
'বিজেপিতে কাজের পরিবেশ রয়েছে', তাই নির্বাচনের মুখে কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে এলেন সিরাজুল আলম লস্কর
নির্বাচনী প্রচার তুঙ্গে, এই মুহূর্তে জেলা কংগ্রেসে বড়োসড়ো ধস নামিয়ে বিজেপিতে যোগদান করলেন জেলা সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল আলম লস্কর। আজ বিজেপি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রাজ্য বিজেপি সভাপতি রঞ্জিত দাস, জেলা বিজেপি সভাপতি কৌশিক রাই প্রমূখ নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে বিজেপি দলে যোগদান করেন তিনি। অনুষ্ঠানে তপন কুমার দে ও বিজেপিতে যোগদান করেন।
এনএসইউআই’র প্রাক্তন সভাপতি এবং বর্তমান জেলা কংগ্রেসের প্রশাসনিক সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল আলম লস্কর বিজেপি দলে আনুষ্ঠানিক যোগদানের পর বলেন, “কংগ্রেস নেতৃত্বের উপর সাধারণ কর্মীরা খুবই মনোক্ষুন্ন। ভারতীয় জনতা পার্টিতে কাজের পরিবেশ রয়েছে, তাই আমি অনুপ্রাণিত হয়ে এই দলে যোগদান করেছি। যদিও বিজেপিকে সাম্প্রদায়িক দল হিসেবে তকমা দেওয়া হয়, কিন্তু উন্নয়নের ক্ষেত্রে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে উন্নয়নই এই দলের মূলমন্ত্র । তাই, আমি এই দলের প্রতি অনুপ্রাণিত হয়ে এই দলের একনিষ্ঠ কর্মী হওয়ার, সৈনিক হওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি।” কংগ্রেস দলকে একহাত নিয়ে সিরাজুল বলেন, কংগ্রেস আমলে অনেক শিলান্যাস হয়েছিল, কাজ কবে শেষ হবে, তা ছিল অনিশ্চিত। বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর সেই কাজগুলো সঠিকভাবে রূপায়িত হয়েছে। তিনি বলেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনে তিনি যেখানে যেখানে কাজ করেছেন, সেখানে একশ শতাংশ সফলতা এসেছে। তাই বিজেপি দলকে সাংগঠনিকভাবে সবল করতে তিনি প্রয়াস চালিয়ে যাবেন।
অনুষ্ঠানে তাদের দুজনকে স্বাগত জানিয়ে বিজেপি দলের রাজ্য সভাপতি রঞ্জিত দাস বলেন, “আমরা সবাইকে বলি প্রথমে দেশের জন্য, তারপর দলের জন্য তারপর নিজের জন্য কাজ করা উচিত।” তাই, তাদের দুজনকেও দেশের জন্য কাজ করার জন্য আহ্বান জানান তিনি। স্বাধীনতার পরে বরাক উপত্যকায় যতটুক কাজ হয়েছে, সেই তুলনায় গত পাঁচ বছরে অনেক বেশি কাজ হয়েছে, বলেন তিনি। এখানে প্রায়ই এরকম হচ্ছে, কংগ্রেস সরকার গঠন করলে বিজেপি এমপি হচ্ছেন এবং বিজেপি সরকার গঠন করলে কংগ্রেস এমপি প্রতিনিধিত্ব করছেন সংসদে। তাই, এবারে এই ভুল না করে বিজেপি প্রতিনিধিকে সংসদে পাঠাবার আবেদন রাখেন তিনি। কারণ নরেন্দ্র মোদী নিশ্চিতভাবেই আবার প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন, কেউ এটা রুখতে পারবে না। প্রসঙ্গান্তরে গিয়ে রঞ্জিত দাস বলেন, যখন ভুবনেশ্বর কলিতা এবং তরুণ গগৈ নাগরিকত্ব বিলের বিরোধিতা করেছিলেন তখন সুস্মিতা দেবের কংগ্রেস দল থেকে পদত্যাগ করা উচিত ছিল।
কাগজ কল প্রসঙ্গে রঞ্জিত দাস বলেন, “যেহেতু এটা এখন বিচারাধীন রয়েছে, তাই আমরা এগোতে পারছি না। পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ পদ্ধতিতে এটাকে চালু করার চেষ্টা করেছিলেন বাবুল সুপ্রিয়। কিন্তু এখন বিচার ব্যবস্থার এক্তিয়ারে চলে যাওয়ায় এগোনো যাচ্ছে না। কাগজ কলের কর্মচারীদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আমাদের আত্মার যোগাযোগ রয়েছে; আমরা নিশ্চিতভাবেই এটা খুলব – যে পদ্ধতিতেই হোক। কংগ্রেস দল কাগজ কল দুটোর মৃত্যুঘন্টা বাজিয়ে ছিল। কংগ্রেস দল পাপ করেছে, তবে উত্তরাধিকার সরকার হিসেবে এসে আমরা এর প্রায়শ্চিত্ত করব।”
অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে সিরাজুল আলম সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। এখানে উল্লেখ্য বর্ডার অঞ্চলে সংখ্যালঘুদের মধ্যে সিরাজুল আলম লস্করের বেশ প্রভাব রয়েছে।
Comments are closed.