হাইলাকান্দি কংগ্রেসে কোন্দল অব্যাহত:গেটে তালা, দায়িত্ব নিতে পারলেন না জয়নাল
পঞ্চায়েত নির্বাচনে হাইলাকান্দি জেলায় কংগ্রেস দলের ভরাডুবি হলে দায়ী থাকবেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি রাহুল রায় ।। শনিবার নবনিযুক্ত কার্যকরী সভাপতি জয়নাল উদ্দিন লস্করকে নিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করতে গিয়ে কংগ্রেস ভবনের গেইটে তালা দেখতে পেয়ে হোচট খেয়ে সংবাদ মাধ্যমের কাছে উল্লিখিত প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর কংগ্রেস নেতারা।
এদিন কংগ্রেস ভবনে তালা থাকায় দায়িত্ব নিতে পারেননি দলের নবনিযুক্ত কার্যকরী সভাপতি জয়নাল উদ্দিন লস্কর। পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচার চলার সময় আবার হাইলাকান্দি জেলা কংগ্রেসের সভাপতি রাহুল রায়ের বিরুদ্ধে ফের হুংকার দেন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নেতারা।হাইলাকান্দি জেলা কংগ্রেসের সহ সভাপতি সাহাব উদ্দিন চৌধুরী, প্রদেশ কংগ্রেসের সদস্য আনাম উদ্দিন লস্কর, সহসভাপতি সামসুল ইসলাম বড়লস্কর, আলগাপুর ব্লক কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি হিলাল উদ্দিন লস্কর,সাধারন সম্পাদক রুকন উদ্দিন বড়ভুইয়া, দক্ষিণা রঞ্জন চন্দ, সাধারন সম্পাদক সামস উদ্দিন বড়লস্কর, মিতুজ্জামান লস্কর এবং সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন মজুমদার প্রমুখ এদিন স্পষ্ট ভাবে জানান,পঞ্চায়েত নির্বাচনে কংগ্রেসের ভরাডুবি ঘটলে দায়ী থাকবেন রাহুল রায়। বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নেতারা তাদের রাহুল বিরোধী অভিযান অব্যাহত রাখার কথাও জানান।এদিন তারা পঞ্চায়েত নির্বাচনের টিকিট বন্টনের নামে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ এনে ফের জেলা সভাপতি রাহুল রায়ের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন। তারা বলেন, টিকিট কেনা বেচার বাজার শেষ তাই এখন কংগ্রেস ভবনে তালা ঝুলছে।
এদিকে দলীয় কর্মীদের বিক্ষোভের মুখে পড়ার ভয়ে রাহুল রায় গা ঢাকা দিয়ে কলকাতা চলে গেছেন। । এদিন জেলা কংগ্রেসের নবনিযুক্ত কার্যকরী সভাপতি জয়নাল উদ্দিন লস্করকে পাশে বসিয়ে তারাই সাচ্চা কংগ্রেসি বলে দাবি করেন বিদ্রোহীরা। তারা জেলাকংগ্রেস সভাপতি রায়ের বিরুদ্ধে তোপ দাগিয়ে বলেন, তার চামচা দালালরা আর্থিক লেলদেনের বিনিময়ে অকংগ্রেসি এবং অযোগ্য ব্যাক্তিকে দলীয় প্রার্থী করেছেন। প্রকৃত কংগ্রেস কর্মীদের রীতিমত ছুঁড়ে ফেলেছেন রাহুল রায়। তাই রাহুল রায়ের এহেন অগতান্ত্রিক কার্যকলাপে বিরক্ত হয়ে ইতিমধ্যেই দল ছেড়েছেন বিশিষ্ট কংগ্রেস নেতা ফয়জুল হক মজুমদার, ননীবাবু সিংহ এবং কমরুল ইসলাম বড়ভুইয়া প্রমুখ।
এদিন হাইলাকান্দি কংগ্রেসের বিদ্রোহী নেতারা আরেক ধাপ এগিয়ে গিয়ে বলেন, প্রাক্তন মন্ত্রী গৌতম রায়ের পরামর্শে পিতাপুত্র মিলে দলীয় টিকেট বন্টনের নামে বাণিজ্য করেছেন। যার দরুন রাহুল রায়ের অগণতান্ত্রিক কোন কাজের প্রতিবাদ করছেন না গৌতম রায়। তাদের সাফ কথা, পিতাপুত্র মিলে হাইলাকান্দি কংগ্রেসকে ধংস করে বিজেপিতে যাওয়ার ফন্দি করছেন। জেলাকংগ্রেসের সম্পাদক রুকন উদ্দিল বড়ভুইয়া , প্রদেশ কংগ্রেস সদস্য আনাম উদ্দিন লস্কর সরাসরি অভিযোগ করে বলেন, গত তিরিশ বছর ধরে গৌতম রায় এবং রাহুল রায় ব্যক্তিস্বার্থে কংগ্রেস করেছেন, দলের স্বার্থে নয়।
রাহুল রায় বিজেপির এজেন্ট হিসাবে কাজ করছেন বলে বিদ্রোহীদের অভিযোগ। বিদ্রোহীরা তাদের পুরনো দাবিতে অনড় থেকে এদিন ফের জানিয়ে দেন যে, জেলা কংগ্রেসের সভাপতি পদে সংখ্যালঘু কাউকে বসাতেই হবে। যদিও পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য দলের নেতা হরিশ রাওয়াত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একজন কার্যকরী সভাপতি নিয়োগের কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু পঞ্চায়েতের দলীয় প্রার্থীদের টিকিট বন্টনের পর কার্যকরী সভাপতি নিযুক্ত করা হয়েছে।। যারফলে টিকিট বন্টনের ক্ষেত্রে কার্যকরী সভাপতি কোনও ভূমিকা পালন করতে পারেননি । হাইলাকান্দি কংগ্রেসের টিকিট বন্টনের নামে অর্থ সংগ্রহের প্রতিবাদ জানিয়ে আগেই দলের নির্বাচনী কমিটি থেকে সাহাব উদ্দিন চৌধুরী এবং আনাম উদ্দিন লস্কর পদত্যাগ করেছেন।
Comments are closed.