কাছাড়ের জেলাশাসক হিসেবে 'দেবনা নেবনা' কর্মসূচি রূপায়ণে অগ্রণী ভূমিকার জন্য সম্মানিত হলেন ডাঃ এস লক্ষণন
কাছাড়ের পূর্বতন জেলাশাসক ডাঃ এস লক্ষণন প্রশাসক হিসেবে অগ্রণী ভূমিকার জন্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’-এর তরফ থেকে সম্মাননা পেলেন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘দেবনা নেবনা’ কার্যসূচি রূপায়নে তার বিশেষ ভূমিকার জন্য সীমান্ত জেলার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে এই পুরস্কার তার হাতে তুলে দেওয়া হয়। গতকালের এই জমকালো অনুষ্ঠানে সমগ্রদেশের ১৬জন জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে এই পুরস্কার প্রদান করা হয়।
গতকাল সন্ধ্যায় দিল্লিতে প্রদান করা হয় এই ‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এক্সেলেন্স ইন গভরন্যান্স অ্যাওয়ার্ডস’, যেখানে আকর্ষণের কেন্দ্রে ছিলেন ডাঃ এস লক্ষণন দেশের ১৬ জন ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট অর্থাৎ জেলাশাসক। দু’বছর অন্তর একবার আয়োজিত এই অনুষ্ঠান প্রকাশ্যে সম্মান জানায় সেইসব মহিলা এবং পুরুষদের, যাঁদের কাঁধে ভর দিয়েই চলে দেশের শাসনব্যবস্থা, যাঁদের হাত দিয়েই আসে পরিবর্তন।
ডাঃ লক্ষ্মণন সম্বন্ধে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস থেকে জানানো হয়, ২০১৭ সালের মে মাসে দুর্নীতির বিরুদ্ধে এই দেব না নেব না কর্মসূচি শুরু হয়েছিল কাছাড় জেলায়। প্রশাসনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সেই সময় থেকে ফোনের মাধ্যমে ১৩০৭৫ দুর্নীতির অভিযোগ এসেছিল, প্রায় ৩০,০০০ অভিযোগ এসেছিল ড্রপবক্সে, এবং ৪৭২ অভিযোগ এসেছিল মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে। “এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য ছিল সাধারণ মানুষকে দুর্নীতির যে কোন ঘটনা তৎক্ষণাৎ জানানোর সুযোগ করে দেওয়া, যাতে উৎস থেকেই দুর্নীতি রোধ করা সম্ভব হয়”, বলেন লক্ষণন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পাঁচজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, যাঁদের হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেন প্রাপকেরা, ১৬ টি ক্ষেত্রে তাঁদের অসামান্য অবদানের জন্য। এই ক্ষেত্রগুলির মধ্যে রয়েছে কৃষি, শিক্ষা, প্রযুক্তি, নারী কল্যাণ, এবং অন্যান্য বিভাগ। ২৪ টি রাজ্যের ৮৪ টি জেলা থেকে আসা ২৪৯ টি মনোনয়নের মধ্যে থেকে বেছে নেওয়া হয় পুরস্কার প্রাপকদের।
পুরস্কার প্রাপকরা হলেন কার্তিকেয় মিশ্র (পূর্ব গোদাবরী, অন্ধ্র প্রদেশ), বিভাগ – দক্ষতা উন্নয়ন ও মাওবাদী-অধ্যুষিত অঞ্চলে বিকাশ
সন্দীপ নানদুরি (তিরুনেলভেলি, তামিল নাড়ু), বিভাগ – কেন্দ্রীয় প্রকল্পের রূপায়ণ
আয়াজ তামবোলি (বিজাপুর, কর্ণাটক), বিভাগ – স্বাস্থ্য
আস্তিক কুমার পাণ্ডে (আকোলা, মহারাষ্ট্র), বিভাগ – সম্প্রদায়ের সঙ্গে সম্পৃক্ততা
রাজকুমার যাদব (দক্ষিণ সিকিম), বিভাগ – উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় জেলা
বিবেক যাদব (ভিজিয়ানাগ্রাম, অন্ধ্র প্রদেশ), বিভাগ – শক্তি
ডাঃ এ শরত (জাগতিয়াল, অন্ধ্র প্রদেশ), বিভাগ – শিক্ষা
তুকারাম মুন্ধে (নভি মুম্বই, মহারাষ্ট্র), বিভাগ – প্রযুক্তির বাস্তবায়ন
ডাঃ প্রশান্ত ভোলানাথ নারনাওয়ারে (ওসমানাবাদ, মহারাষ্ট্র), বিভাগ – কৃষি
সি আর খরসন (ভালসাড়, মহারাষ্ট্র), বিভাগ – সর্বব্যাপী উদ্ভাবন
রাকেশ কনবর (কুল্লু, হিমাচল প্রদেশ), বিভাগ – সমাজ কল্যাণ
ডাঃ মাধবী খোড়ে চাওয়ারে (নাগপুর, মহারাষ্ট্র), বিভাগ – শিশু বিকাশ
আশিস সাক্সেনা (ঝাবুয়া, মধ্য প্রদেশ), বিভাগ – নারী কল্যাণ
ডাঃ শাহিদ ইকবাল চৌধুরী (উধমপুর, জম্মু), বিভাগ – জম্মু ও কাশ্মীর এলাকা
ডাঃ এস লক্ষণন (কাছাড়, আসাম), বিভাগ – সীমান্তবর্তী জেলা।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সড়ক ও হাইওয়ে পরিবহণ তথা ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ মন্ত্রী নীতিন গড়করি, কেন্দ্রীয় ক্রেতা সুরক্ষা, খাদ্য ও জনবন্টন মন্ত্রী রামবিলাস পাসওয়ান, কেন্দ্রীয় আইন ও বিচার তথা ইলেকট্রনিক্স ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ, কেন্দ্রীয় রেল তথা বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল, এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উন্নয়ন (স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত) প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর, কর্মী, জন-অভিযোগ ও পেনশন, তথা পরমাণু শক্তি দপ্তর ও মহাকাশ দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী ডাঃ জিতেন্দ্র সিং।
উল্লেখ্য, ডাক্তার ডাঃ এস লক্ষণন কাছাড়ের জেলা শাসক হিসেবে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে কাজ করে গিয়েছেন। অতিশয় সজ্জন ব্যক্তি হিসেবেও তিনি সুপরিচিত ছিলেন। স্বচ্ছ ভারত কর্মসূচি রূপায়ণে অধীনে কাছাড়ের অবদান রেখে গিয়েছেন। অতি অল্প সময়ের মধ্যে তার বদলির আদেশ আসায় কাছাড়ের জনগণ হতাশ হয়েছিলেন।
Comments are closed.