Also read in

তারাপুরে ফিল্মি কায়দায় ডাকাতি, বন্দুক দেখিয়ে ঘন্টাখানেক চলল ডাকাত দলের তাণ্ডব

একেবারে ফিল্মি কায়দায় তারাপুর এলাকায় ঘটেছে এক ডাকাতির ঘটনা। এলাকার ক্ষুদিরাম সরণির কুটু চন্দ নামের ব্যবসায়ীর বাড়িতে ঘটনাটি ঘটেছে। বুধবার রাত দেড়টা নাগাদ একদল বন্দুকধারী ডাকাত তাদের বাড়িতে প্রবেশ করে প্রত্যেক ব্যক্তির হাত পা এবং মুখ বেঁধে ফেলে। এরপর প্রায় ১ লক্ষ টাকা ক্যাশ সহ অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র তুলে নিয়ে যায়। পরিবার সূত্রের দাবি প্রায় ১০ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। পুলিশ সকালে তদন্তে এসে কিছু ছোটখাটো জিনিসপত্র রাস্তায় পেয়েছে। অনুমান করা হচ্ছে, তারা ঘটনার পর রামনগর এলাকা দিয়ে পালিয়েছে।

কুটু চন্দ একজন ব্যবসায়ী, ওয়াইন শপ সহ তার অন্যান্য ব্যবসা রয়েছে। তারাপুর শিববাড়ি রোড সংলগ্ন ক্ষুদিরাম সরণিতে মা, স্ত্রী এবং দুই সন্তানকে নিয়ে থাকেন। পরিবার সূত্রের খবর অনুযায়ী রাতে একদল লোক খুব পরিকল্পিতভাবে বাড়িতে ঢুকে তাদের আটক করে। প্রত্যেকের মুখ কাপড় দিয়ে ঢাকা ছিল। ফলে তাদের চেনা যায় নি। কিন্তু তাদের কথোপকথন শোনা গেছে। তারা স্থানীয় ভাষায় কথা বলছিল এবং অত্যন্ত নোংরা শব্দ ব্যবহার করছিল। তাদের হাতে বন্দুক থাকায় পরিবারের লোকেরা খুব একটা বাধা দিতে পারেননি। একে একে প্রত্যেক ব্যক্তিকে বেঁধে ঠান্ডা মাথায় প্রায় ঘণ্টাখানেক ধরে ঘরের সব মূল্যবান জিনিসপত্র বের করে নিয়ে গেছে তারা। তবে পরিবারের সদস্যদের শারীরিকভাবে কোনও ক্ষতি করতে পারেনি।

বৃহস্পতিবার সকালে খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশসুপার জগদিশ দাস সহ স্থানীয় পুলিশের আধিকারিকরা সেখানে উপস্থিত হন। প্রাথমিক তদন্ত করা হয় এবং বিভিন্ন বিষয় খতিয়ে দেখা হয়। তারাপুর থানার ইনচার্জ আনন্দ মেধি জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্তে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে, যেগুলো এখনই জনসমক্ষে তুলে ধরা সম্ভব নয়। যে ডাকাত দল কাজটি করেছে, তাদের ধরতে হলে বিশেষ কিছু পরিকল্পনা প্রয়োজন। পুলিশ বেশ কিছু সংকেত পেয়েছে এবং আগামীতে এদের আটক করার সম্ভাবনা রয়েছে। পরিবারের তরফে ক্ষয়ক্ষতির একটা হিসেব পুলিশকে দেওয়া হয়েছে, পুলিশ সেটা যাচাই করে দেখবে। এছাড়া এত সুরক্ষিত বাড়িতে কিভাবে একদল লোক ঢুকে এত বড় কান্ড ঘটাতে পারল সেই বিষয়েও তদন্ত হচ্ছে।

এই ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে, অনেকেই বলছেন এত সুরক্ষিত বাড়িতে যদি এভাবে ডাকাতি হতে পারে, তাহলে আগামীতে যে কেউ ডাকাতদলের শিকার হতে পারেন। গতবছর প্রকাশ্যে একের পর এক ছিনতাই হওয়ার পর পুলিশ বহিঃর্রাজ্য থেকে আসা কিছু লোককে আটক করেছিল এবং পরবর্তীতে ছিনতাই বন্ধ হয়। এবার পরিকল্পিতভাবে একটি ডাকাত দল বন্দুক দেখিয়ে অত্যন্ত সুরক্ষিত বাড়িতে ঢুকে পড়ছে, এটা অবশ্যই চিন্তাজনক। পুলিশের তরফে এর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নিলে, আগামীতে ঘটনার পুনরাবৃত্তি হওয়া অসম্ভব নয়।

Comments are closed.