এনআরসি হিন্দুদের জন্য অভিশাপ, মুসলমানদের জন্য আশীর্বাদ: দিলীপ পাল
‘এনআরসি হিন্দুদের জন্য অভিশাপ এবং একই সঙ্গে মুসলমানদের জন্য আশীর্বাদ।’ রোববার নিজের বাড়িতে সাংবাদিক সম্মেলনে এমন মতামত ব্যক্ত করলেন শিলচরের বিধায়ক দিলীপ কুমার পাল।
বিধায়ক সাংবাদিকদের জানান, অন্তত এক কোটি অবৈধ বাংলাদেশী মুসলমান ভারতে রয়েছেন, যাদের ৯৫ শতাংশের নাম এনআরসি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। আবার ১৩ লক্ষ ৮৫ হাজার হিন্দু ধর্মালম্বীদের নাম নাগরিক পঞ্জি থেকে বাদ পড়েছে।
এই হিসেব বেসরকারি- উল্লেখ করে দিলীপ পাল বলেন, জাতিগত-ভাষাগত-ধর্মগত কোন হিসাব ওরা দেবে না, এনিয়ে লুকোচুরির কোনো কারণ ছিল না।
ভারতের মুসলমানদের বিরুদ্ধে তার কোন ক্ষোভ নেই জানিয়ে বিধায়ক বলেন, ভারতবর্ষে হিন্দুদের এমন দুর্গতি মেনে নেওয়া যায় না; এটা চূড়ান্তভাবে অশুদ্ধ এনআরসি। নিজের ক্ষোভ ব্যক্ত করে বিধায়ক বলেন, “আমরা চাই ধৈর্যচ্যুতি ঘটার আগেই নাগরিকত্ব বিল পাস করুক সরকার। এই উদ্দেশ্যে ২০১৫ সালের ৭ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে যে নোটিফিকেশন জারি করা হয়েছিল আসামের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য করে হিন্দুদের সুরক্ষা দেওয়া হোক।” এখনই উপযুক্ত সময় নাগরিকত্ব বিল পাস করার । ৩৭০ অনুচ্ছেদ বা তিন তালাক প্রথা বিলুপ্তির ক্ষেত্রে সরকার যে শক্ত অবস্থান নিয়েছিল, নাগরিকত্ব বিল পাসের ক্ষেত্রেও তেমনি শক্ত অবস্থান গ্রহণ করুক কেন্দ্র।
বিধায়ক বলেন, এনআরসির ক্ষেত্রে রাজ্য সমন্বয়ক প্রতিক হাজেলা যে ভূমিকা পালন করেছেন তাতে অনেকেই তাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছেন। এই হাজেলা কারো অঙ্গুলিহেলনে হিন্দু বাঙ্গালীদের বিপদে ফেলার চেষ্টা করেছেন। সুপ্রিম কোর্ট এনআরসির ক্ষেত্রে যে ৫টি নথিকে মান্যতা দিয়েছিল হঠাৎ করে হাজেলা তা উপেক্ষা করেছেন। রিফুজি সার্টিফিকেট এবং সিটিজেনশিপ সার্টিফিকেট কে নাগরিকত্বের প্রামাণ্য দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। এসব নথি হিন্দুদের কাছেই আছে, বলেন বিধায়ক। এই নথি প্রামাণ্য দলিল হিসেবে গ্রহণ না করায় হিন্দু বাঙালিরা বিপদের সম্মুখীন হয়েছেন।
ফরেনার্স ট্রিবুনালে যাওয়ার কথা বলা হচ্ছে, কিন্তু গরিব হিন্দু বাঙালিরা কি করে ট্রাইব্যুনালে মামলা লড়বে, এমন সংগতি তাদের কোথায়। তাই নাগরিকত্ব বিল এনে তাদেরকে অবিলম্বে ভারতবর্ষের নাগরিক হিসেবে ঘোষণা করা হোক।
Comments are closed.