শ্রী শ্রী অনুকূল চন্দ্রের ১৩০ তম জন্মোৎসবঃ হাজার হাজার ভক্তের ঢল আশ্রম প্রাঙ্গণে
আজ ১১ ফেব্রুয়ারি, রবিবার শিলচরে ঠাকুর শ্রী শ্রী অনুকূল চন্দ্র সৎসঙ্গ বিহার, শিলচর শাখায় বিশাল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শ্রী শ্রী অনুকূল চন্দ্রের ১৩০ তম জন্মোৎসব তথা মন্দিরের বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা দিবস পালন করা হচ্ছে। এখানে উল্লেখযোগ্য, ২২ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৮ সালে শ্রী শ্রী বড়দা বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করে মন্দির উদ্বোধন করেন।কিন্তু মাধ্যমিক পরীক্ষা এগিয়ে যাওয়ার জন্য বাবাই দা’র নির্দশে অনুষ্ঠানের দিন এগিয়ে নিয়ে আসা হয় বলে চম্পক দত্ত জানিয়েছেন।
এই অনুষ্ঠানের অঙ্গ হিসেবে গতকাল ১০ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়। বিকেল ৩ টায় মাতৃ সন্মেলন হয়।এরপর সন্ধ্যায় প্রার্থনার পর অনুষ্ঠিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আকর্ষন ছিলেন কোলকাতার পঙ্কজ দত্ত।
আজ সকাল ৮ টায় বিগ্রহের প্রতিষ্ঠা লগ্ন ঘোষনার পর সমবেত প্রার্থনা হয়। এরপর সকাল ৯ টায় শহর পরিক্রমা করা হয় ঠাকুর, বড়মা এবং বড়দার ট্যাবলো নিয়ে। শহরের বিভিন্ন স্থান পরিক্রমারত এই মিছিলে অন্ততপক্ষে ২০ থেকে ২৫ হাজার লোক অংশগ্রহণ করেন। মিছিলটি মন্দিরে ফিরে আসার পর ত্রিপুরার পিন্টু দাস বাউল মন্দিরের সাংস্কৃতিক মঞ্চে বাউল সঙ্গিত পরিবেশন করে সবাইকে আনন্দ প্রদান করেন। অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে ২ টা থেকে ৩.৩০ টা পর্যন্ত সৎসঙ্গীয় সন্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন ভক্তের জন্য এই সন্মেলনে দীক্ষারোত্তর পরিষেবার অঙ্গ হিসেবে প্রশ্নোত্তরের আয়োজন করা হয়েছিল। বক্তৃতার পর বক্তার বিষয় নিয়ে ভক্তরাও প্রশ্ন করেন।তাছাড়াও ” দৈনন্দিন জীবনে ধর্মের প্রয়োগ ও অনুসরনের প্রয়োজনীয়তা” বিষয়ক এক ধর্মসভারও আয়োজন করা হয়েছিল। এই ধর্মসভাটি ৩.৩০ তা ৫ টা পর্যন্ত চলে।
চম্পক দত্ত আমাদের জানান যে ৪০ থেকে ৪৫ হাজার লোকের আনন্দবাজারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। অনুষ্ঠানে প্রচুর সংখ্যক ভক্ত সমাগম হয়। রাত্রেও ১৫ থেকে ২০ হাজার লোকের আনন্দবাজারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এখনে উল্লেখযোগ্য, গতকালকেও ১০হাজার ভক্তরা আনন্দবাজারে সামিল হয়েছিলেন। আজ রাতেও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করবেন কোলকাতার লোকগীতি শিল্পী জোৎস্না বিশ্বাস ও তার সাথীরা। তাছাড়াও স্থানীয় শিল্পীরাও অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন।
এক সাক্ষাৎকারে মন্দিরের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক চম্পক দত্ত বলেন “ প্রত্যেক বছর উৎসবটা এত বড় আকার নিচ্ছে যে শ্রী শ্রী দাদা (অশোক চক্রবর্তী) আমায় বলেছেন আগামীতে মন্দিরের মধ্যে এই উৎসবকে আর ধরে রাখা যাবে না।”
ঠাকুর শ্রী শ্রী অনুকূল চন্দ্র ১৮৮৮ খৃষ্টাব্দের ১৪ সেপ্টেম্বর জন্ম গ্রহণ করেন।পেশায় উনি একজন হ্যোমিওপ্যাথি ডাক্তার ছিলেন। তিনি তাঁর সামাজিক আন্দোলন “সৎসঙ্গ” শুরু করেছিলেন হিমাতিপুর, পাবনা, বাংলাদেশে এবং তখন থেকেই উনার ভক্তরা উনাকে ‘পুরুষোত্তম’ বলে সম্ভাষণ করতে শুরু করে। ১৯৪৬ সালের দোসরা সেপ্টেম্বর, দেশভাগের ঠিক আগ মুহূর্তে ঠাকুর উনার জন্মস্থান পাবনা ছেড়ে দেওগড়ে স্থানান্তরিত হতে বাধ্য হলেন। তারপর উনি সৎসঙ্গকে “ ইন্ডিয়ান সোসাইটিস রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্ট ১৮৬০” অধীনে নথিভূক্ত করেন।১৯৬৯ সালের ২৭ জানুয়ারি ঠাকুর দেহত্যাগ করেন। বর্তমানে উনার নাতি দাদা অশোক চক্রবর্তী সৎসঙ্গের দেখাশোনার দায়িত্বে রয়েছেন।
Comments are closed.