Also read in

১১ এপ্রিল বরাকে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, রামনগরেই সভা

আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে শিলচরের প্রার্থীর হয়ে প্রচার করতে ১১ এপ্রিল আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। জানুয়ারি মাসের ৪ তারিখ রামনগরে বিরাট জনসভা করে গেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেই মাঠেই এবার সভাটি হচ্ছে। এদিন বিকেলে সভাটি শুরু হবে এবং তার জন্য সব রকমের আলোকসজ্জার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। রবিবার দুপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় খবরটি জানালেন রাজদীপ রায়।

১৮ এপ্রিল শিলচর এবং করিমগঞ্জে নির্বাচন। এর আগে মূলত গ্রামাঞ্চলে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন বিজেপি দলের নেতা এবং কর্মকর্তারা। তবে আস্তে আস্তে প্রচারটি শহরকেন্দ্রিক হচ্ছে এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরের ফলে জেলায় একটি আলোড়ন সৃষ্টি হবে, এমনটাই মনে করেন রাজদীপ রায়। নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল, নেডার আহ্বায়ক হিমন্ত বিশ্ব শর্মা সহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত থাকবেন।

দলের প্রচারের ব‍্যপারে তিনি বলেন, গত পাঁচ বছরে প্রধানমন্ত্রী এতগুলো প্রকল্প সফলভাবে কাজে লাগিয়েছেন যে দেশের প্রায় ৪০ কোটি মানুষ লাভবান হয়েছেন, সেই হিসাব যদি লোকসভা নির্বাচন সমষ্টির অনুপাতে ভাগ করা হয় তবে দেখা যাবে শিলচর সমষ্টির প্রায় ৭ লক্ষ মানুষ প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন যোজনার ফল ভোগ করেছেন। প্রত্যেক ধর্মাবলম্বী জনগোষ্ঠীর মানুষই এই ফল ভোগ করেছেন, তাই বিজেপি শুধু হিন্দু দলের ভোট পাবে এবং বাকিদের পাবেনা সেটা বলা যায়না। আমরা চা বাগান জনগোষ্ঠীর পুরোপুরি সমর্থন পাবো। অন্যান্য জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর ব্যক্তিরাও আস্তে আস্তে বিজেপিতে ভরসা রাখতে শুরু করেছেন। তাদের কাছে আর কোনোও বড় বিকল্প আপাতত নেই, তাই এক বিরাট সংখ্যক সংখ্যালঘু ভোট আমরাই পাবো। এবছরের নির্বাচন অতীতের প্রত্যেকটি নির্বাচন থেকে আলাদা, কারণ মানুষ এখন ভাষা, ধর্ম, জাতি এসবের উপরে উঠে উন্নতির জন্য ভোট দেবেন। আমরা নিজেরা প্রচার করছি এবং অসম গণপরিষদের মত বন্ধু শক্তিগুলো আমাদের সঙ্গে প্রচারে পা মেলাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন,বাঙালি এবং চা-জনগোষ্ঠীর বাইরেও প্রায় ১৭টি তপশিলি উপজাতি জনগোষ্ঠীর ব্যক্তিদের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। সবাই বিজেপির কাজের প্রশংসা করেছেন, আমরা আশা করছি এই ধারাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে তারা আমাদের পাশে দাঁড়াবেন।

নির্বাচনে জিতে এসে বরাক উপত্যকার প্রথম যে কাজগুলো করার ইচ্ছা রয়েছে তার মধ্যে এক নম্বরে রয়েছে চার ধরনের হাইওয়ে উন্নত করা। এই চার ধরনের হাইওয়ে হচ্ছে রাস্তা, রেল, বিমান পরিসেবা এবং ইন্টারনেট পরিষেবা। আজ দেশের অন্যান্য স্থানে ইন্টারনেটের উন্নতি এতটাই এগিয়ে গেছে যা আমরা শিলচরে বসে কল্পনা করতে পারছিনা। এখনো দুই ‌এমবিপিএস স্পিডে আমাদের চলতে হয়। মোদীজি তার আমলে রাস্তার কাজ অত্যন্ত সুদক্ষ ভাবে এগিয়ে নিয়ে গেছেন, এই ধারাকে আমরা আরো উন্নত করবো। বরাক উপত্যকার সঙ্গে দেশের অন্যান্য এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থাকে উন্নততর করতে বিমান পরিসেবার আধুনিকরণ করা হবে।
বিজেপি নাগরিকত্ব বিল নিয়ে নিজের অবস্থান প্রথম থেকেই স্পষ্ট রেখেছে। আমরা আবার সরকারে এলে ঠিক আগের মতই বিলটি রাজ্য সভায় উত্থাপন করা হবে। যারা বরাক উপত্যকায় নাগরিকত্ব বিলের বিরোধিতা করছে, তাদের সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে কোন কিছুর বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর। তবে আমরা তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি, তারা যদি আমাদের সঙ্গে একমত না হন, বিরোধিতা করতে পারেন। তবে ভোটদাতার সংখ্যার দিক দিয়ে তারা অত্যন্ত কম, তাই আমরা তাদের জন্য অবস্থান পরিবর্তন করতে পারবো না।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, বরাক উপত্যকার প্রত্যেকটি শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে তিলে তিলে ধ্বংস করেছে কংগ্রেস দল। যদি আঙ্গুল দেখিয়ে এসব গুনা হয় তাহলে তালিকা বেশ বড় হবে। তবে আমার উদ্দেশ্য শুধু তাদের গালিগালাজ করা নয়, বিজেপি ক্ষমতায় এলে আমরা প্রত্যেকটি হারিয়ে যাওয়া শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে উন্নত করার পাশাপাশি আরও নতুন শিল্প স্থাপন করব। এই অঞ্চলের মেধা যাতে এখানেই ফিরে এসে কাজ করে, তার ব্যবস্থা করব। আমি নিজেও এখানের ছেলে হয়ে পড়াশোনার জন্য বাইরে গেছি। সেখান থেকে পড়াশোনা করে নিজের মাটিতে ফিরে এসেছি এবং যা কাজ করছি দেশের যে কোন জায়গায় থাকলে তার থেকে খুব বেশি করতাম না। এই সুযোগ আমরা প্রত্যেক যুবককে করে দিতে চাই।

Comments are closed.