Also read in

বরদলৈ ট্রফিতে ঐতিহাসিক জয় ইন্ডিয়া ক্লাবের, ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন এ এস ই বির বিরুদ্ধে বাজিমাত শিলচরের চ্যাম্পিয়নদের

ছয় দশকেরও বেশি সময় পর বরদলৈ ট্রফিতে খেলতে নেমে প্রথম ম্যাচেই নতুন ইতিহাস রচনা করলো শিলচরের শতাব্দীপ্রাচীন ইন্ডিয়া ক্লাব। আজ গুয়াহাটির জাজেস ফিল্ডে তারা হারিয়ে দিলো ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন তথা রাজ্যের হেভিওয়েট ক্লাব এ এস ই বিকে। ১-০ গোলে।

সবদিক থেকেই ম্যাচে ফেবারিট ছিল ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। খুব কমই ছিলেন যারা ইন্ডিয়া ক্লাবের পক্ষে বাজি ধরেছিলেন। তবে কোচ কালিকঙ্কন আচার্য এর ছেলেরা সব হিসাব-নিকেশ পাল্টে দিলেন। ইন্ডিয়া ক্লাবের এই জয় সত্যি কারের অর্থে ঐতিহাসিক।

এদিন প্রথম পনেরো মিনিটে অ্যাটাকিং ফুটবল দিয়ে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের চমকে দেয় শিলচরের চ্যাম্পিয়নরা। এ এস ই বি যেন এর জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিল না। সে ছিল শুরু। তবে ম্যাচের বয়স বাড়ার সঙ্গে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা নিজেদের গুছিয়ে নেয়। তারপরও প্রথমার্ধে বল পজেশন থেকে শুরু করে সব কিছুতেই এগিয়ে ছিল ইন্ডিয়া ক্লাব। এ এস ই বি অবশ্য দু-একটি ভালো সুযোগ তৈরি করেছিল। তবে ইন্ডিয়া ক্লাবের গোলকিপার নিতিশ মেহরা দলকে কোন ক্ষতি হতে দেননি।

এ এস ই বি তাদের সব আক্রমণ করছিল লেফ্ট উইং দিয়ে। ফলে টেকটিক্যালি এক পরিবর্তন করেন ইন্ডিয়া ক্লাবের কোচ কালি কঙ্কন। তিনি রাইট ব্যাক হিসেবে মাঠে নামান অধিরাজকে। এটা দারুন কাজ দেয়। এই পরিবর্তনের ফলে আরো কম্প্যাক্ট হয়ে ওঠে ইন্ডিয়া ক্লাবের ডিফেন্স সিস্টেম। যার ফলে এ এস ই বির আক্রমণভাগ সেভাবে জায়গা জুড়ে খেলতে পারেনি।

৯০ মিনিট ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন দের বিরুদ্ধে সেয়ানে সেয়ানে লড়াই করেছে ইন্ডিয়া ক্লাব। অধিকাংশ ক্ষেত্রে তো এগিয়েছিল শিলচরের চ্যাম্পিয়নরাই। তবে ক্লাইমেক্স যে তখনো বাকি ছিল। ম্যাচ তখন ইনজুরি টাইমে। এ এস ই বি প্রতিপক্ষের আক্রমণ ঠেকাতে অনেকটাই ডিফেন্সিভ। এমন পরিস্থিতিতে ডান পায়ের আগুনে শটে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন দের জাল কাঁপিয়ে দেন ভি ভিগনেশ। দর্শনীয় গোলে ইন্ডিয়া ক্লাব এগিয়ে যায় ১-০ গোলে। এ এস ই বির পক্ষে তখন আর কিছুই করার ছিল না। এভাবেই দারুন ফুটবল উপহার দিয়ে এক ঐতিহাসিক জয় ছিনিয়ে নেয় ইন্ডিয়া ক্লাব। এবার আগামীকাল শিলচরের চ্যাম্পিয়নরা খেলতে নামবে আইটিবিপি এর বিরুদ্ধে।

বরাক উপত্যকার দল হিসেবে শুক্রবার জাজেস ফিল্ডে দারুন সমর্থন পেয়েছে ইন্ডিয়া ক্লাব। এমন অনেকেই রয়েছেন যারা বরাক উপত্যকার বাসিন্দা। তবে কর্মসূত্রে থাকেন গুয়াহাটিতে। এমন অনেকেই এদিন ভিড় করেছিলেন জাজেস ফিল্ডে। ম্যাচ শেষে সবাই ভিড় জমান ইন্ডিয়া ক্লাবের ডাগআউটে। কালকের ম্যাচের জন্য খেলোয়াড়দের দারুন উৎসাহ দিচ্ছিলেন তারা। এ এস ই বির বিরুদ্ধে এই ঐতিহাসিক জয়ের পর ইন্ডিয়া ক্লাব ডাগআউটে ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ। হবারই কথা। ম্যাচ প্রসঙ্গে ইন্ডিয়া ক্লাব কোচ কালি কঙ্কন আচার্য বলেন, ‘অবিশ্বাস্য জয়। এ এস ই বির মত রাজ্যের সবচেয়ে শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে আজ দল যা পারফর্ম করেছে তা এককথায় অবিশ্বাস্য। অধিকাংশই আমাদের হিসেবের মধ্যে রাখেননি। তবে দলের উপর আমার পূর্ণ আস্থা ছিল। জানতাম, নিজেদের সেরাটা নিংড়ে দিলে যে কোনও কিছু সম্ভব।’

Comments are closed.