
মেহেরপুর দুর্ঘটনা : গাড়ি থামাবার চেষ্টা করলেই চাপা দিতে প্রস্তুত ছিল সেই চালক, জানাল কাছাড় পুলিশ
গতরাতে দুর্ভাগ্যজনক একটি ঘটনায় এক দ্রুতগামী ট্রাক একদল লোকের উপর দিয়ে চলে গিয়েছিল, যারা কিনা কালী মাকে বিসর্জন করার জন্য রাস্তায় শোভাযাত্রা করে যাচ্ছিল। ট্রাকটি শুধুমাত্র দুটি অল্প বয়সী মেয়েকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিল না, এই ঘটনায় প্রায় ১৯ জন আহত হয়েছেন।
আজ কাছাড় পুলিশ তার অফিশিয়াল ফেসবুক পেজের মাধ্যমে এই হত্যাকাণ্ডের চালক সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়ে একটি আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়।এতে এও উল্লেখ করা হয় যে ট্রাকটি থামিয়ে দেওয়ার জন্য যারা চেষ্টা করছিল ট্রাকের ড্রাইভার তাদের কিভাবে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করেছিল।
পোস্টটিতে লেখা হয়, ” ৩০ অক্টোবর গাড়ি নং এন এল ০১কে ৯৭৪১ এর অভিযুক্ত চালক দ্রুতগতিতে এবং গাফিলতি করে গাড়ি চালাচ্ছিল, কালী পূজার শোভাযাত্রার অনেক পথচারীকে সে ছিটকে ফেলে দেয়। এর ফলে দুজন মারা যান এবং অন্যান্য ১৮/১৯ জন আহত হন।অভিযুক্ত চালক যানবাহনটি থামানোর যারা চেষ্টা করছিল তাদের হত্যা করার প্রয়াস চালাচ্ছিল। এ ঘটনায় শিলচর পুলিশ স্টেশনে একটি মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। মামলা নম্বর হচ্ছে- ৩৭৮১/১৯ ইউ/এস- ২৭৯/৩৩৮/৩৩৭/৪২৭/৩০৭/৩০২ আইপিসি। অভিযুক্ত চালক রাজ কুমার দাস এবং হ্যান্ডিম্যান প্রসন্ন রামসিয়ারিকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তাদেরকে বিচারকের দরবারে প্রেরণ করা হয়েছে।
থানার ইনচার্জ সান্তনু দাস বরাক বুলেটিনের সঙ্গে কথা বলার সময় গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন,” চালক রাজকুমার দাস ও তার সহকারি প্রসন্ন রামশেয়ারিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে ট্রাকটি তাদের কারোর নামে ছিল না। তারা দুজনই বাক্সার বাসিন্দা।”
পাঠকদের সবাই ইতিমধ্যেই জানেন যে গতকাল রাত প্রায় সাড়ে সাতটার সময় একটি দ্রুতগামী ট্রাক শিলচর শহর থেকে শিলচর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল অভিমুখে যাচ্ছিল। ঠিক সেসময় কালী মায়ের প্রতিমা বিসর্জনের উদ্দেশ্যে উল্টোদিক থেকে একদল লোক শোভাযাত্রা করে আসছিলেন। সূত্র অনুসারে, মেহেরপুর ফ্লাওয়ার মিলের সামনে এসে ট্রাকটি নিয়ন্ত্রণ হারায় এবং শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারী মানুষদের ওপর দিয়ে চলে যায়। একজন প্রত্যক্ষদর্শী আমাদের জানান,” সেখানে গুরুতরভাবে আহত হয়ে বাচ্চা, পুরুষ ও মহিলারা অজ্ঞান হয়ে শুয়ে ছিলেন এবং রক্তগঙ্গা বইছিল।
পরে বিক্ষুব্ধ জনতা ট্রাকে আগুন ধরিয়ে দেয়। ওই ট্রাকে করে অবৈধ পোস্ত নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। দুর্ভাগ্যজনকভাবে একদল মানুষ এ ধরনের মর্মান্তিক ঘটনার পরও বস্তা করে পোস্ত সংগ্রহ করার কাজে লিপ্ত ছিলেন।
আজ বিক্ষোভকারীরা এই দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে শহরে বিঘ্ন সৃষ্টি করার চেষ্টা করেন।ফলে কাছাড়ের জেলা উপায়ুক্ত লায়া মাদ্দুরি এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেন।তিনি বলেন, “আমি কাছাড়বাসীদেরকে জানাতে চাই যে প্রশাসন ২৪ ঘন্টা কাজ করছে এবং বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং আমরা এও বলতে চাই, যারা প্রতিহিংসামূলক রাস্তা অবলম্বন করবে এবং আইন নিজের হাতে তুলে নেবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
Comments are closed.