মনোনয়নেই শক্তি প্রদর্শন করলেন দিলীপ, 'খেলা হবে' স্লোগানে মুখর অফিস পাড়া
মনোনয়নের শেষদিন চমক দেখালেন বিধায়ক দিলীপ কুমার পাল। বিরাট শোভাযাত্রা এবং সমর্থকদের স্লোগানে মুখরিত হয় অফিস পাড়া। এদিন দুপুরে সার্কিট হাউস রোড থেকে শুরু হয় শোভাযাত্রা, শহরের বিভিন্ন রাস্তা হয়ে জেলাশাসক কার্যালয়ে গিয়ে পৌঁছোয়। সেখানে নিয়ম অনুযায়ী সমর্থকদের গেটের বাইরে রেখে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যান দিলীপ কুমার পাল। জেলাশাসক কীর্তি জল্লির হাতে মনোনয়নপত্র তুলে দিয়ে প্রত্যয়ের হাসি নিয়ে বেরিয়ে আসেন তিনি। সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেন, “প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেস, জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত ভালোবাসাই নির্বাচনে তার শক্তি। প্রত্যেকের পাশে যাবেন এবং তার প্রতি যে অন্যায় হয়েছে এর সুবিচার চাইবেন।”
বৃহস্পতিবার একসঙ্গে কংগ্রেস এবং বিজেপি দলের প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন। তবে শুক্রবার দিলীপ কুমার পাল ছাড়াও এআইইউডিএফ এবং অন্যান্য দল সহ নির্দল প্রার্থীরা মনোনয়ন দিয়েছেন। তবে দিলীপ কুমার পালের সমর্থনে শোভাযাত্রা ছিল চোখে পড়ার মতো। হাজার খানেক মানুষ অত্যন্ত উৎসাহ নিয়ে তার সমর্থনে রাস্তায় নেমেছেন, যেন কোনও বড় রাজনৈতিক দলের প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার দৃশ্য। একটা সময় মনে হচ্ছিল, গতকালের বিজেপি বা কংগ্রেসের শোভাযাত্রাকে ছাপিয়ে গেছে দিলীপ কুমার পালের সমর্থকদের শোভাযাত্রা।
একটি বিশেষ গান বানানো হয়েছে দিলীপ কুমার পাল’র সমর্থনে। গানে বলা হয়েছে, “সুপারি আসে লরি ভরে, সিন্ডিকেটের হাত ধরে, বাধা দিলে টিকিট কাটা পরে,” “পোস্তর গাড়ি প্রাণ নেবে ক্ষমতার বলে চাপা দেবে জনগণ এবার জবাব দেবে…. খেলা খেলা খেলা হবে,” ইত্যাদি।
সিন্ডিকেট রাজের বিরুদ্ধে মুখ খোলায় বিজেপির টিকিট পাননি, এমনটাই অভিযোগ করে সম্প্রতি দল ছেড়ে ছিলেন প্রাক্তন উপাধ্যক্ষ এবং বিধায়ক দিলীপ কুমার পাল। গতকাল মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল শিলচরে এসে দিলীপ পাল প্রসঙ্গে কোনও প্রশ্নের উত্তর দেননি। হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এক সাংবাদিক সম্মেলনে দিলীপ কুমার পালকে কটাক্ষ করে বলেছেন, আগে কেন এসব প্রশ্ন করলেন না, এখন দলের টিকিট না পেয়ে বিদ্রোহ দেখাচ্ছেন?
এসব বিষয়ে দিলীপ কুমার পালকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “হিমন্ত বিশ্ব শর্মা অনেক বড় মাপের রাজনীতিবিদ এবং খুব সুন্দর কথা বলতে পারেন। আমরা সাধারন মানুষ সেটা পারি না, তবে আমরা কাজের মাধ্যমে জনগণের পাশে থাকতে জানি। মুখ্যমন্ত্রী ভালো লোক এবং তার সঙ্গে আমার ব্যক্তিগতভাবে অনেক কথা হয়েছে, ফলে প্রকাশ্যে তিনি কি বললেন, বা বললেন না তাতে আমি চিন্তিত নই।”
এদিকে দিলীপ কুমার পালের সমর্থনে আরও অনেক বিজেপি দলের সদস্যরা দল ছাড়ছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় এখন সবথেকে বেশি ট্রেন্ডিং দিলীপ কুমার পাল। তিনি বিজেপির প্রার্থী দ্বীপায়ন চক্রবর্তীকে প্রতিদ্বন্দী হিসেবেই মনে করছেন না। স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, “নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা তমাল বণিকের সঙ্গে।” এই কথার পেছনে অনেক অর্থ লুকিয়ে রয়েছে। যেভাবে বিজেপির সদস্যরা দল ছেড়ে তার সঙ্গে যোগ দিচ্ছেন আগামীতে দলে বড়োসড়ো ধ্বস নামার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। আগামী দিনের পরিকল্পনা কি, এই প্রশ্নের উত্তরে দিলীপ পাল বলেন, “আগে আগে দেখিয়ে হোতা হ্যায় ক্যায়া।”
Comments are closed.