Also read in

তৃণমূল স্তর থেকে কাজ করেই উঠে এসেছি, চন্দন জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী সচিব পদপ্রার্থী

১৯৮০ সালে টাউন বয়েজ ক্লাবের হাত ধরে শিলচরের বিভাগীয় ফুটবলে তার ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল। ‌ সেবারই ইরিগেশন আর সির মত শক্তিশালী দলকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল টাউন বয়েজ ক্লাব। সেই দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন চন্দন শর্মা। সে ছিল এক সফরের শুরু। ‌ যা আজও চলছে। শুধু তার ভূমিকাটা বদলেছে। ‌ এখন তিনি একজন পোড়খাওয়া ক্রীড়া সংগঠক। সঙ্গে জেলা ক্রীড়া সংস্থার আসন্ন বি জি এমের সচিব পদপ্রার্থীও।

মাঠে ময়দানের সঙ্গে যুক্ত অথচ চন্দন শর্মা কে চেনেন না, এমন লোক খুজে পাওয়া মুশকিল। সারাটা বছর মাঠে ময়দানে ছুটতে দেখা যায় তাকে। ‌ গত চার বছরে জেলা ক্রীড়া সংস্থার কোনো পদে ছিলেন না তিনি। ‌ তারপরও কিন্তু তাকে বিভিন্ন টুর্নামেন্টের আয়োজনে ছুটতে দেখা গেছে টাউন ক্লাব মাঠ থেকে ইন্ডিয়া ক্লাব এবং সতীন্দ্রমোহন দেব স্টেডিয়ামে। বরাক উপত্যকা ক্রীড়া সাংবাদিক সংস্থার মিডিয়া ক্রিকেট ফেস্ট বলুন অথবা শিলচর ভেটেরন ক্রিকেটার্স ক্লাবের বরাক প্রিমিয়ার লিগ, চন্দন শর্মাকে দেখবেন গুরু দায়িত্বে। কাজের জন্য এদিক থেকে ওদিক ছুটছেন।

শাসকগোষ্ঠীর প্যানেল সামনে আসার পর আজ এক সাংবাদিক সম্মেলনের ডাক দেন সচিব পদপ্রার্থী চন্দন। তুলে ধরেন একজন ফুটবলার এবং সংগঠক হিসেবে নিজের সাফল্য। একজন ফুটবলার হিসেবে বেশ সুনাম ছিল চন্দন শর্মার। খেলেছেন শিলচরের বড় বড় ক্লাবের জার্সি গায়ে। টাউন বয়েজ, ইন্ডিয়া ক্লাব, টাউন ক্লাব, পি এইচ ই এবং পুলিশ এসির হয়ে দাপট দেখিয়েছেন। জেলা দলে খেলেছেন জুনিয়র, সাব জুনিয়র এবং সিনিয়র স্তরে। ১৯৮৪ ও ৮৫ সালে ন্যাশনাল স্কুল গেমসে খেলেছেন।

সংগঠক হিসাবে জেলা ক্রীড়া সংস্থায় আসেন ১৯৮২ সালে। ইন্ডিয়া ক্লাব তাকে জেনারেল কাউন্সিল মেম্বার হিসেবে সংস্থায় পাঠায়। তারপর আর পেছনে ফেরে তাকাতে হয়নি সংগঠক চন্দন শর্মাকে। ১৯৮৬ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত টানা কাজ করে যান সংস্থার ফুটবল বিভাগে। দায়িত্ব সামলান ফুটবল শাখার সহকারী সচিব হিসেবে। এরপর ২০০২ থেকে ২০১০ পর্যন্ত ফুটবল সচিবের দায়িত্বে ছিলেন। ২০১০ থেকে ২০১৫ জেলা ক্রীড়া সংস্থার গ্রাউন্ড সচিব হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। এরপর ২০১৫ থেকে ২০১৮ স্টেডিয়াম সচিব এবং ২০১৮-১৯ টার্মে ছিলেন এজিএস হিসেবে।

