন শুধু তার সাজা ঘোষণা করা হবে। তাকে কি ধরনের শাস্তি দেওয়া হবে তা আগামী চার অক্টোবর ঘোষণা করা হবে । বিচারপতি ভট্টাচার্য দোষী জসিম উদ্দিন বড়ভুইয়াকে তার কি ধরনের শাস্তি হওয়া দরকার এব্যাপারে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ এবং সময় দেওয়া হয়েছে বলে জানান।

উল্লেখ্য, প্রায় চার মাস আগে গত চৌদ্দ মার্চ দক্ষিণ হাইলাকান্দির বেতছড়া গ্রামের কিনিরুং রিয়াং হত্যাকান্ড নিয়ে সমগ্র দেশে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছিল। তোলপাড় হয়েছিল অসম ত্রিপুরা সহ বিভিন্ন রাজ্য। মোমবাতি মিছিল থেকে আরম্ভ করে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছিল হত্যাকারির ফাঁসির দাবিতে। যার ফলে অতি দ্রুত এই মামলার শুনানি চলে। এবং অবশেষে রায়দানের তারিখ চূড়ান্ত করা হয়।

আদালত অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করলেও তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে, না যাব্বজীবন কারাদণ্ডে দন্ডিত করা হবে তা জানা যাবে চার অক্টোবর। এদিন কিনিরুং রিয়াং মামলার রায় শুনার জন্য আদালতে ভিড় লক্ষ্যনীয় ছিল । রায় ঘোষণা করলেও সাজা ঘোষণা
করেনি আদালত। অভিযুক্তের দোষী প্রমানিত হওয়ার কথা জানিয়ে দিয়েছে আদালত। এ মামলার সরকার পক্ষের আইনজীবী ছিলেন উজ্জল কুমার দাস। তিনি জানান, দক্ষিণ হাইলাকান্দির বেতছড়া গ্রামের মুক্তাজয় রিয়াঙ্গের ত্রয়োদশী কন্যা কিনিরুং রিয়াঙ্গাকে তার বাড়িতে ঢুকে বলপূর্বক ধর্ষণ করে গলা কেটে হত্যা করেছিল জসিম উদ্দিন বড়ভুইয়া। তারপর খুন এবং ধর্ষণের যাবতীয় প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করেছিল অপরাধী। ঘটনার পর কিনিরুং এর কাকা কামান্তা রিয়াং এমর্মে রামনাথপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ৪৭/২০২৮ নম্বরের মামলা নথিভূক্ত করে তদন্ত আরম্ভ করে। এরপর পুলিশ ২০১৮ সালের ১১ জুন আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। আদালতে জি আর ৪৬৭ নম্বরে মামলাটি নথিভূক্ত করে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়।

লোমহর্ষক এই ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় মোট ২১ স্বাক্ষীর জবানবন্দি আদালতে রেকর্ড করা হয়। তাদের মধ্যে হাইলাকান্দির অতিরিক্ত পুলিশসুপার জগদীশ দাশ , ডি এস পি নয়নমণি বর্মন, ডাক্তার আর বি মালাকার, আবুল হুসেন বড়ভুইয়া, সার্কল অফিসার ধ্রুবজ্যোতী চক্রবর্তী , ফরেন্সিক অফিসার রেনুবরা হেন্ডিক, পুলিশের এস আই সাব্বির আলি , কাটলিছড়ার সার্কল অফিসার জেমস আইন্ড, স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য সহ অন্যদের স্বাক্ষী গ্রহণ করা হয় । প্রায় চারমাস মামলা চলার পর এদিন আদালত অভিযুক্তকে দোষী বলে ঘোষণা করে।

Comments are closed.