
নর্থইস্টৈর ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য বিশেষ পর্যটক ট্রেন 'প্রাণবন্ত গোয়া' শুরু করছে আই আর সি টি সি
নর্থইস্টৈর ভ্রমণপিপাসুদের জন্য সুখবর। এই প্রথম প্রাণবন্ত গোয়া নামের বিশেষ পর্যটক ট্রেন চালাতে যাচ্ছে ইন্ডিয়ান রেলওয়ে ক্যাটারিং অ্যান্ড ট্যুরিজম কর্পোরেশন লিমিটেড (আই আর সি টি সি)। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর বিকেল তিনটেয় আগরতলা থেকে এই বিশেষ পর্যটক ট্রেন যাত্রা শুরু করবে। এরপর ৪ অক্টোবর সকাল দশটা নাগাদ পৌঁছাবে গোয়ার মাডগাওয়ে। এবারই প্রথম এই অঞ্চল থেকে গোয়ার উদ্দেশ্যে কোনো বিশেষ পর্যটক ট্রেন চালাচ্ছে আই আর সি টি সি। আজ এক সাংবাদিক সম্মেলনে এমনটাই জানালেন আই আর সি টি সির রিজিওনাল ম্যানেজার (গুয়াহাটি) মাধব সাহা এবং চিফ সুপারভাইজার (ট্যুরিজম) বিশ্বজিৎ দাস। সঙ্গে ছিলেন শিলচর স্টেশন সুপারিনটেনডেন্ট বিপ্লব দাস।
মোট ১১ রাত ১২ দিনের এই সফরে যাত্রীদের জন্য রয়েছে বিশেষ আকর্ষণীয় প্যাকেজ। মাধব বাবু জানান, নর্থ্ ইস্টের কথা ভেবেই এমন বিশেষ পর্যটক ট্রেন চালাচ্ছে আই আর সি টি সি। বরাকের যাত্রীরা বদরপুর থেকে এই ট্রেনে উঠতে পারবেন। গোয়াতে মোট তিন রাত ও চার দিনের সফর থাকবে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে, এই ট্রেনের টিকেটের সঙ্গেই যুক্ত রয়েছে সবকিছু। অর্থাৎ এই বিশেষ ট্রেনের টিকিট কাটলে একজনকে আর কোনো চিন্তা করতে হবে না। রাস্তায় খাওয়া দাওয়া থেকে শুরু করে গোয়াতে থাকা খাওয়া, এমনকি দর্শনীয় স্থানগুলিও ঘুরে দেখতে পারবেন যাত্রীরা। সব ব্যবস্থা করে দেবে আইআরসিটিসি।
এই ট্রেনে জনপ্রতি দু’ধরনের প্যাকেজ রয়েছে। এক, নন এসি স্লিপার ক্লাস। দুই, থ্রি টি আর এ সি। নন এসির জন্য একজনকে দিতে হবে ১১,৩৪০ টাকা। আর এসির জন্য একজনের ভাড়া রাখা হয়েছে ১৮,৯০০ টাকা। যাত্রাপথে যাত্রীরা আগরতলা ও বদরপুর ছাড়াও নিউ বঙ্গাইগাও, নিউ আলিপুরদুয়ার, নিউ কোচবিহার, নিউ জলপাইগুড়ি এবং মালদা টাউন থেকে ট্রেনে উঠতে পারবেন। তবে এই বিশেষ ট্রেনের টিকিট স্টেশনে পাওয়া যাবে না। এর টিকেট মিলবে আই আর সি টি সি র ওয়েবসাইটে (www.irctctourism.com)। এছাড়া আই আর সি টি সি’র ই-টিকেটিং এজেন্টের কাছেও এই বিশেষ ট্রেনের টিকিট মিলবে। ইতিমধ্যেই অনলাইনে টিকিট বিক্রি শুরু হয়ে গেছে।
