Also read in

কাছাড়ের নতুন জেলাশাসকের দায়িত্ব নিলেন বর্ণালী শর্মা, উন্নতির ধারা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার

 

নতুন জেলা শাসক হিসেবে যোগ দিলেন এসিএস বর্ণালী শর্মা। রাজ্য সরকারের জেল বিভাগের ইন্সপেক্টর জেনারেল পদে কর্মরত ছিলেন তিনি। সোমবার সকালে জেলাশাসক কার্যালয়ে লায়া মাদ্দুরি আনুষ্ঠানিকভাবে তার দায়িত্বভার বর্ণালী শর্মার হাতে তুলে দেন। এতে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন আধিকারিকরা।

দায়িত্বভার গ্রহণ করে বর্ণালী শর্মা বলেন, কাছাড় জেলা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জেলা। প্রতিটি জেলা শাসকরা অত্যন্ত ভালো কাজ করেছেন এবং তাদের দ্বারা শুরু করা কাজগুলো আরো শক্তভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই হবে আমার প্রাথমিক লক্ষ্য। বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও, এসএলআরএম সহ বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের আরও সঠিক বাস্তবায়ন নিয়ে লাগাতার কাজ চলবে। জেলার জনসাধারণের কাছ থেকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহায়তার প্রয়োজন পড়বে। আমি চাই সবাই এগিয়ে এসে আমাকে সাহায্য করুন।

রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতির কথা ভেবেই এসিএস বর্ণালী শর্মাকে কাছাড়ের নতুন জেলা শাসক হিসেবে নিযুক্তি দেওয়া হয়েছে বলে সরকারি নির্দেশে বলা হয়েছে। তিনি রাজ্য সরকারের জেল বিভাগের ইন্সপেক্টর জেনারেল পদে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছেন। একজন দক্ষ সংগঠক হিসেবে তার পরিচিতি রয়েছে। জেলায় কেন্দ্রীয় কারাগার সহ প্রত্যেকটি কারাগারের আভ্যন্তরীণ ব্যবস্থা উন্নত করার ক্ষেত্রেও কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন নতুন জেলাশাসক।

২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে কাছাড়ের জেলা শাসক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন লায়া মাদ্দুরি। লোকসভা নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার পাশাপাশি ‘বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও’ এর মতো বেশ কয়েকটি সরকারি প্রকল্পের বাস্তবায়নে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছেন। জেলায় যোগ দেওয়ার কিছু দিনের মধ্যেই বাংলা ভাষার প্রতি তার অগাধ শ্রদ্ধা চোখে পড়ে। ধীরে ধীরে বাংলা শিখে একসময় প্রত্যেকটি অনুষ্ঠানে অনর্গল বাংলায় ভাষণ দিয়েছেন তিনি। কাছাড়ের জেলাশাসক হিসেবে সম্ভবত তিনিই প্রথম যে সরকারি অনুষ্ঠানে অনর্গল বাংলায় ভাষণ দেওয়ার রীতি চালু করেন। এমনকি মুখ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠানেও তিনি অনর্গল বাংলায় কথা বলেছেন। প্রথমদিকে অন্যান্য আধিকারিকদের মত কাগজে লিখে বাংলা পড়তেন কিন্তু একসময় আর সেটার প্রয়োজন হতো না। একটি গানের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে গিয়ে বাংলায় গান গেয়েও সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন। জেলার জনগণের সঙ্গে সাংস্কৃতিকভাবে অনেক বেশি আপন হয়ে গিয়েছিলেন লায়া মাদ্দুরি। বিভিন্ন বাঙালি রীতি আচার-আচরণে মহিলাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। জেলার মহিলারা তাকে পেয়ে খুব আনন্দ উপভোগ করতেন।

লায়া মাদ্দুরি বিদায়ের আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বেশ ভাবুক হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, কাছাড় জেলায় মানুষ যেভাবে আমাকে আপন করে নিয়েছিল এর তুলনা হয়না। বিভিন্ন প্রকল্পে কাজ করতে গিয়ে জনগণের কাছ থেকে সাহায্য পেয়েছি। আমার আগের জেলাশাসক এস লক্ষ্মণন যাবার আগে বলেছিলেন শিলচর শহর তথা জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে স্বচ্ছতার উপর বিশেষভাবে জোর দিতে হবে। তিনি যেগুলো প্রকল্প শুরু করেছিলেন সেগুলো চালিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি আমরা আরো নতুন প্রকল্প হাতে নিয়েছি এবং অনেক ক্ষেত্রে সফল হয়েছি। এবার যিনি দায়িত্ব নিচ্ছেন তিনি ও একজন দক্ষ ব্যক্তিত্ব। তার হাত ধরে জেলার আরো অনেক উন্নতি হবে এটাই আমার বিশ্বাস।

Comments are closed.