"আমি মারা গেলে ডাঃ হিমন্ত বিশ্ব শর্মা, রাজদীপ রায় এবং কৌশিক রায় মৃত্যুর জন্য দায়ী থাকবেন," প্রদীপ দত্ত রায় কোভিড সংক্রমণের পর
প্রদীপ দত্ত রায়ের নাটকীয় গ্রেপ্তার এবং ততোধিক নাটকীয় মুক্তি নিয়ে এখন আরও প্রশ্নচিহ্ন উঠছে; ৬৫ বছর বয়সী লিভার-ট্রান্সপ্লান্ট রোগী দত্ত রায় এখন কোভিড পজিটিভ। ব্যক্তিগতভাবে একটি কোভিড পরীক্ষা করার পরে, তিনি জানতে পেরেছেন যে তার সিটি-ভ্যালু ২৮-এ দাঁড়িয়েছে এবং তিনি করোনা সংক্রমিত।
দত্ত রায় গত ৮ ডিসেম্বর, জামিনে মুক্তি পান। জামিন প্রক্রিয়া সম্পন্ন নিশ্চিত করতে রাতে সিজেএম-এর আদালত খোলা হয়েছিল। খবরটি কভার করতে থাকা মিডিয়ার লোকেরা সেদিন এই তাড়াহুড়া দেখে হতবাক হয়েছিলেন। প্রদীপ দত্ত রায়ের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সৌমেন চৌধুরী, তার মেয়ে প্রথমা দত্ত রায় জানিয়েছিলেন যে রাত হওয়ায় পরদিন সকালে জামিনের কাজ শেষ হবে। কিন্তু, জেলা প্রশাসনের “চাপ” ছিল এবং তাই, অ্যাডভোকেট চৌধুরীকে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় ছুটতে হয়েছিল। বিশ্বাস করুন বা না করুন, প্রদীপ দত্ত রায় মাঝরাত ১ টায় মেডিকেল হেফাজত থেকে মুক্তি পান। দত্ত রায় নিজেই বলেছিলেন যে, অনেক দেরি হয়ে গেছে এবং তিনি পরের দিন অর্থাৎ ১০ ডিসেম্বর সকালে বাড়ি যাবেন। কিন্তু, প্রশাসন অনড় থাকে এবং অবশেষে রাত ১১ টায় আদালত খোলার পরে জামিন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
আজ প্রদীপ দত্ত রায় বলছেন, এটা তার বিরুদ্ধে আরেকটি ষড়যন্ত্র ছিল। “৬ ডিসেম্বর আমি চিকিৎসকদের আরটি-পিসিআর করার জন্য অনুরোধ করেছিলাম। এটি করা হয়েছিল কিন্তু আমি রিপোর্ট পাইনি। আমি মনে করি তারা জানতে পেরেছিলেন যে আমি কোভিডে সংক্রমিত হয়েছি এবং সেই কারণেই, আমাকে দ্রুত মুক্তি দেওয়ার জন্য চাপ দেন,” বলেন প্রদীপ দত্ত রায়।
এখানে উল্লেখ করা দরকার যে, তার আইনজীবীরা প্রথমে সিজেএম আদালতে এবং তারপর জেলা ও দায়রা জজের আদালতে যুক্তি দিয়েছিলেন যে প্রদীপ দত্ত রায় কোভিড-১৯ য়ে আক্রান্ত হলে তার জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। । “আমি মারা গেলে, ডাঃ হিমন্ত বিশ্ব শর্মা, রাজদীপ রায়, কৌশিক রায় দায়ী থাকবেন। তারা আমার লিভার ট্রান্সপ্লান্ট অপারেশন সম্পর্কে জানতেন । এমন কি রাজদীপ রায় আমার অপারেশনের পরে আমার সাথে দেখা করতে ও এসেছিলেন। মেদান্ত হাসপাতালের ডাক্তাররা আমাকে সতর্ক করেছিলেন যে, কোভিড আমার জন্য মারাত্মক হতে পারে কারণ আমার গুরুতর কো- মর্বিডিটি রয়েছে,” দত্ত রায় যোগ করেন।
সিজেএম তার আদেশে ২৭ নভেম্বর রাত ১০ টা নাগাদ প্রশাসনকে “বিশেষ মনোযোগ” প্রদান এবং “সম্পূর্ণ চিকিৎসা সেবা” নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। যদিও জামিন একটি নিয়ম এবং জেল একটি ব্যতিক্রম তবু কেন একজন ৬৫ বছর বয়সী লিভার ট্রান্সপ্লান্টের রোগী জাতীয় নিরাপত্তার জন্য এত হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন যে তাকে কারাগারে পাঠাতে হয়েছিল। এখন প্রশ্ন হলো, তার স্বাস্থ্যের দায়িত্ব কে নেবে?
Comments are closed.