Also read in

ড্রাগসের বিরুদ্ধে বছরের সেরা সাফল্য: ৭০ হাজার ইয়াবা ট্যাবলেট সহ তিন ব্যক্তি আটক করিমগঞ্জে

করিমগঞ্জে ৭০ হাজার ইয়াবা ট্যাবলেট সহ তিন ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। গুগোলের তথ্য অনুযায়ী এর মূল্য বাংলাদেশের বাজারে অন্তত সাড়ে তিন কোটি টাকা থেকে সাত কোটি টাকা হতে পারে। পুলিশের অনুমান এই ড্রাগসের ট্যাবলেটগুলো মায়ানমারের দিক থেকে চোরাই পথে ভারতে এসেছে এবং করিমগঞ্জের আন্তর্জাতিক সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে পাচার করার উদ্দেশ্য ছিল। অতীতে অনেক বড় পরিমাণের ড্রাগস উদ্ধার করা হয়েছে, তবে এই বছরে জেলায় এটিই সবথেকে বড় উদ্ধার। আটক হওয়া তিন যুবক স্থানীয় হলেও এই ড্রাগস পাচারের ক্ষেত্রে রয়েছে বাইরের কোনও বড় চক্রের হাত, এমনটাই মনে করছে পুলিশ।

গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশের আধিকারিকরা মঙ্গলবার করিমগঞ্জ জেলার শরিফনগর এলাকায় এক অভিযান চালান এবং এতেই ধরা পড়ে বিরাট পরিমাণের ড্রাগস সহ তিন ব্যক্তি। আটক ব্যক্তিদের একজনের বয়স ২৪ বছর, একজনের ১৭ বছর এবং আরেকজনের ১৯ বছর। এদের বাড়ি কানিশাইল এবং শরিফ নগর এলাকায়। আটক ব্যক্তিরা স্থানীয় হলেও এই পাচার কাজের সঙ্গে বাইরের চক্রের যোগসূত্র রয়েছে বলেই ধারণা পুলিশের। বিভাগের কাছে অনেক তথ্য থাকলেও এই মুহূর্তে জনসমক্ষে সেটা তুলে ধরা হবে না তদন্তের স্বার্থে।

পুলিশ সুপার মায়াঙ্ক কুমার ঝা জেলায় যোগ দেওয়ার পর বেশ কয়েকটি ড্রাগস বিরোধী অভিযান চালিয়েছেন। কোটি কোটি টাকার ড্রাগস উদ্ধার হয়েছে, গ্রেফতার হয়েছেন এর সঙ্গে যুক্ত থাকা অনেকেই। তিনি বলেন, “শুধু করিমগঞ্জ জেলা নয়, সারা রাজ্যের পুলিশ ড্রাগসের বিরুদ্ধে লাগাতার অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে এবং একের পর এক সাফল্য আসছে। আমাদের বাহিনীরা বিভিন্নভাবে ড্রাগস পাচারকারীদের উপর নজরদারি রাখছেন এবং তাদের গতিবিধি লক্ষ্য করে ঠিক সময়ে অভিযান চালানো হচ্ছে, এতে আসছে সাফল্য। আজ যে পরিমাণের ড্রাগস আটক করা হয়েছে, এটা অন্তত এই বছরের সবথেকে বড় সাফল্য। গতবছর অনেক বেশি পরিমাণে ড্রাগস ধরা হয়েছিল। আমাদের ধারণা, এর সঙ্গে একটি বড়সড় চক্র যুক্ত রয়েছে, তবে সেটা তদন্তের বিষয়। ড্রাগস শুধুমাত্র করিমগঞ্জ হয়ে অন্য রাজ্যে বা আন্তর্জাতিক সীমান্তের দিকে পাচারের চেষ্টা চলছে, এমনটা নয়, বরং আমাদের জেলায়ও অনেকের হাতে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। সেটাও আমাদের আটকাতে হবে, কারণ এতে যুবসমাজ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অবশ্যই এক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের সহযোগিতা এবং সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি।”

এত বড় পরিমাণের ড্রাগস আটক হওয়ায় বিভিন্ন মহলে আলোড়ন পড়ে গেছে। অতীতে পুলিশ এবং সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনীর সহযোগিতায় বিভিন্ন বড় পাচার অভিযান ভেস্তে দেওয়া হয়েছে। বিএসএফ আধিকারিকরা জানিয়েছিলেন, এরপর ড্রাগস পাচারকারীরা সীমান্তের এপারে দাঁড়িয়ে ঢিল ছুড়ে ছোট ছোট পরিমাণে ড্রাগসের প্যাকেট ওপারে ফেলে দিত। ওপার থেকে ছোট ছোট প্যাকেটে পুড়ে টাকা এদিকে ফেলা হতো। স্থানীয় জনগণ এগুলো দেখে পুলিশকে খবর দেন এবং কিছু লোককে আটক করা হয়।

বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে এসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ঘোষণা করেছিলেন, বরাক উপত্যকায় বিশেষ নারকোটিক বিভাগ চালু করা হবে। শিলচরে দাঁড়িয়ে তিনি বলেছিলেন, “এই উপত্যকায় ড্রাগসের পাচারের ঘটনা অত্যন্ত বেড়ে গেছে এবং এতে কিছু আন্তর্জাতিক চক্রের যোগসূত্র রয়েছে। এসব আটকাতে বরাক উপত্যকায় বিশেষ নারকোটিক বিভাগ অতিসত্বর চালু করা হবে।” বিজেপির নেতৃত্বে অসমে দ্বিতীয়বার সরকার গঠন হয়েছে এবং পুলিশের তরফে ড্রাগসের বিরুদ্ধে একেরপর এক অভিযান শুরু হয়েছে। হয়তো আগামীতে উপত্যকায় বিশেষ নারকোটিক বিভাগ চালু হতে পারে।

Comments are closed.