
হাইলাকান্দি ধর্ষণ মামলায় চাঞ্চল্যকর মোড় : অগপ নেতা আফতাব উদ্দিনের নির্দেশে বিধায়কের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, স্বীকারোক্তি গৃহবধূর
হাউলাকান্দি জেলার বহুচর্চিত ধর্ষণ কাণ্ডে চাঞ্চল্যকর মোড় নিল।গৃহবধূ মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যম ডেকে জানালেন যে বিধায়ক নিজাম উদ্দিন চৌধুরী নির্দোষ। তিনি তার স্বামীকে পেতে আলগাপুরের অগপ নেতা আফতাফ উদ্দিনের পরামর্শে বিধায়কের বিরুদ্ধে মিথ্যা ধর্ষণ মামলা করেছিলেন। এদিন গৃহবধূটি আরও জানান, বিয়ের পর থেকে স্বামী সাহিদ আহমেদ লস্করের সাথে তার মনোমালিন্য চলছিল। যার দরুন তিনি ও তার ভাই আলগাপুরের অগপ নেতা আফতাফ উদ্দিনের দ্বারস্থ হন। তখন আফতাব উদ্দিন তাদেরকে বিধায়কের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলার পরামর্শ দিয়ে তিনি নিজেই মরিব ডেকে মামলা লেখান এবং তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে যান। এর আগে তিনিই সংবাদ মাধ্যমকে তার বাড়িতে ডেকে পাঠান এবং বিধায়কের বিরুদ্ধে মিথ্যা বিবৃতি দেওয়ান। এদিন ওই গৃহবধূ জানান, স্বামীকে ফিরে পেতেই তিনি এটা করেছেন। আর এটা তার ভুল হয়েছে বলেও জানান। তিনি বলেন, একজন ভালো মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করে আজ তিনি অনুতপ্ত। উল্লেখ্য, বহুচর্চিত ধর্ষণ কাণ্ডে ওই গৃহবধূর স্বামী সাহিদ লস্করকে গুয়াহাটির লোকপ্রিয় গোপীনাথ বরদলৈ বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করে রবিবার রাতে হাইলাকান্দি নিয়ে আসা হয় । বর্তমানে ধৃত সাহিদ হাইলাকান্দি পুলিশের হেফাজতে রয়েছে।
হাইপ্রোফাইল এই মামলার তদন্তের জন্য রবিবার বিকেলে দক্ষিন অসম পুলিশের ডি আই জি দেবরাজ উপাধ্যায় হাইলাকান্দি সফর করে যান। ডি আই জি ও এস পি মহনীষ মিশ্র এদিন ধর্ষণ কাণ্ড নিয়ে সাহিদকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। উল্লেখ্য, ধর্ষণ মামলার আসামী সাহিদ আহমেদ মুম্বাই যাওয়ার পথে গুয়াহাটি বিমানবন্দর থেকে শনিবার রাতে আজারা পুলিশ তাকে আটক করে এবং রবিবার হাইলাকান্দি পুলিশকে সমঝে দেয়। এদিকে রবিবার তাকে হাইলাকান্দির বিশেষ আদালতে তুলে পাঁচদিনের রিমান্ডে নিয়ে আসে পুলিশ। এদিন তার স্বাস্থ্য পরীক্ষাও করা হয়।হাইলাকান্দি পুলিশ গৃহবধূকে আদালতে পেশ করে এবং ভারতীয় দন্ড বিধির ১৬৪ নম্বর ধারায় তার বয়ান রেকর্ড করা হয়। হাইপ্রোফাইল ধর্ষণ মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত আলগাপুরের বিধায়ক নিজাম উদ্দিন চৌধুরীর গ্রেফতার হওয়ার সম্বাবনা ক্রমশই বাড়ছিল। যদিও এর আগেই গৃহবধূ সংবাদ মাধ্যম ডেকে জানিয়ে দেন যে তার উত্থাপিত অভিযোগ সত্যি নয়।
উল্লেখ্য, ভাটিরকুপা তৃতীয় খণ্ডের উনিশ বছরের যুবতী গৃহবধূ হাইলাকান্দি সদর থানায় বিধায়ক নিজাম উদ্দিনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দায়ের করায় হাইলাকান্দি সহ রাজ্য জুড়ে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছিল । হাইলাকান্দি পুলিশ বিধায়কের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধিরর ৩৭৬/৩৪২/৩৪ ধারায় ৫২৯/১৮ নম্বরে মামলা নথিভুক্ত করে।। গৃহবধূ অভিযোগ করেছিলেন , গত উনিশ মে স্বামী সাহিদ আহমেদ ওরফে সাজন তাকে সার্কিট হাউসে বিধায়ক নিজাম উদ্দিনের কক্ষে ঢুকিয়ে দিয়ে যান। আর সেখানেই বিধায়ক তার সাথে অপকর্ম করেন।। তিনি বাধা দিলে মুখচাপা দিয়ে বিধায়ক বলপূর্বক ধর্ষণ করেন। এরপর ২৩ মে তার স্বামীর ঘরে ফের যান বিধায়ক এবং বাড়ির দ্বিতল ভবনে ফের ধর্ষণ করেন।। নির্যাতিতা মহিলা আর ও অভিযোগ করেন, বিধায়ক তাকে নিয়ে গুয়াহাটি যাওয়ার জন্য পনের জুন বিকেল চারটা নাগাদ তার ভাটিরকুপা বাড়িতে আসেন।। তখন এনিয়ে বচসা হয়। এরপর ফিরে যান বিধায়ক।। পর পর শ্লীলতাহানিরর ঘটনায় তার স্বামীও জড়িত বলে মহিলাটি পুলিশের কাছে সরাসরি অভিযোগ করেছিলেন। এদিকে বিধায়ক নিজাম উদ্দিন শুরুতেই মহিলার উত্থাপিত অভিযোগ খণ্ডন করে বলেছিলেন,ধর্ষনের অভিযোগ সাজানো। বিধায়ক আরও বলেছিলেন, সাজন আহমেদ ও তার স্ত্রীর মধ্যে বহুদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এই ঝগড়া মিটিয়ে দেওয়ার জন্য সাজন ও তার স্ত্রী সার্কিট হাউসে এসেছিলেন।। একটি স্বার্থান্বেষী চক্র মহিলাকে হাতিয়ার করে মিথ্যা মামলা করে অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে দাবি করেছিলেন নিজাম উদ্দিন চৌধুরী।তাই এবার মহিলার জবানবন্দিতে নতুন মোড় নিল ধর্ষণ কাণ্ড।
Comments are closed.