কালিকাকে ভুলেনি শিলচর, ভুলেনি নরসিং স্কুল প্রাক্তনীরা
কালিকা প্রসাদ আমাদের মধ্যে নেই বছরের উপর হচ্ছে। কিন্তু সত্যিই কি তাই? মস্তিষ্ক একবার মানতে বাধ্য হলেও মন কালিকাপ্রসাদকে পুরো হৃদয় জুড়ে খুঁজে পাবে। সেই কালিকাপ্রসাদের জন্মদিন ঘিরে সবার মধ্যে উৎসাহ মাত্রাতিরিক্ত হওয়াই স্বাভাবিক।
এবারে কালিকাপ্রসাদের জন্মদিনে আরও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্যে কালিকাপ্রসাদ জন্মদিন উদযাপন কমিটি, ২০১৮ আয়োজিত জন্মদিনের অনুষ্ঠান বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য। এই অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক নরসিং স্কুল প্রাক্তনী সংস্থা, শিলচর।
নিজেও যে স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র, যার প্রতিভার উজ্জ্বলতায় স্কুলের পদমর্যাদা আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে সেই স্কুলের প্রাক্তনী সংস্থা বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বরাকের কৃতি সন্তানের জন্মদিন পালনের আয়োজন করেছে। ১১ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬টায় বঙ্গভবনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
কালিকার প্রতিভা যেমন ছিল বহুমুখী, তেমনি সংস্থা কালিকার বিভিন্ন দিককে বিভিন্ন পর্বে ভাগ করে অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করেছে। তবে সবচেয়ে প্রথমে স্বাগতভাষন প্রদান করবেন দুলাল মিত্র।
কালিকাপ্রসাদের রবীন্দ্রানুরাগের কথা তাঁর কাজে প্রায়শই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। সেই ‘রবীন্দ্রানুরাগী কালিকাপ্রসাদ’কে নিয়ে শুরু হবে অনুষ্ঠানের মূল পর্ব। এই পর্বে থাকছে ‘আমার রবীন্দ্রনাথ’ নিয়ে আলোচনা পর্ব। আলোচক সঞ্জীব দেবলস্কর। এ বিষয়ে কালিকার বিখ্যাত সাক্ষাৎকারের উপর সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হবে এই অনুষ্ঠানে।
এছাড়া এই পর্যায়ে রয়েছে একক সঙ্গীত। শিল্পীরা হলেন মৈত্রেয়ী দাম ও বিশ্বজিৎ রায় চৌধুরী। সমবেত সঙ্গীতে রয়েছে সমকাল ও স্বরলিপি।নৃত্য পরিবেশন করবে ডানসার সার্কল। এই পর্বে ধর্মনগরের কলামন্ডল তাদের অনুষ্ঠান পরিবেশন করবে।
এরপর শুরু হবে ‘সৃজনশীল কালিকাপ্রসাদ’ নিয়ে অনুষ্ঠান। কালিকাপ্রসাদের সৃজনশীলতা সম্পর্কে আমরা সবাই অবগত এবং গর্বিত। সে বিষয়ে প্রাসঙ্গিক বক্তব্য রাখবেন শুদ্ধসত্য চৌধুরী। এরপর একক সঙ্গীত পরিবেশন করবেন রাজু সেনগুপ্ত ও গার্গী দেব।সমবেত আবৃত্তিতে শিলচরের দুই বিশিষ্ট আবৃত্তিকার অমিত শিকিদার ও মনোজ দেবের ব্যবস্থাপনায় শহরের বিশিষ্ট বাচিক শিল্পীবৃন্দ অংশগ্রহণ করবেন। সমবেত সঙ্গীতে রয়েছে কলাক্ষেত্রম। তাছাড়া নৃত্য উপাসনা কেন্দ্র নৃত্য পরিবেশন করবে।
‘গণশিল্পী কালিকাপ্রসাদ’ পর্বে এই শীর্ষে প্রাসংগিক বক্তব্য রাখবেন রাজীব কর। একক সংগীতে থাকছেন
পংকজ নাথ এবং
সমবেত সঙ্গীত পরিবেশন করবেন
হৃষিকেশ চক্রবর্তী, কমলেশ ভট্টাচার্য, অনুসূয়া মজুমদার প্রমূখ।
তারপর থাকবে ‘নৃত্যায়ন’ এবং
‘নৃত্যালয়ম’ এর নৃত্য পরিবেশনা।
‘লোকসংগীতের কালিকাপ্রসাদ’ এবং ‘কালিকাপ্রসাদের লোকসংগীত ভাবনা’ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক বক্তব্য রাখবেন যথাক্রমে সুরজিৎ সোম
এবং ড: অমলেন্দু ভট্টাচার্য।
তারপর একক গানে থাকছেন সর্বানী ভট্টাচার্য্য,
শেখর দেবরায়,
বিক্রমজিৎ বাউলিয়া : সমবেত গান পরিবেশন করবেন
ফেরিওয়ালা ও
মৃত্তিকা’র শিল্পীরা।
প্রচলিত ধামাইল নৃত্য এবং প্রচলিত চড়ক নৃত্যে থাকবেন শিলচর সংগীত বিদ্যালয় ও
গৌড়ীয় নৃত্য কলা ভারতী। সাথে সাথে চলবে সুজিত পাল এবং নির্মল কান্তি রায়ের তুলির কাজ ‘রংতুলিতে কালিকাপ্রসাদ’।
সর্বশেষ অনুষ্ঠান হিসাবে পর্দায় ‘কালিকার কন্ঠে গান’ পরিবেশন করে তাকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় থাকছেন পঞ্চতপা চৌধুরী, অংশুমান আচার্য, পার্থসারথী দাস।
এই অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক হলেন, সেবায়ন রায় চৌধুরী ও বিক্রমজিৎ বাউলিয়া ।
বিশেষ প্রয়োজনে সময়সূচির পরিবর্তনের কথাও উদ্যোক্তারা আগেই জানিয়ে রেখেছেন।
পুরো অনুষ্ঠানটি দেখাশোনার দায়িত্বে রয়েছেন দুলাল মিত্র। জন্মদিন অনুষ্ঠানের কো-অর্ডিনেটর হিসেবে রয়েছেন সুরোজিত সোম এবং শুদ্ধসত্য চৌধুরী।
“আমরা প্রতি বছরই আমাদের সাধ্য মত কালিকার জন্মদিন পালন করব, যাতে করে প্রজন্মের পর প্রজন্ম কালিকাকে নিয়ে চর্চা চালিয়ে যায়।” জানালেন প্রাক্তনী সংস্থার সদস্য তথা কালিকার বাল্যবন্ধু, নৃত্যশিল্পী সৌমিত্র শঙ্কর চৌধুরী।
এভাবেই বিভিন্ন অনুষ্ঠান, শিল্পীর সঙ্গীতে, আবৃত্তিকারের আবৃত্তিতে, শিল্পীর তুলিতে, আলোচকদের আলোচনায়, আমাদের ভাবনায় কালিকাপ্রসাদকে আমরা খুঁজে পাব।কালিকাপ্রসাদ বেঁচে থাকবে হৃদয় জুড়ে।
Comments are closed.