মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে উন্মুখ 'লাইফ কোচ' বিপ্রাংশু ভট্টাচার্যের সঙ্গে কিছুক্ষণ
‘যারা স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসেন, তাদেরকে অবাস্তবিক আখ্যা দিয়ে তাদের নিয়ে সবসময়ই ঠাট্টা করা হয়। কিন্তু সত্যটা হচ্ছে, তারা সবচেয়ে বেশি বাস্তবমুখী। কারণ তাদের উদ্ভাবনগুলি আমাদের সবার অগ্রগতি এবং উন্নত জীবন যাত্রাকে পরিচালিত করে।’ সর্বকালের অন্যতম সেরা অনুপ্রেরণাকারী বক্তা এবং লেখক রবিন এস শর্মা এ কথাগুলো বলেছেন। তিনি মানুষের জীবনের একটি সহজ কিন্তু গভীর পথ খুঁজে পেতে সাহায্য করার জন্য এক সুপরিচিত নাম। শিলচরের একজন ব্যক্তি, যিনি এইভাবে এমন কিছু করতে চান, যা অন্যের সুখের এবং আনন্দের কারণ হয়ে উঠবে।
এই পৃথিবীতে প্রত্যেকেই জীবনে উন্নতি করতে চায় এবং অবশ্যই সুখী হতে চায়। তবে এমন মানুষের সংখ্যা খুবই কম, যারা অন্যের জীবনকে সুখী হতে সাহায্য করে। শিলচরের একটি ছেলে এই প্রয়োজনীয় ফাঁকটুকু ভরে দিতে নিজেকে শিক্ষিত করতে শুরু করে। নানা ভাবে জ্ঞান সংগ্রহ করে, সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে প্রয়োজনীয় কোর্স করে এবং আজ সে ‘লাইফ কোচ’ হিসেবে মানুষকে তাদের জীবনের দিকনির্দেশনা খুঁজে পেতে সাহায্য করে। এখানে তুলে ধরা হলো বিপ্রাংশু ভট্টাচার্যের সঙ্গে কিছু বার্তালাপ, যিনি একজন প্রত্যয়িত ‘লাইফ কোচ’, প্রেরণাদায়ী বক্তা তথা ‘লাইফ ডিরেকশন’র প্রতিষ্ঠাতা এবং একজন স্বপ্নদর্শী।
সম্পাদিত অংশ
এই জার্নিটা শুরু করতে আপনাকে কি অনুপ্রাণিত করেছিল? আপনি কোথা থেকে এই আইডিয়াটা পেলেন?
সবচেয়ে প্রথম কথা হচ্ছে, আমি অন্যকে যথাযথ দিক-নির্দেশ করতে চেয়েছিলাম এবং তাদেরকে খুশি ও সফল করে তুলতে চেয়েছিলাম। গত কয়েক বছরে আমি অনেক লোককে পর্যবেক্ষণ করেছি, যারা তাদের সমস্যার সমাধানের আশা নিয়ে আমার কাছে এসেছিলেন। মজার বিষয় হচ্ছে আমি বুঝতে পেরেছি যে তাদের মধ্যে বেশিরভাগই ইঁদুর দৌড়ের শিকার। আর তখনই আমি সিদ্ধান্ত নেই যে, এই ফিল্ডে আমাকে আরো অতিরিক্ত জ্ঞান অর্জন করতে হবে। আমি যুক্তরাজ্যের আইএএমপি থেকে ‘লাইফ কোচিং’ এর উপর কোর্স করি এবং সঙ্গে অনেক বই পড়া শুরু করি। এখন আমার একটি সঠিক ফ্রেমওয়ার্ক রয়েছে, যা সবার জন্য খুবই সহায়ক।
আপনার কাছের মানুষ এবং আপনি যাদের জন্য ‘লাইফ ডিরেকশন’ এর লক্ষ্য স্থির করেছিলেন, তাদের উভয় দলের প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল?
