
হাই প্রোফাইল শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থার বহু প্রতীক্ষিত বিজিএম নিয়ে সরগরম ক্রীড়াঙ্গন। এর উত্তাপ বরাক উপত্যকার গণ্ডি পেরিয়ে ছড়িয়ে পড়েছে গোটা রাজ্যে। সবার নজর এখন আগামী ২৫ জুনের বিজিএমের দিকে। কে হবেন নতুন সচিব? বিজেন্দ্রপ্রসাদ সিং নাকি সুবিমল ধরে? বিজেন্দ্র কী সত্যি সরে দাঁড়াবেন? নাকি মাঝখান থেকে বাজিমাত করে নেবেন অতনু ভট্টাচার্য? সভাপতি পদেই বা কে আসবেন? সব চ্যালেঞ্জ বাধা টপকে বাবুল হোড় কি পারবেন সভাপতির কুরসি ধরে রাখতে? নাকি যেমনটা শোনা যাচ্ছে, শিলচরের বিধায়ক দিপায়ন চক্রবর্তী হবেন নতুন সভাপতি? শিলচরের ক্রীড়া মহলে এ নিয়ে চর্চার শেষ নেই। সন্ধ্যা হলেই প্রতিটি ক্লাবে, পাড়ার মোড়ে হচ্ছে মিটিং। নিজেদের প্রার্থীদের জয়ী করার জন্য গেমপ্ল্যান তৈরি করতে ব্যস্ত সবাই।
ইতিমধ্যেই শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থায় প্রতিটি ক্লাব নিজেদের সদস্যের নাম পাঠিয়ে দিয়েছে। ভোটাভুটির মাধ্যমে লাইফ মেম্বারের দশজনের তালিকাও তৈরি হয়ে গেছে। এই ১০ জন লাইফ মেম্বারই আসন্ন বি জি এমে ভোট দিবেন। ক্লাব গুলি জেনারেল কাউন্সিল মেম্বার হিসেবে যাদের নাম পাঠিয়েছে তার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ১৪ জুন হয়ে যাবে। তারপরের দিন নিয়ম অনুযায়ী বিজিএম নিয়ে প্রত্যেকটি ক্লাব এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডি এস এ অফিশিয়াল চিঠি পাঠাবে। এবার শিলচর ডি এস এর মোট ভোটারের সংখ্যা ২২৭। আসলে মোট ভোটারের সংখ্যা ছিল ২২৮। তবে লাইফ মেম্বারের ভোট থেকে একটি কমে যাওয়ায় সেটা দাঁড়িয়েছে দশে। এর ফলে মোট ভোটারের সংখ্যা এসে দাঁড়িয়েছে ২২৭। শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থার বিজিএম এর জন্য অবজারবারও পাঠাচ্ছে অসম অলম্পিক সংস্থা।
এদিকে, বিজিএমের জন্য ক্লাবগুলি থেকে জেনারেল কাউন্সিল হিসাবে নাম পাঠানোকে কেন্দ্র করে যা কিছু ঘটে গেল তা স্থানীয় ক্রীড়াঙ্গনের জন্য লজ্জাজনক। একাধিক ক্লাবের বিরুদ্ধে অর্থের বিনিময়ে সদস্য পদ বিক্রি করার মত গুরুতর অভিযোগ উঠল। তারাপুর করিমগঞ্জ রোডের ২৮ নং পল্লী ক্লাব নিয়ে তো এই মুহূর্তে চর্চার শেষ নেই। বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে শহরের ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের এই ক্লাবটি। করিমগঞ্জ রোডের বাসিন্দাদের ইচ্ছে ছিল রঞ্জি তারকা প্রীতম দাস কে ডিএসএ তে পাঠাবার। কিন্তু ২৮ নং পল্লী থেকে নাম গেল ‘বহিরাগত’ অজয় রায় -র। এ নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে করিমগঞ্জ রোডের বাসিন্দারা ডিএসএ তে একটি চিঠিও দিয়েছেন। তাদের অভিযোগ ছিল অর্থের বিনিময়ে পাঠানো হয়েছে অজয় রায়ের নাম। শেষমেষ শিলচর ব্যায়াম বিদ্যালয় থেকে গেছে প্রীতম দাসের নাম। এই ব্যায়াম বিদ্যালয় থেকেই গেছে শিলচরের সাংসদ ড: রাজদীপ রায় এবং উধারবন্দের বিধায়ক মিহির কান্তি সোমের নাম। তারাপুর শ্যামাচরণ দেব বিদ্যাপীঠ থেকে গেছে বিধায়ক দিপায়ন চক্রবর্তীর নাম।
শুধু ২৮ নং পল্লী নয়, অর্থের বিনিময়ে সদস্য পদ বিক্রির অভিযোগ এসেছে নিউ শিলচর এস এস ক্লাবের পক্ষ থেকেও। উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে, এই ক্লাব থেকেই কিন্তু নাম গেছে ডি এস এর প্রাক্তন সচিব সুবিমল ধরের। শোনা যাচ্ছে শাসকগোষ্ঠীর সচিব প্রার্থী সুবিমল বাবু। তার নামটা ডিএসএতে আসে একেবারে শেষ লগ্নে। যা পুরো ‘খেলার’ মোড় টাই ঘুরিয়ে দিয়েছে।
অন্যদিকে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে সব সময় শাসকগোষ্ঠীর একটা দাপট থাকে। এবারও সেই চিত্রটাই দেখা যাচ্ছে। সূত্রমতে জানা গেছে, শাসক গোষ্ঠীর প্রভাবেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি থেকে নাম গেছে ডিএসএতে।
কাগজ পত্রে এটা শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থার বি জি এম হলেও এ নিয়ে রাজনৈতিক লড়াইও কিন্তু তুঙ্গে রয়েছে। একদিকে যেমন সচিব প্রার্থী সুবিমল ধরকে সমর্থন করছে বিজেপি। তেমনি সভাপতি বাবুল হোড় ও সচিব পদপ্রার্থী অতনু ভট্টাচার্যকে সমর্থন করছে বিরোধীপক্ষ। অংকটা বেশ জটিল। ডি এস এর ইতিহাস বলছে, এখানে শেষটা সবসময়ই নাটকীয় হয়ে থাকে। রোমাঞ্চে ভরা থাকে ক্লাইম্যাক্স। এবারও কিন্তু গল্পটা সেদিকেই যাচ্ছে!!
Comments are closed.