রাতের অন্ধকারে ব্যালট পেপার সংগ্রহ করতে এসে জনরোষে নির্বাচন কর্মী, 'এরা দায়িত্বপ্রাপ্ত নয়,' বললেন ডিসি
শুধু একটা-দুটো নয়, শহরের বিভিন্ন এলাকায় ভোট শেষ হওয়ার প্রায় এক সপ্তাহ পর পোস্টাল ব্যালট পেপার সংগ্রহ করছেন নির্বাচন কমিশনের কার্ড থাকা কিছু সরকারি আধিকারিক। তবে জেলাশাসক কীর্তি জাল্লি জানিয়েছেন এরা সরকারি দায়িত্বে নেই, এত রাতে এভাবে ব্যালট পেপার সংগ্রহ করার কোনও নিয়ম নেই, তিনি এর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছেন। এবার প্রশ্ন দাঁড়াচ্ছে, তবে কি ব্যালট পেপার সংগ্রহের নামে বিশেষ কোন চক্রান্ত চলছে?
বৃহস্পতিবার রাত ৯ টা নাগাদ শিলচর শহরের মৌলভী রোডে এক ব্যক্তির বাড়িতে ব্যালট পেপার সংগ্রহের নামে দুই নির্বাচনকর্মী উপস্থিত হন। একজনের কাছে কার্ড না থাকলেও বিশ্বজিৎ দে পুরকায়স্থ নামের ব্যক্তিটির সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের দেওয়া কার্ড রয়েছে। এতে লেখা রয়েছে তিনি ব্যালট পেপার সেলের সিনিয়র এসিস্টেন্ট। তাকে যে কার্ড দেওয়া হয়েছে এতে স্পষ্ট লেখা রয়েছে, তিনি কাউন্টিং হলে প্রবেশ করার যোগ্যতা রাখেন। এমন গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা এক ব্যক্তি রাতের অন্ধকারে চুপিসারে বাড়ী বাড়ী গিয়ে ব্যালট পেপার সংগ্রহ করছে, তাও নির্বাচনের প্রায় এক সপ্তাহ পর, এটা অবশ্যই বিপদজনক।
কিছু এলাকাবাসী মিলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি জানান, এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক তাকে পাঠিয়েছেন। তবে সেই আধিকারিকের নাম তিনি বলবেন না। শেষমেষ রেগে গিয়ে বলেন, “আমরা তো জেলা শাসকের অধীনে কাজ করি, তিনি সব জানেন।”
জেলাশাসক কীর্তি জাল্লির সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, “প্রথমত এত রাতে কারও বাড়িতে গিয়ে ব্যালট পেপার সংগ্রহ করার মতো কোনো নির্দেশ দেওয়া হয়নি। যে ব্যক্তির কথা বলা হচ্ছে তিনি এখন কোনও দায়িত্বে নেই, ফলে কেন সেখানে এত রাতে গিয়ে ব্যালট পেপার সংগ্রহ করছেন এটা সন্দেহজনক। আমি নিজে ঘটনার তদন্ত করব এবং এদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ অতিসত্বর নেওয়া হবে।”
খবর পেয়ে এলাকায় উপস্থিত হন কংগ্রেস দলের বিভিন্ন সদস্য সহ নির্দল প্রার্থী দিলীপ কুমার পালের সমর্থকরাও। যুব কংগ্রেসের সদস্য কুশল দত্ত বলেন, “এটাই একমাত্র ঘটনা নয় গতকাল এবং আজকে শহরের বিভিন্ন এলাকায় এধরনের ব্যালট সংগ্রহকারী নির্বাচন কর্মীদের দেখা গেছে। শহরাঞ্চলের লোক সচেতন, ফলে এগুলো ধরা পড়েছে। কিন্তু গ্রামাঞ্চলে হয়তো আরও বড় আকারের চক্রান্ত চলছে। এভাবে নির্বাচন প্রক্রিয়া হলে একে কিভাবে গণতন্ত্রের উৎসব হিসেবে গণ্য করব? শাসক দল সোজা পথে নির্বাচনে জিততে পারবেনা বলে এধরনের কার্যকলাপে লিপ্ত হয়েছে।”
উল্লেখ্য, সম্প্রতি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল ব্যালট পেপার নিয়ে অযথা ভুল সংবাদ না ছড়াতে। তবে জেলা প্রশাসনের অধীনে কাজ করা সরকারী আধিকারিকরা রাতের অন্ধকারে যখন চুপিসারে ব্যালট পেপার সংগ্রহ করতে গিয়ে ধরা পড়ছেন, তখন কি বলবেন প্রশাসনের আধিকারিকরা?
Comments are closed.