শিক্ষা বিভাগের ক্যালেন্ডার থেকে রবীন্দ্রজয়ন্তীকে বাদ দেওয়ার প্রতিবাদে শিক্ষামন্ত্রীর দ্বারস্থ সম্মিলিত মঞ্চ
২০১৬-১৭ সালের শিক্ষাবর্ষের ক্যালেন্ডার নিয়ে গত বছর বরাক উপত্যকা সহ রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ দেখা দিয়েছিল। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন ২৫শে বৈশাখ দিনটি সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিনগুলো সরকারি বিদ্যালয়ে ছুটির বা দিনগুলো উদযাপনের তালিকা থেকে বাদ দিয়েছিল রাজ্য সরকারের শিক্ষা দপ্তর। পরিস্থিতির চাপে সুর নরম করলেও এই বছরের ক্যালেন্ডারে আবারও একই ভুল করা হয়। পাশাপাশি এবার ৭মে (২৩ বৈশাখ) থেকে সেবা বোর্ডের টানা ইউনিট টেস্ট রাখা হয়েছে, যার মধ্যে ৯মে অর্থাৎ ২৫শে বৈশাখও রয়েছে। এর সরাসরি প্রতিবাদ জানিয়ে শিক্ষা দপ্তরের দ্বারস্থ হয়েছে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক মঞ্চ। মঞ্চের দাবি, কবিগুরুর জন্মদিনকে উপেক্ষা করা চলবেনা, দিনটিকে পালনের জন্য বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তথা ছাত্রছাত্রীদের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দিতে হবে এবং আগামীতে শিক্ষাবর্ষের ক্যালেন্ডারে এধরনের বিভ্রান্তি চলবে না।
বৃহস্পতিবার শিলচরে এক সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক মঞ্চের সদস্যরা জানান, রাজ্যের নবনিযুক্ত শিক্ষামন্ত্রী সিদ্ধার্থ ভট্টাচার্যের কাছে এক স্মারকপত্র প্রদান করেছেন তারা। মঞ্চের পক্ষে অজয় রায় বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তি। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে সারা দেশে ছাত্রছাত্রীদের রবীন্দ্রজয়ন্তী পালন করার আহবান জানিয়েছেন। তবে রাজ্য সরকার এর পরিপন্থী পদক্ষেপ নিচ্ছেন। আমরা এর বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলে ভবিষ্যতে আন্দোলনও করবো।
পাশাপাশি তারা জানান, ৬ মে থেকে ২৭ মে পর্যন্ত রবীন্দ্রজয়ন্তী, ভাষা শহিদ দিবস এবং নজরুল-সুকান্ত জয়ন্তী পালন করবে মঞ্চ। এর অংশ হিসেবে ৬ মে সন্ধ্যা ৫.৩০টায় গোলদিঘি মলে ‘রবিঠাকুরকে ঘিরে যৌবনের আড্ডা’, ৭ মে সকাল ১০টায় জেলা গ্রন্থাগার প্রেক্ষাগৃহে ‘কবি প্রণাম অনুষ্ঠান’ শীর্ষক নাচ,গান ও আবৃত্তি এবং সন্ধ্যায় রবীন্দ্রসংগীত অনুষ্ঠান, ৮ মে ‘রবীন্দ্র নাটক বা নাটকের অংশ বিশেষ’ বিষয়ে অনুষ্ঠান, ৯ মে সকাল ৭টায় কবি প্রণাম, ১০টায় বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে অনুষ্ঠান, ১১ এবং ১২ মে ‘হৃদয়ে রবীন্দ্রনাথ-চেতনায় উনিশ’ শীর্ষক ভ্রাম্যমান অনুষ্ঠান, ১৫ মে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক মঞ্চের ব্যবস্থাপনায় শহরের বিভিন্ন বিদ্যালয়ে ভ্রাম্যমান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।
‘উনিশে মে’ ভাষা শহিদ দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে ১৭ মে বিকাল ৩টায় রাঙ্গিরখাড়ি থেকে ‘১৯ এর পথচলা’, ১৮ মে দুপুর ১২টা থেকে গান্ধীবাগের সামনে আলপনা, ১৯ মে সকাল ৬টায় প্রভাতফেরীর পর শিলচর রেল স্টেশনে এবং শ্মশানঘাটে শহিদদের মাল্যদান সহ সারাদিন ব্যাপী অনুষ্ঠান রয়েছে।
নজরুল-সুকান্ত জয়ন্তী পালন উপলক্ষে ২৭ মে গান্ধী ভবনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে মঞ্চের তরফে।
সাংবাদিক সম্মেলনে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক মঞ্চের বিভিন্ন সদস্যরা অংশ নেন।
Comments are closed.