Also read in

বিশ্ব মানবাধিকার দিবসে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিভিন্ন দিক আলোচিত হল অপিনিয়ন মুভার্স'র আলোচনা সভায়

 

“আসামে ডি ভোটার ও ডিটেনশন ক্যম্পের আবর্তে মানবাধিকার পদে পদে লঙ্ঘন করা হচ্ছে।” এডমিন দীপক সেন গুপ্ত অপিনিয়ন মুভার্স আয়োজিত আলোচনা সভার উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করতে গিয়ে কথাগুলো বলেন।পরে বিভিন্ন বক্তার বক্তব্যে বিষয়টি বার বার স্থান পায় এবং কিভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে তাও খতিয়ে দেখা হয়।

১০ ডিসেম্বর ছিল ৭০ তম বিশ্ব মানবাধিকার দিবস, এই দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় ওপিনিয়ন মুভার্সের উদ্যোগে পালিত হল শিলচর সার্কিট হাউস রোডে অবস্থিত ” আশীর্বাদ বিবাহ ভবনে”। গ্রুপের বর্ষীয়ান সদস্য সঙ্গীতজ্ঞ সুদীপ্ত দেব রায়ের গাওয়া উদ্বোধনী সঙ্গীত হিসেবে ” বরিষ ধরা মাঝে শান্তির বারি…” রবীন্দ্রসঙ্গীতের মাধ্যমে সভার কাজ শুরু হয়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এই বছর রাষ্ট্রসংঘ শান্তিকে ” থিম’ হিসাবে ঘোষনা করেছে। সেই দিক থেকে বিবেচনা করলে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক উদ্বোধনী সঙ্গীতের পর গ্রুপ এডমিন দীপক সেন গুপ্ত সভার উদ্দেশ্য ব্যখ্যা করতে উঠে বলেন যে সামন্তবাদের যুগে মানবাধিকার যেমন স্বীকৃত ছিল না ফ্যাসিবাদ মানবাধিকারকে পদদলিত করে একমাত্র গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ মানবাধিকারকে সম্মান করে স্বীকৃতি জানায়। তিনি এরপর ” ডি ভোটার ও ডিটেনশন ক্যাম্পের আবর্তে লঙ্ঘিত মানবাধিকার” শীর্ষক আলোচনা সভার সঞ্চালক অধ্যাপক জয়দীপ বিশ্বাসকে মঞ্চে আমন্ত্রণ জানান। পরে একে একে বক্তা কমল চক্রবর্তী, হালিম আহমেদ চৌধুরী, স্নিগ্ধা নাথ ও অরবিন্দ রায়কে মঞ্চে আমন্ত্রণ জানানো হয়।

কমল চক্রবর্তী তাঁর বক্তব্যে ডি ভোটার ও ডিটেনশন ক্যম্পের মর্মস্পর্শী চিত্র তুলে ধরে সাধারণ মানুষের নির্লিপ্ত মানসিকতাকে নিন্দা করেন, এই ক্ষেত্রে কতিপয় সুযোগ সন্ধানী আইনজীবীর অসাধু আচরণের ঘটনা উল্লেখ করেন। হালিম আহমেদ চৌধুরী আইনি প্রক্রিয়া সম্পর্কে নিজের অভিজ্ঞতা ও মুক্তির প্রক্রিয়া সম্পর্কে আলোকপাত করেন। স্নিগ্ধা নাথ বলেন, সস্তার শ্রম বাজার তৈরির উদ্দেশ্য পূঁজিবাদ এই জগন্য খেলায় নেমেছে। অরবিন্দ রায় নিজের বক্তব্যে তুলে ধরেন ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় কিছু কিছু মুসলিম সংগঠন আইনি লড়াই লড়ছেন, তুলনামূলক ভাবে হিন্দু সমাজ নিস্ক্রিয়। সঞ্চালক সভার শেষে প্রশ্ন উত্থাপন করেন, কে কাকে স্বীকৃতি দেয়? নাগরিক রাষ্ট্রকে না রাষ্ট্র নাগরিককে? অন্যান্য দেশে নাগরিক রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি জানালেও আমাদের দেশে রাষ্ট্র নাগরিকদের চিহ্নিত করে।

প্রশ্নোত্তর পর্বে অধ্যাপক সন্তোষ রঞ্জন চক্রবর্তী, রমাপ্রসাদ বিশ্বাস, শিক্ষক কৃষ্ণেন্দু রায়, অনিল পাল, সাংবাদিক পিযুশ দাশ অংশ গ্রহণ করেন। দুই ঘন্টার অধিক সময় ধরে এই আলোচনা সভায় সবাই মতামত ব্যক্ত করেন যে মানবাধিকার লঙ্ঘনকে প্রতিরোধ করতে হবে। সভার শেষে আর্থিকভাবে অসচ্ছল ও অসুস্থ অঙ্কিত শিকদারের সু চিকিৎসা ও ঔষধের জন্য সভা থেকে সংগৃহীত চার হাজার টাকা তার অভিভাবকের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

Comments are closed.