অসম-মিজোরাম সীমান্ত সংঘাতের মাস্টারমাইন্ড হিমন্ত, বিস্ফোরক দাবি বিধায়ক কমলাক্ষের
অসম মিজোরাম সীমান্ত সংঘাতের মাস্টারমাইন্ড হিমন্ত বিশ্ব শর্মা, তার নির্দেশেই পুরো ঘটনাচক্র চলছে, এমনটাই মনে করেন উত্তর করিমগঞ্জের বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ। মঙ্গলবার বিকেলে মুখ্য সচিব জিষ্ণু বড়ুয়া এবং ডিজিপি ভাস্কর জ্যোতি মহন্ত অসম-মিজোরাম সংলগ্ন ফ্রেঞ্চ নগর এলাকার নিহত ইন্তাজুল আলি লস্করের বাড়ি পরিদর্শন করেছেন। এর আগে উত্তর করিমগঞ্জের বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ সহ কয়েকজন কংগ্রেস নেতা এলাকা পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কমলাক্ষ তার অদ্ভুত দাবি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “অসমের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা নর্থ-ইস্ট ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (নেডা)-র আহবায়ক। এই অ্যালায়েন্সের অধীনেই রয়েছে অসম এবং মিজোরামের সরকার। অসমে সরাসরি বিজেপির সরকার রয়েছে এবং মিজোরামে রয়েছে বন্ধু জোট। অথচ এই দুই রাজ্যের মধ্যে জমি-বিবাদ মিটছে না, বরং সময়ে সময়ে আরও গভীর হচ্ছে। শেষমেষ বিবাদের জেরে অসমের এক ব্যক্তিকে প্রাণ হারাতে হলো, অথচ নেডার আহবায়ক এব্যাপারে নীরব। এতে স্পষ্ট হয় তিনি ভেতরে ভেতরে সীমানা-বিবাদের আগুনকে আরও হাওয়া দিতে চাইছেন।”
ইন্তাজুল আলির মৃত্যুর সিবিআই বা এনআইএ স্তরের তদন্ত সহ পরিবারের জন্য এককোটি ক্ষতিপূরণ দাবি করেন কমলাক্ষ। তিনি বলেন, “অসম-মিজোরাম সংলগ্ন ফ্রেঞ্চ নগর এলাকার বাসিন্দা ইন্তাজুল আলি লস্করকে অপহরণ করে হত্যা করেছে মিজো বাহিনী। সরকারের তরফে একটা পাঁচ লাখ টাকার অনুদান দিয়ে দায় সারার কাজ চলছে। প্রথমত পুরো ঘটনার সিবিআই বা এনআইএ স্তরের তদন্ত হতে হবে। এই হত্যার পেছনে অনেক বড় চক্রান্ত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের নিরপেক্ষ তদন্ত হলে মাস্টারমাইন্ড পর্যন্ত পৌঁছে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। নিহত ইন্তাজুল আলি লস্কর তার পরিবারের একমাত্র রোজগার করা ব্যক্তি ছিল। পরিবারকে অন্তত ৫০ লক্ষ থেকে এক কোটি টাকার আর্থিক অনুদান দিতে হবে।”
বিজেপি নেতৃত্বাধীন বর্তমান রাজ্য সরকার রাজ্যস্তরের সীমানা বিবাদের বিষয়ে সম্পূর্ণ ব্যর্থ বলে অভিযোগ করেন কমলাক্ষ। তিনি বলেন, “শুধুমাত্র মিজোরাম নয়, মেঘালয়, মনিপুর, ত্রিপুরা এবং অরুণাচল প্রদেশের সঙ্গেও অসমের সীমান্ত বিবাদ রয়েছে। ক্ষমতার দিক দিয়ে প্রত্যেকটি রাজ্য অসম থেকে দুর্বল, তবু তারা যখন তখন জমি ছিনিয়ে নেয় এবং রাজ্য সরকার এগুলো আটকাতে পারে না। অন্যান্য রাজ্যে অসমের মানুষকে হেনস্থা করা হয়, তাদের বিরুদ্ধে যে কোনও ধরনের নিয়ম বানিয়ে দেওয়া হয়, অথচ রাজ্য সরকার প্রায় নীরব ভূমিকা পালন করে। যদিও আমার মনে হয় এসব জমি বিবাদের পেছনে অন্য রাজনৈতিক কারণ রয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এসব ঘটনার পেছনে মাস্টারমাইন্ড হিসেবে কাজ করেন।”
সরকার ভুল করলে বিরোধীরা এত চুপ থাকে কেন, এব্যাপারে তিনি বলেন, “এখন মিজোরামের সঙ্গে অসমের সীমানা সংঘাত নিয়ে কথা বলতে এসেছি। আমরা বিরোধী হিসেবে সরকারের কাছে আবেদন করতে পারি, তাদের ভুলগুলো চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে পারি। আমরা তো আর মিজোরামের সীমান্তে ঢুকে তাদের সঙ্গে লড়াই করতে পারব না। এসব কাজের জন্য সেনাবাহিনী রয়েছে, সরকার চাইলে তাদের কাজে লাগাতে পারে।”
মুখ্যসচিবের পরিদর্শনের আগেই কংগ্রেসের দল এলাকা ত্যাগ করে। তবে কিছু স্থানীয় মানুষ তাদের এই পরিস্থিতিতে রাজনীতি না করতে উপদেশ দেন। কেউ কেউ আবার ‘গো ব্যাক’ স্লোগানও দেন।
Comments are closed.