"হিমন্ত-সর্বানন্দ দুজনেই মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার জন্য সমানভাবে যোগ্য এবং অধিকারী," বললেন রাজদীপ
আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে পরিষ্কার হয়ে যাবে রাজ্যে সরকার কোন জোটের হাতে যাচ্ছে। এর আগে বিভিন্ন এক্সিট-পোলে বলা হয়েছে রাজ্যে বিজেপি নেতৃত্বাধীন মিত্র-জোট এগিয়ে রয়েছে এবং সরকার গড়ার সম্ভাবনা তাদের বেশি। শুক্রবার জেলা বিজেপির কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে সাংসদ রাজদীপ রায় তার মতামত তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “এক্সিট পোল মানে হচ্ছে সম্ভাবনা, এটা চূরান্ত ফলাফল নয়। বিভিন্ন এজেন্সি নিজেদের মতো পর্যালোচনা করেছে, কেউ বিজেপিকে কম দিয়েছে, কেউ আবার বেশি আসন দিয়েছে। তবে আমার ধারণা, রাজ্যে বিজেপি নেতৃত্বাধীন মিত্র-জোট ৮৪ থেকে ৮৬ টি আসনে জয়ী হবে এবং পরিষ্কার সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার হবে।”
বরাক উপত্যকার ১৫ টি আসনের এক্সিট-পোলে কিছু কিছু এজেন্সি একেবারেই আলটপকা ফলাফল দিয়েছে। কেউ কেউ বরাকের মোট আসনের সংখ্যাও জানেনা, অথচ বলে দিয়েছে কোন দল কতগুলো আসনে জয়ী হচ্ছে। বরাক উপত্যকায় মিত্র জোটের প্রদর্শন প্রসঙ্গে রাজদীপ রায় বলেন, “বরাক উপত্যকার ১৫ টি আসনের মধ্যে বিজেপি এবার ইতিহাস গড়বে। কাছাড় জেলার সাতটি আসনে সবগুলোয় বিজেপি জয়ী হচ্ছে। ১৯৯১ সালে বরাক উপত্যকায় ৯ টি আসনে বিজেপির জয় হয়েছিল, এবার এই সংখ্যা ছাড়িয়ে আমরা ডাবল-ডিজিটে (অর্থাৎ ন্যূনতম দশে) গিয়ে দাঁড়াব। তবে পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি গণনার পর কোনও ধরনের বিজয়োল্লাস হবে না, কেউ আবির খেলবেন না, বাজি-পটকা ফাটানো হবেনা অথবা জনসমাগম করা হবে না।”
রাজদীপ রায় শিলচরের সাংসদ হওয়ার পাশাপাশি বিজেপির অসম প্রদেশ কমিটির সাংগঠনিক সাধারণ সম্পাদকও। প্রদেশ বিজেপি কাকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে এগিয়ে রাখছে, এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “২০১১ সালে সর্বানন্দ সোনোয়াল বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন, এরপর তার নেতৃত্বে দল এগিয়ে গেছে এবং ২০১৬ সালের নির্বাচনে আমরা কংগ্রেসকে হটিয়ে ক্ষমতায় আসতে সমর্থ হয়েছিলাম। একইভাবে ২০১৫ সালে হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন এবং পরবর্তী প্রত্যেক নির্বাচনে দলের ভালো ফলাফলের ক্ষেত্রে তাঁর সমানভাবে অবদান রয়েছে। এই বছর আমরা অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়ে নতুন ক্ষমতায় সরকারে আসবো। একজন শক্ত এবং নতুন মুখ্যমন্ত্রীর মুখ দলকে নেতৃত্ব দেবে। আমার মনে হয় যোগ্যতার নিরিখে সর্বানন্দ সোনোয়াল এবং হিমন্ত বিশ্ব শর্মা মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার জন্য সমানভাবে যোগ্য। এছাড়া অধিকারের দিক দিয়েও দুজনের অবস্থান সমান, কেননা আজ বিজেপি যে অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে, দলকে সেখানে নিয়ে আসতে তাদের দুজনের অবদান সমান। ফলে দুজনের মধ্যে যে কেউ মুখ্যমন্ত্রী হলে আমি সমানভাবে খুশি হব। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এবং আমরা তাদের সিদ্ধান্ত মেনে সব কাজ করি।”
এছাড়া রাজদীপ রায় কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন মহাজোটকে কটাক্ষ করেন। তিনি বলেন, “গত বছর যখন সারাদেশ কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল তখন কংগ্রেস নেতারা বাড়িতে বসে ছিলেন এবং জনগণের কাছে তারা ধীরে ধীরে গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছেন। নির্বাচনের আগে হঠাৎ করে তারা এআইইউডিএফ’র মত একটি সাম্প্রদায়িক দলের সঙ্গে আঁতাত করে পেছনের দরজা দিয়ে রাজনীতির ময়দানে এন্ট্রি নিয়েছেন। জনগণ এতটাও বোকা নন যে তাদের মতো দলকে সরকারে নিয়ে আসবেন।”
Comments are closed.