চন্দন শর্মা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দলের ম্যানেজারের দায়িত্বেও ছিলেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ২০০৪ সালে অনূর্ধ্ব ১৯ আন্তজেলা ক্রিকেটে চ্যাম্পিয়ন শিলচর দলের ম্যানেজার ছিলেন। সি কে নাইডু ট্রফির জন্য আসাম দলের ম্যানেজারের পদেও ছিলেন। সেই দায়িত্ব তিনি তিনবার সামনে ছিলেন। শিলচর সিনিয়র ক্রিকেট দলের ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করেছেন পাঁচবার। তবে চন্দন শর্মা ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় হাইলাইট হলো গত চার বছরে তিনি শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থার কোন পদেই ছিলেন না। তারপরও কিন্তু মাঠ থেকে নিজেকে সরিয়ে নেননি। এখানেই বাকিদের সঙ্গে তার পার্থক্য। কোন দায়িত্বে না থাকলেও গত চার বছরে ছোট বড় সবকটা টুর্নামেন্টে দেখা গেছে চন্দন শর্মাকে। বর্তমান সচিব বিজেন্দ্রপ্রসাদ সিং যখনই ডাক দিয়েছেন, ছুটে গেছেন মাঠে।

চন্দন শর্মা বলছিলেন, ‘আমি তৃণমূল স্তর থেকে কাজ করে আজ সচিব পদের জন্য দাবি পেশ করতে যাচ্ছি। এতটা বছর আমি সংস্থার সুনামধন্য সচিবদের অধীনে কাজ করেছি। গত চার বছরে কোন দায়িত্বে না থেকেও সচিব বিজেন্দ্রর ডাকে বিভিন্ন টুর্নামেন্ট সামলেছি।’ পোড় খাওয়া এই ক্রীড়া সংগঠক জানান, সংস্থার প্রত্যেক ভোটারদের সঙ্গেই যোগাযোগ করার চেষ্টা করছেন। ভালো সাড়াও মিলছে। তাঁর আশা, সংস্থার সদস্যরা তাকে বিমুখ করবেন না।

সচিব পদপ্রার্থী বলছিলেন, ‘দেখুন, আমি টি-টোয়েন্টি নয়, টেস্ট ম্যাচ খেলছি। শুধু এক দুটো টুর্নামেন্ট নয়, সারাটা বছরই আপনি আমাকে মাঠে পাবেন। স্পোর্টস আমার কাছে ধর্ম। ‌ মাঠই আমার কাছে শেষ কথা।’ নিজের প্রতিপক্ষ সম্পর্কে বলেন, ‘অতনু ভট্টাচার্য আমার ছোট ভাইয়ের বন্ধু। ‌ সচিব হিসাবে দাবি পেশ করার অধিকার রয়েছে ওর। সেটাই ও করেছে। এনিয়ে কিছু বলতে চাই না। তবে যেমন রেসপন্স পাচ্ছি তাতে মনে হয় না আমার জন্য লড়াইটা কঠিন হবে।’

চন্দন শর্মার গলায় শোনা গেল শিলচরের বিধায়ক দীপায়ন চক্রবর্তীর প্রশংসাও। তিনি বলেন, ‘বিজেন্দ্র সরে যাওয়ার পর আমার কাছে সচিবের প্রস্তাব আসে। বিজেন্দ্র আমার সঙ্গে আছে। সব ধরনের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। আমাদের বিধায়কও খুব সমর্থন করছেন। ‌ খুব সাহায্য করছেন। ‌ ইতিমধ্যেই আপনারা জানেন তিনি পরিকাঠামো উন্নতির জন্য ২৫ লক্ষ টাকা অনুমোদন করিয়েছেন। জেলা ক্রীড়া সংস্থার জন্য একটা ট্রান্সফর্মার ও দিচ্ছেন। ‌ ডি এস এর পরিকাঠামো উন্নতির জন্য সব ধরনের সাহায্য করছেন।’

দায়িত্বে আসলে ফুটবলে বিশেষ জোর দিতে চান চন্দন শর্মা। তিনি বলেন, ‘দায়িত্বে আসার পরই আমার সামনে দুটি বড় চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করবে। প্রথমটি হল ফুটবল ক্লিয়ারেন্স। তারপর টেবিল টেনিস রেংকিং। আগস্টের প্রথম সপ্তাহেই টেবিল টেনিস রেংকিং অনুষ্ঠিত হবে। ‌ ফলে প্রস্তুতির জন্য খুবই কম সময় মিলবে। ‌ এটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ হবে।’

Comments are closed.