বিতর্কিত সুপার অরুণ সরকারকে কাছাড় থেকে সরিয়ে নিচ্ছে বিভাগ, তবে পদ বিলুপ্তির নোটিশ বাতিল হয়নি
শেষমেষ বিতর্কিত পোস্ট অফিস সুপার অরুণ সরকারকে শিলচর থেকে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন পোস্টমাস্টার জেনারেল আরকেবি সিং। ৪ জানুয়ারি তিনি এক নির্দেশে অরুণ সরকারকে কাছাড় ডিভিশন থেকে সরিয়ে গুয়াহাটিতে এসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর পদে নিযুক্তি দিয়েছেন। কাছাড় ডিভিশনের সুপার হিসেবে আসছেন ডিকে চুতিয়া। তিনি এর আগে ডিব্রুগড় ডিভিশনের হেডকোয়ার্টারে এএসপি পদে ছিলেন। তবে অরুণ সরকারকে বদলি করার সিদ্ধান্ত নিলেও তিনি যেসব পথ বিলুপ্তির নির্দেশ জারি করেছিলেন সেটা এখনও বাতিল করেননি পোস্টমাস্টার জেনারেল আরকেবি সিং।
গত বছর কাছাড় ডিভিশনের ২৫৪ টি পদ বিলুপ্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ডাক বিভাগ। এর মধ্যে বহুদিন ধরে চলে আসা স্ক্রীনিং রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করেই অনেকগুলো পদ বিলুপ্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এক কর্মীর আরটিআই-য়ের উত্তরে বিভাগের তরফে জানানো হয়েছিল ২৫৪টি পদ যেগুলো বিলুপ্তির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে এর মধ্যে পোস্টাল অ্যাসিস্ট্যান্ট, পোস্টম্যান, মাল্টিটাস্কিং ইত্যাদি রয়েছে। এরমধ্যে ৫৪টি পদ বিলুপ্তি অরুণ সরকার জারি করা মেমো অনুযায়ী হয়েছে। বিভাগের প্রাক্তন উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেছিলেন অরুণ সরকার যে পদে রয়েছেন সেখানে দাঁড়িয়ে কোনও পদ বিলুপ্তি তিনি করতে পারেন না।
বরাক বুলেটিনের তরফে ৯ সেপ্টেম্বর এব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছিল। পরবর্তীতে আমাদের রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে চিফ পোস্টমাস্টার জেনারেল আরকেবি সিং-কে শিলচর পরিদর্শনে আসতে হয়েছিল। তিনি আমাদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন এবং তারও একই বয়ান ছিল অরুণ সরকার কোনও পদ বিলুপ্তির সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। তিনি কথা দিয়েছিলেন পদ বিলুপ্তির নোটিশ বাতিল করা হবে পাশাপাশি নিয়ম ভাঙ্গার জন্য অরুন সরকারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর কোনটাই হয়নি, যদিও অরুণ সরকারকে কাছাড় ডিভিশন থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে কিন্তু সেটা একেবারেই বিভাগীয় বদলির সিদ্ধান্ত, শাস্তিমুলক কিছু নয়। তবে তার থেকে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, যে পদগুলো বিলুপ্তির নোটিশ জারি করা হয়েছিল, সেগুলো এখনও বাতিল করা হয়নি।
এদিকে কাছাড় ডিভিশনের অধীনে থাকা কর্মচারীদের ইউনিয়ন বলছে তারা এর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবে। তাদের তরফে বলা হয়েছে, “আমাদের লড়াই শুধু এক ব্যক্তিকে এখান থেকে সরিয়ে নেওয়ার নয় বরং বিভাগীয় স্তরে এই ধরনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে লড়াই। যদিও স্বৈরাচারী মনোভাব নিয়ে কাজ করা এক আধিকারিকের সরানোয় একটা নতুন আশা দেখা যাচ্ছে, কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত নির্দেশটি বাতিল হচ্ছে না আমরা পুরোপুরি আশ্বস্ত হতে পারছি না।”
বরাক বুলেটিনের পক্ষ থেকে অতীতেও অরুণ সরকারের সঙ্গে এব্যাপারে সরাসরি কথা বলার চেষ্টা হয়েছে। তিনি সঠিক উত্তর দিতে চাননি। এবারও তার বদলীর সিদ্ধান্তের পর আমরা তার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছি, তবে তিনি উত্তর দেননি। এবার দেখা যাক আগামীতে নতুন সুপার এব্যাপারে কি সিদ্ধান্ত নেন এবং বরাক উপত্যকার পদ বিলুপ্তির ক্ষেত্রে তার মনোভাব কি থাকে।
Comments are closed.