রমরমিয়ে চলছে শিলচরে আইপিএল জুয়া, পুলিশের থেকে দুই কদমে এগিয়ে 'হাইটেক' জুয়াড়িরা
চলতি ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আই পি এল) সবে দুসপ্তাহ হল। তবে এরই মধ্যে শিলচরে জমে উঠেছে আইপিএল জুয়া। অবশ্য এটা নতুন কিছু নয়। প্রতিবছরই এভাবে আইপিএল এর মাধ্যমে ভালো ব্যবসা করে থাকেন জুয়াড়িরা। আশ্চর্যের বিষয় হলো, করোনাকালে যখন গোটা বিশ্ব আর্থিক মান্দায় ভুগছে এমন একটা আবহেও রমরমিয়ে ব্যবসা চলছে আইপিএল জুয়াড়িদের।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে, আইপিএল এর প্রতিটি সংস্করণ এর সঙ্গে জুয়াড়িরাও নিজেদের আরো ‘আপডেট’ করছে। এখন আইপিএল জুয়া চলছে হাইটেক ফর্মুলায়। এমনকি অ্যাপও তৈরী করে নিয়েছে জুয়াড়িরা। যদিও শিলচর শহরে বা আশপাশের অধিকাংশ এলাকাতেই ফোনে আইপিএল জুয়া চলছে।
শহরের তারাপুর রামনগর, আশ্রম রোড, রংপুর, চেংকুড়ি রোড, কলেজ রোড, রাঙ্গেরখাড়ি, ন্যাশনাল হাইওয়ে এবং দাস কলোনিতে জমে উঠেছে আইপিএল জুয়া। কয়েক বছর আগে শহরের বিভিন্ন স্থানে জুয়াড়িরা ঘাঁটি গেড়ে আইপিএলের ব্যবসা চালাত। তবে গত বছর থেকে তারা এই ‘সিস্টেম’ বদলে ফেলেছে। পুলিশের ভয়ে এখন আর নির্দিষ্ট কোনও স্থানে বসে না জুয়াড়িরা। বরং মোবাইল মারফত ব্যবসা চালায়। তবে শহরের জুয়াড়িরাও এখন হাইটেক পদ্ধতি অবলম্বন করেছে।
শহরের প্রতিটি স্থানে এভাবে আইপিএল জুয়া কে কন্ট্রোল করে দাস কলোনি ও শিব কলোনির একজন বস। তার নির্দেশেই চলে গোটা সিস্টেম। প্রতিদিন রাত্রে ম্যাচ শেষে ‘অডিট রিপোর্ট’ জমা পড়ে সেই বসের হাতে।
আইপিএল জুয়াতে শহরের বিভিন্ন শ্রেণীর লোকেরা অংশ নিচ্ছেন। তবে সংখ্যাতে টিনএজাররা বেশি। এখন তো আইপিএল জুয়া এমন একটা পর্যায়ে চলে গেছে যেখানে অনেক গৃহবধূরাও নিজ নিজ পছন্দের আইপিএল টিমে টাকা লাগাচ্ছেন।
কোন দল জিতবে, টস কারা জিতবে এসব ছাড়াও প্রতি পাঁচ ওভার করে গ্রাহকদের চারটি সেশন দেয় জুয়াড়িরা। অর্থাৎ এই পাঁচ ওভারের সেশনে কত রান হবে, সেটা নিয়েও জুয়া খেলতে পারবেন গ্রাহকরা। ১৫-২০ ওভারের সেশনের কোড হচ্ছে ‘লম্বা’। তাছাড়া এবার আইপিএলে কোন দল চ্যাম্পিয়ন হবে, তা নিয়েও জুয়া খেলা যাবে। আইপিএলের আটটি দলের একটা নির্দিষ্ট দর রয়েছে। এই মুহূর্তে দরের হিসেবে শীর্ষে রয়েছে রয়াল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর, চেন্নাই সুপার কিংস এবং মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। সবচেয়ে নিচে রয়েছে পাঞ্জাব কিংস। অবশ্য প্রতি ম্যাচের পর এই দর উঠানামা করে।
একদিকে যখন শহরে রমরমিয়ে চলছে আইপিএল জুয়া তখন জুয়াড়িরা পুলিশের নাগালের বাইরে। বরং পুলিশ থেকে দু’কদম এগিয়ে রয়েছে তারা। এখন পর্যন্ত দুই একটি স্থানে তল্লাশি চালালেও পুলিশের হাতে কোনো সাফল্য আসেনি। এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ডিএসপি ভার্গব গোস্বামী বরাক বুলেটিন কে জানান, জুয়াড়িরা এখন হাইটেক পদ্ধতি ব্যবহার করছে। ওরা এখন আর একটা জায়গায় বসে টিভির মাধ্যমে ব্যবসা চালায় না। আমাদের স্পেশাল টিম এদিকে নজর রেখে চলেছে। ইতিমধ্যে আমরা দু একটি স্থানে তল্লাশি চালিয়েছে। তবে সাফল্য আসেনি। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।
Comments are closed.