
সুপার ফোরেও শনির দশা কাটলো না ! ছন্নছাড়া খেলে ড্র করল তারাপুর-টাউন ক্লাব
সুপার ফোরেও শনির দশা কাটলো না ! ছন্নছাড়া খেলে ড্র করল তারাপুর-টাউন ক্লাব
একের পর এক সুযোগ নষ্ট। ডি-বক্সে গোলকিপারকে একা পেয়েও বাইরে শট। ম্যাচ জুড়ে একের পর এক মিস পাস। আর এসবের ককটেল-একটা ছন্নছাড়া ফুটবল ম্যাচ। শুক্রবার রামানুজ গুপ্ত সুপার ডিভিশন ফুটবল এমনই এক ফুটবল ম্যাচ এর সাক্ষী থাকলো। সুপার ফোরে এসেও ছিটেফোঁটা উন্নতি করতে পারলো না তারাপুর এসি ও টাউন ক্লাব। ছন্নছাড়া ফুটবল খেলে ১-১ গোলে ড্র করে মাঠ ছাড়লো উভয় দল।
সুপার ডিভিশনের সুপার ফোর এর লড়াই। সত্যি কি তাই? শুক্রবারের তারাপুর ও টাউন ক্লাবের ম্যাচের পর এই প্রশ্নটা ওঠাই স্বাভাবিক। ম্যাচ শেষে তো দু দলই হাসির খোরাক বনল হাতেগোনা দর্শকদের। একে তো প্রচন্ড গরম উপেক্ষা করেও ফুটবলের টানে মাঠমুখো হচ্ছেন দর্শকরা। মানে হাতেগোনা কয়েকজন দর্শক। তার মধ্যে আবার এই ধরনের ফুটবল ম্যাচ? যার না কোনো গ্রামার আছে, না আছে কোনো শিল্প। আছে শুধু দিশাহীন, গ্রামারহীন ফুটবল। ভাবা যায়, জেলা তো বটেই গোটা উপত্যকার সবচেয়ে বড় ফুটবল এর আসরে এই ধরনের হতশ্রী ফুটবল খেলছে তারাপুর ও টাউন ক্লাব!
ছয়-সাতটা ম্যাচ খেলে নেওয়ার পরও বোঝাপড়া বলতে কিছুই নেই দুটি দলে। এখনো ডাগআউট থেকে ফুটবলারদের উদ্দেশ্যে চিৎকার করে যাচ্ছেন কোচিং স্টাফ রা। ফুটবলের ‘অ আ’ চিৎকার করে বলতে হচ্ছে। কয়েকজন ফুটবলার কে দেখে মনে হচ্ছে ফুটবলের ‘ফ’ সম্পর্কেও জ্ঞান নেই। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেল এদের ওই কিনা মোটা অংকের টাকা দিয়ে সই করিয়েছে ক্লাব গুলি! এই হচ্ছে শিলচরের ফুটবলের হালহকিকত।
এই যখন অবস্থা তখন দলগুলোর কাছ থেকে ভালো ফুটবলের আশা করাই ভুল। টাউন ক্লাব দলটার কথাই ধরুন। শিলচর স্পোর্টিং ক্লাবকে উড়িয়ে দিয়ে কি শুরুটাই না করেছিল। এরপরই ছন্দপতন। আবার ডার্বি ম্যাচ ইন্ডিয়া ক্লাবের বিরুদ্ধে জয়। মনে হচ্ছিল সুপার ফোরে এই ছন্দটা ধরে রাখবে তারা। তবে সুপার ফোরে উঠে তো যেন ফুটবলই ভুলে গেছে টাউন ক্লাব। প্রথম ম্যাচে হারের পর এবার তারাপুর এর বিরুদ্ধে ড্র। সুপার ডিভিশনে ভালো করতে হলে যে ধারাবাহিকতা দরকার’ সেটাই নেই লাল-হলুদের।
উল্টোদিকে, একেবারে শেষ মুহূর্তে অভিনব ক্লাবের বিরুদ্ধে জয় দিয়ে সুপার ফোরে টিকিট অর্জন করেছিল তারাপুর এসি। সুপার ফোরে কই ফুটবলাররা নিজেদের নিংড়ে দেবেন, উল্টো এখানেও চলছে মিস পাস সুযোগ নষ্টের মহড়া। এই না হল সুপার ফোর এর দল! শুক্রবার শেষ দুই মিনিটে তারাপুর যে দুটি সহজ সুযোগ মিস করলো তার ব্যাখ্যা দেওয়া মুশকিল। ডি-বক্স থেকেও গোল করতে পারলেন না জেবাদই। এর পর ইনজুরি টাইমে আবারো চান্স মিস করলেন। প্রথমবার মারলেন পোস্টে। দ্বিতীয়বার বারে। এই দৃশ্য দেখে গ্যালারি থেকে ফুটবল প্যাভিলিয়ন জুড়ে তখন হাসির রোল।
এদিন ম্যাচে প্রথম লিড নেয় টাউন ক্লাব। ৪৭ মিনিটে গোল করেন পাউসেমেই রংমাই। গোল পাবার পরই যেন একটা খোলসে ঢুকে পড়ে তারা। অবশ্য চলতি সুপার ডিভিশনে এটা একটা ট্রেন্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে। গোল পেয়ে যাবার পরই দলগুলি ডিফেন্সিভ হয়ে যায়। এর খেশারত দিচ্ছে দলগুলি। টাউন ক্লাব ও ডিফেন্সিভ খেলার খেসারত দিল। একের পর এক সুযোগ মিস করার পর অবশেষে ৮১ মিনিটে তারাপুর কে সমতায় ফেরান উৎসব মেধাই। শেষ দু মিনিটে দুটি সুযোগ হাতছাড়া না করলে হয়তো পুরো পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়তে তারাপুর। তবে এদিন যে ধরনের ম্যাচ হয়েছে, সে অনুসারে এই স্কোর লাইনকে মোটেও খারাপ মনে হয়নি। কারণ জেতার জন্য যে তাগিদের দরকার, যে খিদের দরকার সেটা উভয় দলেই মিসিং ছিল।
Comments are closed.