তৃণমূল দলকে ফিরিয়ে দেওয়া হলো, এবার আসছেন পশ্চিমবঙ্গের বুদ্ধিজীবীরা
আসামের বাঙালিদের হালহকিকত জানতে এবার আসছেন পশ্চিমবঙ্গ থেকে বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবীরা। জাতীয় নাগরিক পঞ্জীর খসড়া-ছুট ৪০ লক্ষ বাঙালির পাশে এসে দাঁড়াবেন বাংলার এই বুদ্ধিজীবীরা। গত শুক্রবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এমন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তারা। নাগরিক পঞ্জি নিয়ে বাঙালি হেনস্থার প্রতিবাদ জানাতে খুব শীঘ্রই অসমে এসে কোন রকম ‘ভয়-ভীতির শিকার না হয়ে’ প্রতিবাদ জানাবেন তারা।
সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিভাস চক্রবর্তী, সুবোধ সরকার, শুভাপ্রসন্ন, আবুল বাশার, নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী, প্রতুল মুখোপাধ্যায় প্রমুখ। বিভাস চক্রবর্তী বলেন, “দীর্ঘদিন এদেশে থাকার পরেও কেন দেশের নাগরিকদের ভয় দেখানো হবে, কেন বলা হবে যে তাদের তাড়িয়ে দেওয়া হতে পারে। এমন তো হিটলারের জার্মানিতে হতো, এখন আমেরিকায় হচ্ছে। আমরা নিজেরা কবে বাংলাদেশ থেকে এখানে চলে এসেছি। সেই সময়ে ভারতের নাগরিকত্বের সার্টিফিকেট বের করেছিলাম, কিন্তু এখন তো সেসব দেখাতে পারবো না। আমার ভোটার কার্ড, আধার কার্ড আছে, কিন্তু এখন এই বয়সে এসে বার্থ সার্টিফিকেট কোথায় পাব! আমরা শঙ্কিত, আমাদের কি তাহলে দেশ থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হবে?”
কবি সুবোধ সরকার বলেন, “আজ পর্যন্ত কোনদিন ‘জল’ আর ‘পানি’ কে আলাদা করা যায়নি, আর যাবেও না। টিভিতে নেতারা বলছেন, গলাধাক্কা দিয়ে বের করে দেবেন, কত বড় সাহস, এটা কি তাদের বাপের জমিদারি?”
সাহিত্যিক আবুল বাশার শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের উক্তি উল্লেখ করে বলেন, “আর কতবার বাস্তুহারা হতে হবে – এই কথাটা শীর্ষেন্দুদার মতো প্রবীণ সাহিত্যিক বলেছেন। কতটা যন্ত্রনা থাকলে এ কথা বলা যায়। সরকার মানুষের অন্তরের কোন যন্ত্রণায় আঘাত করছে, সেটা একবার ভেবে দেখুন।”
সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন চিত্রশিল্পী শুভাপ্রসন্ন, নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী, প্রতুল মুখোপাধ্যায়রা। তাদের মুখেও ছিল সরকারের পদক্ষেপ নিয়ে কঠোর সমালোচনা। পাশাপাশি রাজনৈতিক নেত্রী হিসেবে একমাত্র মমতা ব্যানার্জি যে একাই লড়াই লড়ছেন, তাও এক বাক্যে প্রায় সকলে স্বীকার করেন।
তবে ঠিক কবে নাগাদ এই বুদ্ধিজীবীরা অসমে আসছেন তার দিনক্ষণ তারা জানাননি। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আসামের ৪০ লক্ষ মানুষের নাম না থাকার ইস্যুকে কেন্দ্র করে সাধারণ মানুষের সঙ্গে দেখা করার কর্মসূচি নিয়ে শিলচর এসেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের আট সদস্যের এক প্রতিনিধি দল। কিন্তু তাদেরকে কুম্বীরগ্রাম বিমানবন্দরে আটকে রাখা হয়েছিল। প্রায় ১৭ ঘন্টা বিমানবন্দরে আটক থাকার পর তৃণমূলের সদস্যের প্রতিনিধি দল কে ফিরে যেতে হয়েছিল কলকাতা এবং দিল্লিতে। এবার দেখা যাক, কি পদক্ষেপ নেয় প্রশাসন।
Comments are closed.