কোভিড ওয়ার্ডে ফরমালিন ছড়িয়ে পড়ায় আতঙ্ক ভ্যালি হাসপাতালে, কর্তৃপক্ষ বলছেন, "ভুলবশত হয়েছে, সবাই অক্ষত আছেন"
বরাক উপত্যকার দ্বিতীয় বেসরকারি হাসপাতাল হিসেবে কোভিড চিকিৎসা পরিষেবা শুরু করেছিল মেহেরপুরের ভ্যালি হাসপাতাল। বুধবার হাসপাতালের কোভিড ওয়ার্ডে ফরমালিন ছড়িয়ে পড়ার ঘটনায় হাসপাতাল জুড়ে ব্যাপক আতঙ্ক দেখা দেয়। তৎক্ষণাৎ আক্রান্ত ব্যক্তিদের অন্যত্র শিফট করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, এতে হাসপাতালে স্বাস্থ্য কর্মী সহ একাংশ রোগীর উপর প্রভাব পড়েছে। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অন্য কথা বলছেন।
কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এক রোগীর মৃত্যুর পর মৃতদেহ প্যাক করতে গিয়ে ভুলবশত ফরমালিন ছড়িয়ে পড়ে। যেহেতু ওয়ার্ডের জানালা-দরজা বিশেষভাবে বন্ধ করা রয়েছে, ফলে এটি সহজে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে এবং কিছুটা শ্বাসরুদ্ধকর পরিবেশ তৈরি হয়। সঙ্গে সঙ্গে রোগীদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। যতক্ষণ পর্যন্ত পুরো কামরা ফরমালিনের প্রভাবমুক্ত হয়নি, রোগীদের সেখানেই রাখা হয়। রাতে আবার ধীরে ধীরে তাদের ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা হচ্ছে। তবে এতে কেউ গুরুতর ভাবে অসুস্থ হয়ে যাননি।
তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় নানান ধরনের তথ্য ঘুরে বেড়াচ্ছে। কেউ কেউ বলছেন এক রোগীর মৃত্যুর পর বিছানা এবং আশপাশের এলাকা স্যানিটাইজ করার কাজ চলছিল। হাসপাতাল কর্মীরা ভুলবশত স্যানিটাইজারের বদলে ফরমালিন ব্যবহার করেন। যখন কামরায় ফরমালিন স্প্রে করা হয় রোগীরা অসুস্থ হয়ে পড়েন। এমনকি কয়েক জন নার্সও প্রায় অজ্ঞান হয়ে পড়েন।
হাসপাতালের অন্যতম কর্ণধার বিধায়ক রাজদীপ গোয়ালা এব্যাপারে বলেন, “যেহেতু কোভিড চিকিৎসা নতুনভাবে শুরু করা হয়েছে, ফলে দু-একটা অসুবিধা স্বাভাবিক। আমি যতটুকু খবর নিয়েছি এতে জানা গেছে, মৃতদেহ প্যাক করতে গিয়ে ফরমালিনের পাত্রটি ভুলবশত খোলা রাখা হয়, এতেই অন্যান্য রোগীদের অসুবিধা হয়েছে। তবে এতে বিশেষ কোনও দুর্ঘটনা হয়নি, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।”
এতে কিছু প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে; রোগীর মৃত্যুর পর কোভিড ওয়ার্ডেই ফরমালিনের সাহায্যে মৃতদেহ কেন প্যাক করা হচ্ছিল? যদি এমনটা না হয়, তবে কি সত্যি সত্যিই ভুলবশত স্যানিটাইজারের জায়গায় ফরমালিন স্প্রে করা হয়েছে? এসব বিষয়ে তদন্ত করে পরিষ্কার তথ্য তুলে ধরার দায়িত্ব স্বাস্থ্য বিভাগের।
বিভাগীয় আধিকারিকদের কাছে এব্যাপারে জানতে চাইলে তারা বলেন, তাদের কাছে এখনো কোনও খবর পৌঁছয়নি। একটি বেসরকারি হাসপাতালে কোভিড ওয়ার্ডে এত বড় ঘটনার পরও স্বাস্থ্য বিভাগ খবর পায় না, এতে সাধারণ মানুষ হাসপাতালে রোগীকে চিকিৎসার জন্য পাঠিয়ে কতটুকু আশ্বস্ত হতে পারেন? এই প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে।
Comments are closed.