চিফ সুপারভাইজার বিশ্বজিৎ দাস জানান, এই ট্রেনের টিকিট কাটলে গোয়ার বিশেষ স্থান গুলি ভ্রমণ করতে পারবেন যাত্রীরা। সেই স্থানগুলি হচ্ছে ডোনা পাওলা, কেলান গুট, বাগা, মিরামার বিচ, ফোট আগুয়াদা, বাসেলিয়া অব বোম জেসাস, সি-ক্যাথেড্রাল, কোলভা বিচ, মঙ্গেসি মন্দির, শান্তা দুর্গা মন্দির এবং মাডগাঁও মার্কেট। এই বিশেষ ট্রেনে যাত্রীরা তিনবেলা খাবার পাবেন। তবে সেটা হবে বিশুদ্ধ নিরামিষ। সকালে ব্রেকফাস্ট, দুপুরে লাঞ্চ এবং রাতে ডিনারের ব্যবস্থা থাকবে। পুরোপুরি কোভিড প্রটোকল মেনেই যাত্রীদের ব্যবস্থা করা হবে। প্রত্যেককে দেওয়া হবে আলাদা করে কিট। ট্রেনের মধ্যে থাকবেন গাইড। থাকবেন চিকিৎসকও। সেইসঙ্গে প্রত্যেক যাত্রীদের ইন্সুরেন্স করা থাকবে। প্রতিটি কোচের জন্য থাকবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
এই বিশেষ ট্রেনে ৫৫০ জন পর্যন্ত যাত্রী নেবে আই আর সি টি সি। আধুনিক এল এইচ বি মডেলের কোচ দিয়েই চলবে এই বিশেষ ট্রেন। এতে পাঁচটি কোচ থাকবে স্লিপার ক্লাস। পাঁচটি থাকবে এসি কোচ। পেন্ট্রি কার থাকবে একটি। যে সব যাত্রী স্লিপার ক্লাসের টিকিট কাটবেন তারা গোয়াতে ডরমেটরিজে থাকবেন। এসির টিকিট কাটা যাত্রীদের জন্য গোয়ায় হোটেল রুমের ব্যবস্থা থাকবে। তবে কারোর যদি সেই হোটেল রুম পছন্দ না হয় তাহলে তিনি অন্য হোটেলে যেতে পারেন। এই ব্যবস্থাটাও করে দেবে আই আর সি টি সি। অবশ্য এতে যে বাড়তি খরচ লাগবে সেটা সেই যাত্রীকেই বহন করতে হবে।
যেহেতু করোনাকাল বলে কথা তাই যদি দেশে করোনা পরিস্থিতির অবনতি ঘটে সে ক্ষেত্রে ট্রেন বাতিল হলে যাত্রীরা পুরো টাকা ফেরত পাবেন। এই সফর করার জন্য যাত্রীদের ভ্যাক্সিনেশন খুবই জরুরি। যারা ভ্যাকসিন’র দুটি ডোজ নিয়েছেন,তাদের কোন সমস্যা নেই। তবে যারা ভ্যাকসিন নেননি অথবা শুধু একটি ডোজ নিয়েছেন তাদের গোয়ার এস ও পি মানতে হবে।
শিলচর স্টেশনের সুপারিনটেনডেন্ট বিপ্লব দাস জানান, এ বছরের শুরুতে ২৩ ফেব্রুয়ারি রামপথ যাত্রা নামের এক বিশেষ ট্রেন অযোধ্যায় গিয়েছিল। সেই ট্রেনে শিলচর থেকে ২৫০ জন যাত্রী সফর করেছিলেন। তাই তিনি আশা করেছিলেন এবার শিলচর থেকেও বিশেষ পর্যটক ট্রেন চালাবে আই আর সি টি সি। বিপ্লববাবু আশাবাদী, আগামীতে শিলচর থেকেও এই ধরনের বিশেষ পর্যটক ট্রেন চালাবে আই আর সি টি সি।.
Comments are closed.