"আমার মা আমার সমস্ত শক্তির গোপন রহস্য": বীর রাধা শেরপা
ইতিমধ্যেই আমরা প্রকাশ করেছি যে বীর রাধা শেরপাকে জি টিভির রবিবারের শো ডান্স ইন্ডিয়া ডান্স (ডিআইডি) লিটল মাস্টার্সের একজন অধিনায়ক (ক্যাপ্টেন) হিসেবে দেখা যাবে। মুম্বাইয়ে ‘শো-লঞ্চ ইভেন্টে’র সময় আমাদের সংবাদদাতা বীরকে ধরতে সমর্থ হন এবং তার সঙ্গে একান্তভাবে কথা বলেন।
বরাক উপত্যকার এই তরুণ নৃত্যশিল্পী ডিআইডি লিটল মাস্টার্সের একজন অধিনায়ক ( স্কিপার) হিসেবে ফিরে আসার জন্য খুবই খুশি। “অধিনায়ক হিসেবে ফিরে আসায় আমি খুবই খুশি, যেখানে আমি একজন প্রতিযোগী হিসেবে একদিন নির্বাচিত হইনি, সেখানে এটি আমার জন্য একটি খুবই বড় ব্যাপার। এখনও আমার মনে আছে, যে দিন আমি ডান্স ইন্ডিয়া ডান্স লিটল মাস্টার্সে অ্যডিশন রাউন্ডে ডান্স করেছিলাম , সেদিন মর্জি স্যার আমাকে কঠোর পরিশ্রম করে আবার ফিরে আসার কথা বলেছিলেন “। বীর রাধা সেদিনের কথা স্মরণ করে খুশি ব্যক্ত করেন।
বীর ইতিমধ্যেই কঠোর পরিশ্রমের ফলস্বরূপ দুটি ডান্স রিয়েলিটি শো জিতেছেন এবং এটি তার তৃতীয় রিয়েলিটি শো । কিন্তু তিনি অবশ্য জি-টিভির চ্যালেঞ্জকে হালকাভাবে গ্রহণ করছেন না, “আমি এই সুযোগ অবশ্যই কাজে লাগাব, কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে আমি আমার দলের বাচ্চাদেরকেও কঠোর পরিশ্রম করতে বাধ্য করব এবং আশা করি ‘বীর কে বাহুবলি’ প্রতিযোগিতায় জয়ী হবে “, নৃ্ত্যশিল্পী বলেন। এখানে উল্লেখ্য,বীরের দলের নাম “বীর কে বাহুবলি”।
বীররাধা ছাড়াও তনয় মালহোত্রা, বৈষ্ণবী পাতিল এবং জিতুমনি কলিতা তাদের নিজ নিজ দলকে নেতৃত্ব দেবেন। বাচ্চাদের চারটি দলে ভাগ করা হবে এবং তারা একে অপরের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে।
নৃত্যশিল্পী জানান বিভিন্ন মানুষ প্রায়ই তার প্রতি সহানুভূতিশীল হন। “অনেক সময় মানুষ আমার কাছে আসেন এবং বলেন যে আপনি এত ছোট্ট শহর থেকে এসেছেন এবং এতদূর এগিয়ে গিয়েছেন … তাদেরকে আমি সবসময় বলি যে শিলচর আকারের দিক দিয়ে মুম্বাই বা দিল্লি বা অন্য কোনো বড় শহর থেকে তুলনায় ছোট হতে পারে, কিন্তু শিলচরের মানুষের হৃদয় সবচেয়ে বড়। আমি বিশ্বাস করি যে শিলচরে বিশাল সব প্রতিভা রয়েছে, কিন্তু অভাব রয়েছে সুযোগের “। তিনি যোগ করেন।
বীর মনে করেন এটা তার জন্য প্রারম্ভ মাত্র। ” কিছুটা হলেও আমি যে সাফল্য পেয়েছি তা কয়েকজন মানুষের কাছ থেকে প্রচুর সহায়তার কারণে সম্ভব হয়েছে, প্রথমেই আছেন আমার মা, যাকে আমি সবচেয়ে ভালোবাসি এবং তিনি আমার সমস্ত শক্তির গোপন রহস্য। তারপর রয়েছেন রেমো (ডিসোজা) স্যার এবং পুনিত (পাঠক) স্যার …। কিন্তু আমার বিশ্বাস এটা আমার জন্য শুধুমাত্র শুরু, আমি আরো অনেক দূর যেতে চাই এবং আন্তর্জাতিক চ্যাম্পিয়নশিপ জয় করতে চাই। এরজন্য কিছুটা সময় লাগবে জানি, আর সেই উঁচুতে পৌঁছানোর জন্য আমাকে কঠিন পরিশ্রমও করতে হবে, কিন্তু যতই পরিশ্রম করতে হোক, এটাই আমি করতে চাই জীবনে, ” তিনি জানান।
বরাক উপত্যকায় অনেক গুণীজন রয়েছেন যারা সুযোগের অভাবের কারণে তাদের স্বপ্ন দেখা বন্ধ করে দেন, বীর এই অঞ্চলের জনগণের জন্য নতুন পৃথিবী খুলে দিতে চান, “একবার আমি কিছু একটা করে উঠতে পারি বা আমার কাজে সফল হয়ে উঠতে পারি, তারপর আমি শিলচরের মানুষকে প্রশিক্ষণ দেব। আমার জন্মস্থান থেকে সবাই যাতে নিজেদের প্রতিভা প্রকাশের সুযোগ পান, তাদের প্রতিভা প্রদর্শন করতে পারেন সেটা আমি নিশ্চিত করব।আমার ইতিবাচক শক্তি এবং অভিজ্ঞতাগুলোর মাধ্যমে আমি তাদের সাহায্য করব। আমি চাই, শিলচর থেকে আরও সাফল্যের কাহিনী বেরিয়ে আসুক। ” তিনি তার আশা ব্যক্ত করেন।
এগুলো হচ্ছে তার পরিকল্পনা … আরও সাফল্যের কাহিনী্র অংশীদার আমরা হব কি না তা শুধুমাত্র সময়ই আমাদের বলতে পারবে। কিন্তু বীর একটি সফল কাহিনী যা বরাক উপত্যকার কেউ কখনও ভুলবে না …
Comments are closed.