
নিংটিং: স্কুল কলেজগুলোকে অনলাইনে তৈরি করার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম
স্কুল এবং কলেজগুলো এখনও অনলাইন ক্লাসের উপর নির্ভরশীল। করোনা ভাইরাসের দৌরাত্ম্যে মহামারীর প্রাদুর্ভাবে পুরো একাডেমিক কালচার ব্যাহত হয়েছে। বেশির ভাগ শিক্ষার্থী বিশেষভাবে উচ্চতর শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা তাদের ক্লাসের জন্য স্মার্ট ফোনের উপর নির্ভরশীল।
এ ধরনের পরিস্থিতিতে সব স্কুল এবং কলেজগুলোকে তাদের নিজের অ্যাপ গড়ে তুলতে বাধ্য করছে। শিলচর ভিত্তিক ডেভেলপার গাইসিন কাবুই একটি এন্ড্রয়েড প্ল্যাটফর্ম ‘নিংটিং’ ডেভলপ করেছেন। যার মাধ্যমে স্কুল ও কলেজ গুলো নিজস্ব অ্যাপ পেতে পারেন। ব্যায়বহুল ডেভেলপার এবং হোস্টিংয়ের ঝামেলা ছাড়াই তাদের কাছে নিজস্ব অ্যাপ থাকা এখন সম্ভব।
স্কুল এবং কলেজগুলোর প্রয়োজনীয়তাকে কেন্দ্র বিন্দুতে রেখেই এই প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা হয়েছে।
গাইসিন কাবুই ব্যাখ্যা করে জানালেন, নিংটিং কিভাবে স্কুল এবং কলেজকে সাহায্য করতে পারে এবং এর ফলে অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সামলানো কতটা সহজ হয়ে উঠতে পারে।
এরই সম্পাদিত অংশটুকু এখানে তুলে ধরা হলো:
আপনি কেন এই প্ল্যাটফরমটি ডেভেলপ করার সিদ্ধান্ত নিলেন?
‘নিংটিং’য়ের অর্থ হচ্ছে জ্ঞান। এই প্লাটফর্মটি চালু করার পেছনের উদ্দেশ্য হচ্ছে স্কুল এবং কলেজগুলোকে এমন একটি অ্যাপ থাকার জন্য সাহায্য করা, যা কিনা উচ্চ মানের। এন্ড্রয়েড প্ল্যাটফর্মটি অ্যাপগুলোর জন্য একটি অ্যাপ্লিকেশনের মত। এটি অত্যন্ত ‘ইউজার-ফ্রেন্ডলি’।
কোন স্কুল বা কলেজ যদি আপনার প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে, তবে তাদের অ্যাপটি কেমন হবে?
নিংটিং ‘ব্যাকএন্ড’ এ থাকবে। শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা গুগল প্লে স্টোরে গিয়ে অ্যাপটি খুঁজবেন। উদাহরণস্বরূপ, গ্রেস ইন্টার্নেশনাল স্কুল ‘নিংটিং’ ব্যবহার করছে। ছাত্র এবং অভিভাবকদের প্লে স্টোরে গিয়ে গ্রেস ইন্টার্নেশনাল খুঁজতে হবে। অ্যাপে স্কুলের লোগো থাকবে এবং এটি স্কুলের অ্যাপের মত দেখাবে।অ্যাপটি ইনস্টিটিউটের নামে থাকবে।
আপনি এই প্ল্যাটফর্ম’র ফিচারগুলো নিয়ে কিছু বলুন
