
চেংকুড়ি রোডে মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলাকে মেরে হাত ভেঙে দিলে অজ্ঞাত-পরিচয় দুষ্কৃতীরা
কিছুদিন আগে দোল উৎসবের সন্ধ্যায় শিলচরের রাঙ্গিরখাড়ি পয়েন্ট সংলগ্ন এলাকায় কিছু উদ্যাম যুবক রাত দশটায় এক মানসিক ভারসাম্যহীন রাস্তার পাশে থাকা মহিলাকে রঙ মাখিয়ে নিজেদের আধিপত্য জাহির করেছিল। মঙ্গলবার রাতে এভাবেই একদল অজ্ঞাত-পরিচয় লোক আরেক মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলাকেও মেরে তার হাত ভেঙে দেয়। মানুষ হিসেবে আমরা কতটুকু অসামাজিক এবং অধম এসব ঘটনায় আবার বোঝা যায়। তবে একদিকে যেমন সমাজে এমন লোক রয়েছে যারা অসহায় মহিলার হাত ভেঙে দিতে পারে, অন্যদিকে রয়েছে সুবীর ধরের মত যুবকরা যারা সেই মহিলাকে নিয়ে চিকিৎসা করিয়ে তার সুরক্ষা ব্যবস্থা করে।
মহিলাটিকে হাত ভেঙে দেওয়ার পর তিনি রাস্তার পাশে বসেই যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলেন। ঘটনাটি ঘটেছে শিলচর শহরের চেংকুড়ি রোড সংলগ্ন এলাকায়, ন্যাশনাল হাইওয়ে পুলিশ পেট্রোলিং পয়েন্ট থেকে অদূরে। পরিবার এবং অভিভাবকহীন মানসিক ভারসাম্য হারানো মহিলা ঐ এলাকায় রাস্তার পাশে জীবন কাটান। তাকে কেন মারপিট করা হলো, হাত ভেঙে দেওয়া হলো এবং কে কাজটি করলো এটা প্রকাশ্যে আসেনি। তবে সমাজসেবী যুবকেরা সেই খবর পাওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে এলাকায় ছুটে যান। মহিলাকে শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, মাঝরাতেই তার প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পন্ন হয়। প্লাস্টার লাগানো অবস্থায় হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে তিনি সমাজসেবীদের সঙ্গেই সুরক্ষিত আশ্রয়ে চলে যান।
গতবছর হাসপাতাল রোডে এক মহিলাকে দ্রুতগামী অটো ধাক্কা দিয়েছিল। তার পায়ে একটা ক্ষত হয় এবং সেটা পচে পোকা হয়ে যায়। রাতের বেলায় রাস্তার পাশে বসে যন্ত্রণায় চিৎকার করতেন মহিলাটি। সুবীর ধর এবং তার সহযোগীরা সেই মহিলার চিকিৎসা করিয়ে তাকে সুরক্ষিত অবস্থায় একটি হোমে পাঠিয়েছেন।
শিলচর শহরে বিভিন্ন রাস্তার পাশে এভাবে অনেক মহিলাই রয়েছেন যাদের খাবার যোগান দেয় বিভিন্ন সামাজিক সংস্থার সদস্যরা। করোনা পরিস্থিতিতে এসব মহিলাদের খাবার যোগানোর পাশাপাশি মাস্ক- স্যানিটাইজার ইত্যাদি দিয়ে সুরক্ষিত রেখেছিল বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সদস্যরা। এমনকি এসব মহিলাদের কোভিড পরিক্ষাও করানো হয়েছে।
গতবছর রংপুরে এক মানষিক ভারসাম্য হারানো মহিলা সন্তান সম্ভবা হয়েছিলেন, তার অবস্থার সুযোগ নিয়ে কোনও লম্পট শ্লীলতাহানি করেছিল। হয়তো আরও অনেকেই এধরনের ঘটনার শিকার হন যেটা জনসমক্ষে আসেনা। ট্রাফিক পুলিশের আধিকারিক শান্তনু দাস মহিলাটিকে তেজপুরের মানসিক চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন। পাশাপাশি তার কন্যা সন্তানকে সুরক্ষিত ভাবে একটা হোমে রাখা হয়েছে।
Comments are closed.