Also read in

প্রকাশ্যে পুলিশ এবং জনগণের উপর গুলি চালাল মিজোরা, মৃত পাঁচ পুলিশকর্মী, সুপার সহ আহত প্রায় ৬৫

প্রকাশ্যে অসমের জনগণের ওপর গুলি চালালো পুলিশ বাহিনী, পুলিশের আধিকারিকরা জনগণকে সূরক্ষা দেওয়ার জন্য পাল্টা গুলি চালাতে পারেন নি কেননা তাদের ওপর এমনটাই নির্দেশ ছিল। এদিন সকালে আসাম এবং মিজোরাম সীমান্তে লায়লাপুর এলাকায় প্রথম ঝগড়া বাঁধে। স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, লায়লাপুর এলাকায় অসমের মাটিতে একটি ক্যাম্প বানানোর কাজ শুরু করেছিল পুলিশ বিভাগ। এতে বাধা দেয় মিজোরামের আইআর ব্যাটালিয়ন। সুরক্ষা বাহিনীর মধ্যে কথাবার্তার মাঝখানে মিজোরামের তরফে সাধারণ মানুষ পাথর ছুড়তে শুরু করেন। এতে পুলিশ এবং অসমের নাগরিকরা আহত হন। এরপর অসমের তরফ থেকেও পাল্টা পাথর ছোড়া হয়, তবে তাদের তেমনটা না করতে পরামর্শ দেন পুলিশের আধিকারিকরা। কিছুক্ষণ পর জেলাশাসক কীর্তি জল্লি সেখানে উপস্থিত হলে তার গাড়ির ওপর হামলা হয়।

দিনভর উত্তেজনা চললেও বিকেল চারটে নাগাদ হঠাৎ করেই মিজোরামের তরফ থেকে অশ্রু গ্যাস এবং গুলি চালানো শুরু হয়। কাছাড় জেলার পুলিশসুপার বৈভব চন্দ্রকান্ত নিম্বালকর এবং ধলাই থানার ওসি সাহাবুদ্দিন সহ প্রায় ৬৫ জন লোক আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

ঘটনায় পাঁচ পুলিশ কর্মী নিহত হয়েছেন এরা হলেন, লিটন শুক্লবৈদ্য, স্বপন কুমার রায়, মজরুল হক বরভুইয়া, শামসুজ্জামাল বরভূঁইয়া এবং নাজমুল হোসেন। প্রত্যেকেই এদিন সীমান্তে চলাকালীন গুলিতে গুরুতর আহত হয়েছেন এবং কেউ কেউ হাসপাতালে আসার আগেই মারা গেছেন। মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা টুইট করে শোক বার্তা জানিয়েছেন এবং তিনি নিজে মিজোরামে শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।

এদিন বিকেলে যখন মিজোরামের তরফে প্রথমে গুলি চালানো হয়, অসম পুলিশের কাছে গুলি চালানোর নির্দেশ ছিল না। তারা বাধ্য হয়ে সেখান থেকে সরে এসেছেন, এতে অনেকেই আহত হয়েছেন এবং তাদের আঘাত অনেকটাই গুরুতর। পরিস্থিতি এতটাই ভয়ঙ্কর হয়ে দাঁড়ায় যেন দুটি রাষ্ট্রের মধ্যে লড়াই হচ্ছে। ভারতবর্ষের নাগরিকদের ওপর ভারতবর্ষের অন্য রাজ্যের পুলিশ প্রকাশ্যে গুলি চালাচ্ছে এটা হয়তো আগে কখনো দেখা যায়নি।

ঘটনায় গুরুতর ভাবে আহত হয়েছেন পুলিশসুপার বৈভব চন্দ্রকান্ত নিম্বালকর। বর্তমানে শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউ ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন এবং তাকে রক্ত দিতে হয়েছে। তার কোমরের নিচে গুলি লেগেছে এবং অনেকটা রক্তক্ষরণ হয়েছে। এদিকে দুপুরবেলা জেলাশাসকের গাড়িতে ঢিল ছোড়া হয়েছে, কিন্তু তার শারীরিকভাবে ক্ষতি হয়নি। দুদিন আগে মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী কাছাড় জেলা হয়ে মেঘালয় গেছেন এবং আবার এদিক দিয়ে ফিরে মিজোরাম গেছেন। তিনি জেলায় ঢোকার পর কাছাড়ের ডিসি এবং এসপি তাকে অত্যন্ত সুন্দরভাবে অভ্যর্থনা জানানোর পাশাপাশি তার সুরক্ষার ব্যবস্থা করেছিলেন। দুদিনের মাথায় মিজোরামের বাহিনীর হাতেই তারা দুজনে নিগৃহীত হলেন।

শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যারা আছেন, তাদের মৃত্যুর জন্য অনেকটাই সরকারের ভুল নীতি দায়ী বলে অভিযোগ।কারণ অপর পক্ষ থেকে যখন পুলিশ এবং সাধারণ মানুষের ওপর গুলিবর্ষণ হচ্ছে। হাসপাতালে এখনও অনেকেই গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন এবং মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

Comments are closed.