আমার কাছের লোকেরা আমাকে অনেক উৎসাহিত করেছে এবং কয়েকজন আমাকে আইডিয়া দিয়েছে কিভাবে আমি এই জার্নিতে আরো বেশি মূল্যবোধ যোগ করতে পারি। ডিজিটাল মিডিয়ার কাছে আমি কৃতজ্ঞ আমরা কেবল তিন মাসে ১০০০০ জনের বেশি ফলোয়ার পেয়েছি। এ ছাড়াও বিভিন্ন দেশ থেকে মানুষ আমাদের ওয়েবসাইট ( www.biprangshu.com) ভিজিট করে। আমি মনে করি এগুলো আমার কাজের ইতিবাচক দিকগুলোকে আরো সমৃদ্ধ করে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছাতে পেরে সত্যি ভাল লাগছে। আমার বরাক উপত্যকা,আজমির, দিল্লি, পুনে এবং কলকাতায় ক্লায়েন্ট রয়েছে। তাদের ফিডব্যাকগুলো আমাকে সত্যি আরও বেশি উৎসাহিত করছে।
‘লাইফ ডিরেকশন’ নামের শুরু কিভাবে এবং এই আইডিয়াটা নিয়ে আপনি প্রথম কাদের সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন?
আমি বিশ্বাস করি, প্রত্যেকটা নামের একটা স্বচ্ছ বার্তা বহন করা উচিত অর্থাৎ একটা ক্লিয়ার মেসেজ থাকা উচিত। তাই ‘লাইফ ডিরেকশন’ নামটি নিজেই একটা বার্তা বহন করছে যে এটা ওদের জন্যই, যাদের জীবনে সঠিক দিকনির্দেশ প্রয়োজন।
আমি আমার এই যাত্রা শুরু করার আগে এই ফিল্ডের বেশ কয়েকজন পেশাদারের সঙ্গে কথা বলেছি।এই আইডিয়াটা নিয়ে যতটা সম্ভব আলোচনা করা যায়, তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি।
আপনার পেশাদার যাত্রা (জার্নি) এখন পর্যন্ত কেমন? স্কুল ছাড়ার পর আপনি কি করেছেন?
স্কুল ছাড়ার পর আমি ইকোনমিক্স অনার্স নিয়ে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেছি। তারপর আমি ‘মার্কেটিং’ এবং ‘এইচআর’ এ এমবিএ করেছি। এরপর ‘লাইফ কোচিং’য়ে ডিপ্লোমা কোর্স করেছি। আমার করপোরেট ফার্মে কাজ করারও এক দশকের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে। আমি যা কিছু করেছি তা আমার আত্মবিশ্বাসকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে এবং আমার জীবনে আরো বেশি করে মূল্যবোধের সংযোজন করেছে।
‘লাইফ ডিরেকশন’ এ আপনার লক্ষ্যগুলো কি? সেই জিনিসটা কি, যা আপনাকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে?
আমি বিশ্ব বিখ্যাত প্রেরণাদায়ী স্পিকার, লাইফ কোচ এবং এন্ট্রাপ্রেনার হিসেবে এক উত্তরাধিকার তৈরি করতে চাই। আমি মানুষের সুখের কারণ হতে চাই।
আপনাকে কী চূড়ান্ত তৃপ্তি দেয়?
মানুষের মুখে হাসি এবং সমাজকে কিছু ফিরিয়ে দেওয়ার সুযোগ। ইউটিউব চ্যানেলে আমি সাপ্তাহিক আমার প্রেরণামূলক ( মোটিভেশনাল) ভিডিও প্রকাশ করছি। কেউ যদি আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে কোন বিষয় অন্তর্ভুক্ত করতে চান বা বিষয়টি নিয়ে আমাদের কাছ থেকে জানতে ইচ্ছুক থাকেন তাহলে মন্তব্য বিভাগ বা কমেন্ট সেকশনে উল্লেখ করতে পারেন।
Comments are closed.