Also read in

কলকাতা-শিলচর কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস: পশ্চিমবঙ্গে নিছকই এক লোকাল ট্রেন,টিটিই নির্বিকার!!

সাধারণত আপনি ট্রেন সফরের অনেকদিন আগে থেকেই লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে অনেক কসরত করে টিকিট রিজার্ভেশন করার পর নিশ্চিন্ত হন যে, যাক্ বাবা, এবার তো নিশ্চিন্তে গন্তব্যে যাওয়া যাবে। কিন্তু সত্যিই কি তাই? আপনি যদি কলকাতা-শিলচর কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের ভ্রমণার্থী হন, তাহলে আপনার এই আশা নিরাশায় পরিণত হতে বেশিক্ষণ লাগবেনা।

শিলচর নিবাসী অনিকেত দেব রায় উনার যে অভিজ্ঞতার কথা আমাদের জানালেন, তা মোটেই উৎসাহব্যঞ্জক নয়, “ট্রেনটা যখন দক্ষিণেশ্বর স্টেশনে পৌঁছালো, আমরা দেখলাম একদল লোক হুড় হুড় করে ট্রেনের ভেতরে ঢুকে গেল । প্রথমে বুঝতেই পারিনি, আসলে কি ঘটছিল, তারপর ওরা যখন আমাদের সিট এবং ওপরের বার্থ গুলো দখল করে নিল তখন বোঝা গেল যে আমরা সমস্যায় পড়ে গেছি।”

অনিকেত এবং ওই কোচের অন্যান্য যাত্রীরা সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদ জানালেন এবং তাদেরকে রিজার্ভ করা সিট এবং বার্থগুলো ছেড়ে দিতে বললেন। কিন্তু তাতে শক্তির অপচয় ছাড়া আর কিছুই লাভ হলনা। “ওরা নির্দ্বিধায় জানিয়ে দিল যে এভাবেই প্রতিদিন এই ট্রেনে ওরা যাতায়াত করে এবং এক ইঞ্চি জায়গাও ছেড়ে দেবেনা।একটার পর একটা স্টেশনে ট্রেন দাঁড়াচ্ছে আর ভিড় বেড়ে চলেছে, মনে হচ্ছিল পারলে ওরা আমাদের মাথায় চড়ে বসবে; এত হুজ্জত করে রিজার্ভেশন করে কি ফল হল এখন বুঝতে পারলাম” দুঃখের সঙ্গে অনিকেত জানালেন।

সব বৈধ যাত্রীরা টিকিট কালেক্টরের আগমনের অপেক্ষায় ছিল, সবাই আশা করছিল টিকেট কালেক্টর এদের বিরুদ্ধে একটা জোরদার ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু বাস্তবে ঘটলো ঠিক উল্টো, কালো কোট পরা ওই ভদ্রলোক এসে উপদেশ দিলেন, “ওরা একটু পরেই নেমে যাবে, ওদের সাথে একটু সহযোগিতা করুন।”

অবশেষে ট্রেন যখন মালদা স্টেশনে পৌঁছালো, তখন আস্তে আস্তে যাত্রীরা নামতে শুরু করলো এবং কিছুটা স্বস্তি পাওয়া গেল।
কেন্দ্রীয় রেল মন্ত্রক যেখানে যাত্রী স্বাচ্ছন্দ‍্য এবং পরিষেবা উন্নয়নের মরিয়া প্রয়াস চালাচ্ছে সেখানে পশ্চিমবঙ্গে রেল কর্মকর্তাদের এই নিস্পৃহ ভাব সত্যি খুবই দুঃখজনক। স্থানীয় যাত্রীদের কাছে রেল কর্মকর্তাদের এই আত্মসমর্পণের ফলে অনেক কষ্ট করে যে সকল যাত্রী আসন সংরক্ষণ করে রেলে চেপেছিল, তাদের অবস্থা সঙ্গিন হয়ে উঠে, নাভিশ্বাস উঠতে শুরু করে- এ বিষয়টি নিসন্দেহে কর্তৃপক্ষের অতিসত্বর ভেবে দেখা এবং যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

Comments are closed.