Also read in

এন আর সি: ভয়ের কিছু নেই, প্রকৃত ভারতীয়রা সুবিচার পাবেন, বললেন পুলিশ সুপার

 

উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার প্রয়োজন নেই। প্রকৃত ভারতীয় নাগরিকদের নাম উঠবে এন আর সির দ্বিতীয় খসড়া তালিকায়। কারোর সঙ্গে অবিচার করা হবে না। ন্যায় বিচার পাইয়ে দিতে বদ্ধ পরিকর প্রশাসন। সোমবার শিলচরে পুলিশ রিজার্ভের দুর্গামন্ডপে সদর পুলিশ ও গ্রামরক্ষী বাহিনীর উদ্যোগে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি অর্থাৎ এন আর সি বিষয়ে আয়োজিত এক সচেতনতা সভায় এ মন্তব্য করেছেন কাছাড়ের পুলিশ সুপার রাকেশ রৌশন।

কার্যতঃ জেলাজুড়ে এনআরসি নিয়ে অধিকাংশ লোকের মধ্যে নানা প্রশ্ন ঘোরপাক খাচ্ছে। দ্বিতীয় খসড়া তালিকায় নাম উঠবে কি না – সে নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। তার মধ্যে রয়েছে নানা অপপ্রচার। বিশেষভাবে সোশ্যাল মিডিয়াতে। এধরনের অপপ্রচারের কথা কার্যতঃ পরোক্ষে স্বীকার করেছেন এস পি রাকেশ রৌশন। কাজেই সমাজে অশান্তি সৃষ্টিকারী ও অপপ্রচারে মদত দেওয়া লোকদের থেকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান এসপি। তিনি বলেন, বিভ্রান্ত ও ভীত হওয়ার প্রয়োজন নেই। প্রকৃত ভারতীয়দের নাম দ্বিতীয় খসড়া তালিকায় উঠবেই। পাশাপাশি প্রয়োজনীয় নথি থাকা সত্ত্বেও এনআরসির দ্বিতীয় খসড়া তালিকায় নাম না উঠলেও ভয়ের কিছু নেই। আরো এক মাস সময় থাকছে, অর্থাৎ ৩১ জুলাই পর্যন্ত। এব্যাপারে নাগরিকদের সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন এসপি। প্রশাসন ও আদালতের ওপর আস্থা রাখারও আর্জি জানান তিনি।

পুলিশ সুপারের দাবি, গত ৩১ ডিসেম্বর থেকে এনআরসির কাজ শুরু হওয়া থেকে এখন অব্দি জেলায় কোন ধরনের অঘটন বা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। যা জেলাবাসীর জন্য গর্বের বিষয়। গর্ব বরাকেরও। আর এভাবেই এনআরসির মাধ্যমে সমৃদ্ধ বরাক তথা শক্তিশালী অসম গড়ার প্রক্রিয়া সার্থক রূপ নেবে বলে মত ব্যক্ত করেন এস পি।

ভুল ডাটা প্রসঙ্গে বলেন, যারা ইচ্ছাকৃতভাবে ভুয়া নথি জমা দিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আগামী ৩০ জুন এনআরসির দ্বিতীয় খসড়া প্রকাশের পর জেলায় আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ইতিমধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান এসপি। প্রতিটি সেবা কেন্দ্রে ৪ থেকে ৫ জন ভলান্টিয়ার ছাড়াও নিরাপত্তাবাহিনীর নজরদারি থাকবে। সবাই যাতে শান্তিতে প্রকাশিত তালিকা দেখতে পারে- সে ব্যাপারেও উপযুক্ত ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন। তবে এব্যাপারে নিজ নিজ এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সর্বস্তরের মানুষের প্রতি সহযোগিতার আহ্বান জানান পুলিশ সুপার।

এদিনের সভার শুরুতে উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করেন সদর থানার অধীন গ্রামরক্ষী বাহিনীর সিও সাহানুরাজ। সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সাময়িক প্রসঙ্গ পত্রিকার সম্পাদক তৈমুর রাজা চৌধুরী। তিনি বলেন, এনআরসির রাজ্যিক কো-অর্ডিনেটর প্রতীক হাজেলার বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন নির্দেশের ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। নির্দেশ জারির পর ফের বাতিল করার বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন জেলাবাসী।

সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন গ্রামরক্ষী বাহিনীর ডেপুটি উপদেষ্টা আশিস হালদার, ফুড গ্রেনস মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অসিত দত্ত, শুভ্রাংশু শেখর ভট্টাচার্য, পুর কমিশনার অতনু ভট্টাচার্য্য, সজল বণিক, মৃদুল মজুমদার প্রমুখ। ষাটের দশকের নথিপত্র থাকা সত্ত্বেও প্রথম খসড়া তালিকায় নাম না উঠা সহ কিছু কিছু সেবা কেন্দ্রে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের অসহযোগিতা ও হয়রানির শিকার হওয়ার ঘটনাও তুলে ধরেন অনেক বক্তা। তবে চাকা বনধের ফলে এদিনের সভায় নাগরিকদের উপস্থিতি কম ছিল। পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুলিশ সুপার ছাড়া শীর্ষ স্থানীয় কোনও আধিকারিক ছিলেন না।

Comments are closed.