প্রথমত, আমরা ডেভলপমেন্ট এবং মেনটেনেন্স’র ব্যাপারে যত্ন নেই। স্কুল এবং কলেজগুলোর এই অবস্থায় প্রযুক্তি নিয়ে ভাববার দরকার নেই। তাদের ইঞ্জিনিয়ার বা ডেভেলপারদের ভাড়া করার কিংবা চুক্তি করার কোন দরকার নেই। আমি এই প্রথম ফিচারটাকেই হাইলাইট করতে চাই। নিংটিং’র মাধ্যমে আমরা যে অ্যাপ তৈরি করেছি তাতে নোটিস বোর্ড থাকবে, যেখানে ‘আনলিমিটেড’ ‘অ্যাটাচমেন্ট’ আপলোড করা যাবে। ছাত্ররা নোটিশ বোর্ড থেকে পিডিএফ বা ডকুমেন্ট ডাউনলোড করতে পারবে সহজে। শিক্ষকদের নোট এবং নির্দেশাবলী আপলোড করার জন্য একটি টিচার্স বোর্ড থাকবে। তারপর অ্যালবাম ভিত্তিক গ্যালারি থাকবে, যেখানে যত খুশি ছবি আপলোড করা যাবে। এতে একটি ‘এক্সাম প্যানেল’ রয়েছে যার মাধ্যমে ‘মাল্টি চয়েজ কোয়েশ্চন’ আপলোড করা যাবে এবং নিরাপদ ও সুরক্ষিত উপায়ে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব। এতে একটি হোমওয়ার্ক প্যানেল রয়েছে, যেখানে শিক্ষার্থীরা তাদের হোমওয়ার্ক আপলোড করতে পারবে এবং তারপর শিক্ষকরা এর মূল্যায়ন করতে পারবেন।
কিন্তু বড় স্কুল কিংবা কলেজ, যেখানে অনেকগুলো ক্লাস কিংবা সেকশন রয়েছে, সেখানে কি এক জায়গায় সব আপলোড করার সময় কোন গোলযোগ হবে না?
না, আমরা এই বিভাজনের ক্ষেত্রটিতে ফোকাস করেছি। এমনভাবে প্ল্যাটফর্মটি তৈরি করা হয়েছে যাতে কোন গণ্ডগোল না হয়। তাই প্রত্যেকবার এডমিন এবং টিচাররা যখন কিছু আপলোড করবেন অ্যাপে, তখন সেখানে অপশন সিলেক্ট করতে হবে, কার জন্য এই ইনফরমেশন আপলোড করা হচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, অ্যাডমিনিস্ট্রেশন যদি সিদ্ধান্ত নেয় যে দশম শ্রেণীর জন্য অতিরিক্ত ক্লাশ ‘অরগানাইজ’ করতে চায়, তাহলে তারা নোটিশবোর্ডে সে নোটিশ আপলোড করতে পারবেন এবং দশম শ্রেণী ও এই ক্লাসের সব সেকশনকে সিলেক্ট করবেন। এদিকে দশম শ্রেণীর ছাত্ররাই শুধু এই ক্লাস করতে পারবে বা ইনফরমেশন পাবে। একইভাবে যখন টিচাররা কোন নোট আপলোড করবেন তারাও নির্দিষ্ট করতে পারবেন কোন ক্লাসের বা শ্রেণীর ছাত্রদের জন্য এই নোট আপলোড করা হচ্ছে। শুধু ওই ক্লাসের ছাত্ররাই এটি পাবে।
আপনি কিভাবে সুরক্ষা এবং এর গোপনীয়তা বিষয়ে নিশ্চিত করবেন?
স্কুল বা কলেজগুলোকে তাদের শিক্ষার্থীদের নাম এবং ফোন নম্বর আমাদের কাছে পাঠাতে হবে। আমরা এই তালিকা ব্যবহার করব ইউসার আইডি এবং পাসওয়ার্ড তৈরি করতে। যে ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড সব ছাত্রদের জন্য ‘ইউনিক’ হবে। ছাত্রদের লগ-ইন করার সময় ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে। সুতরাং এটি সম্পূর্ণরূপে সুরক্ষিত এবং অবশ্যই শিক্ষার্থী এবং প্রতিষ্ঠান উভয়ের গোপনীয়তা রক্ষা করবে।
আগ্রহী স্কুলগুলো ট্রায়ালের জন্য https://www.ningtingapp.com অ্যাকাউন্টে রেজিস্টার করতে পারবেন বা 8638648383 নম্বরে ফোন করতে পারেন।
Comments are closed.