'বিশ্বাসে নিরাময়ের' প্রতিশ্রুতি দিয়ে 'পীর' ছদ্মবেশে কাটিগড়ার এক পরিবারকে লুটে নিল দুর্বৃত্তরা
গত কয়েকদিনে কাটিগড়া এলাকায় একের পর এক নজিরবিহীন জালিয়াতির ঘটনা ঘটে চলেছে। কয়েকদিন আগে কাতিরাইলে স্বর্ণালঙ্কার ধোয়া ও পরিষ্কার করতে আসার ছলে দুর্বৃত্তরা এক পরিবারকে সর্বস্বান্ত করে।
এবার কাটিগড়ায় ঘটল ভিন্ন পদ্ধতির ঘটনা। অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা ‘পীর’ (সুফি আধ্যাত্মিক পথপ্রদর্শক) ছদ্মবেশে রোগীদের জাদুকরী নিরাময়ের কথা বলে একটি পরিবারকে লুট করেছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কুরকুড়ি এলাকায় দুর্বৃত্তরা এসে প্রমোদ রঞ্জন দেবের পুরো পরিবারকে অজ্ঞান করে টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার হাতিয়ে নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় প্রমোদ রঞ্জন দেবের ছোট ছেলে পান্না দেব কালাইন পুলিশ ফাঁড়িতে অভিযোগ দায়ের করেছেন। কালাইন-শিলচর সড়কের পদ্রিটিলায় টায়ার মেরামতের দোকান চালান তিনি। কয়েকদিন আগে দুষ্কৃতিরা একটি অল্টো নিয়ে এসে পান্নার সঙ্গে প্রথম বারের মত যোগাযোগ করে। স্বঘোষিত পীর সহ এই অজ্ঞাত ব্যক্তিরা বৃহস্পতিবার এসে আবারও পান্না দেবের দোকানে যায়।
তারা পীরের জাদুকরী ক্ষমতা সম্পর্কে পান্না দেবকে প্রলুব্ধ ও বোঝানোর চেষ্টা করেছিল এবং পীর সাধারণত কারও কাছে সাহায্য বা অনুদান চান না। এভাবেই এই দুর্বৃত্তরা পান্নার আস্থা অর্জন করে এবং তার পরিবারের সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করে। কথোপকথনের সময় হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পড়েন পান্না। এরপর ওই ব্যক্তিরা তার বাড়ির ঠিকানা জানতে চান এবং পান্নাকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।
পান্নার বাড়িতে পৌঁছে তারা জাদুকরী মন্ত্র দিয়ে সারিয়ে তুলতে শুরু করে এবং পরিবারের সকল সদস্য একে একে অজ্ঞান হয়ে পড়তে শুরু করে। পুরো ঘটনাটি ঘটেছে সন্ধ্যায়, প্রমোদ দেব নামে একজন বয়স্ক ব্যক্তি জানিয়েছেন। তারা যা ঘটছে তার কিছুই বুঝতে পারেননি। মধ্যরাতে তাদের জ্ঞান ফেরে।
প্রমোদের ছেলে ও মেয়ের জামাই একই ঘটনার বর্ণনা দেন। দুর্বৃত্তরা তাদের সম্মোহিত করতে সক্ষম হয় এবং তারা তাদের সমস্ত অর্থ ও সোনা দুর্বৃত্তদের হাতে তুলে দেয়। ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে পান্না দেব কালাইন পুলিশ ফাঁড়িতে অভিযোগ দায়ের করেছেন। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ধারাবাহিক ডাকাতি ও জালিয়াতির ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন কালাইনের স্থানীয় মানুষজন। তারা সুষ্ঠু তদন্ত ও দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
Comments are closed.