Also read in

অরুণাচলকে আটকে দিল উজ্জীবিত স্পোর্টিং, সুপার ডিভিশনের সেরা ফুটবল উপহার দিল সুবীর দে-র ছেলেরা

অপরাজিত অরুণাচল এস এস কে আটকে দিল শিলচর স্পোর্টিং ক্লাব। ‌ আর একটু খুলে বললে, রামানুজ গুপ্ত সুপার ডিভিশন ফুটবলে এই প্রথম পয়েন্ট ভাগাভাগি করতে বাধ্য হল অরুণাচল। সৌজন্যে, ক্রমশই উন্নতির পথে থাকা স্পোর্টিংয়ের দুরন্ত ফুটবল। বৃহস্পতিবার অরুণাচল ও স্পোর্টিংয়ের লড়াই ১-১ গোলে শেষ হয়। চলতি সুপার ডিভিশন ফুটবলে এই প্রথম জয় ছাড়া মাঠ ছাড়লো অরুণাচল। সুপার ফোরে উভয় দলের এটা ছিল দ্বিতীয় ম্যাচ। একটি করে জয় ও ড্র খেলায় দু দলের পয়েন্ট ৪। বাকি এক ম্যাচ।

এখন পর্যন্ত সুপার ডিভিশনে অরুণাচলের বিজয়রথ ছুটছিল। তবে এদিন এই রথের গতি অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছে স্পোর্টিং। এই ম্যাচের আগে ও অরুণাচলের সঙ্গে বাকি দলগুলোর মধ্যে বিরাট পার্থক্য মনে হচ্ছিল। স্পোর্টিং তফাতটা অনেকটাই কমিয়ে এনেছে। বরং সত্যি কথা বললে বৃহস্পতিবার এর লড়াই দেখার পর উভয় দলকেই এক বিন্দুতে মনে হচ্ছে। পার্থক্য শুধু একটা জায়গাতেই, ফিনিশিং স্কিলের। অথচ এই স্পোর্টিং দলটাকে লীগে প্রথম সাক্ষাতে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল অরুণাচল। সেই দিক থেকে বিচার করলে অনেকটা পথ এগিয়ে এসেছে স্পোর্টিং।

এদিন প্রথমার্ধের পুরোটাই ডমিনেট করেছে স্পোর্টিং। কোচ হিসাবে সুবীর দে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই দলটার চেহারা পাল্টে গেছে। কয়েক জন খেলোয়াড়ের পজিশনে রদবদল করায় স্পোর্টিংকে আগের তুলনায় অনেকটাই ব্যালেন্স দল মনে হচ্ছে। তবে আক্রমণভাগের শনির দশা যেন কাটতেই চাইছে না। পোড়-খাওয়া কোচ সুবীর দে যদি এই সমস্যার সমাধান করে নিতে পারেন তাহলে কিন্তু স্পোর্টিং কে আটকানো খুবই কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। অরুণাচলের বিরুদ্ধেই এটা প্রমাণ হয়ে গেছে।

উল্টোদিকে, টানা জয়ের মধ্যে থাকায় এতদিন অরুণাচলের ফাঁকফোকর গুলো চোখে পড়েনি। তবে অরুণাচল দলটা তেও যে ফাঁকফোকর রয়েছে, সেটা আজ স্পোর্টিং চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। আগের ম্যাচ গুলির মতো এদিনও অরুণাচলকে উতরে দিলেন গোলমেশিন রাকেশ দাস। ‌ না হলে কিন্তু তাদের কপালে দুঃখ ছিল। এই একটা জায়গাতেই টুর্নামেন্টের বাকি দলগুলো থেকে এগিয়ে অরুণাচল। ‌ আক্রমণভাগে রাকেশের মত দুরন্ত একজন স্ট্রাইকার থাকায় বারবার উতরে যাচ্ছে দলটা।
প্রথম ৪০ মিনিট ডমিনেট করার পরও গোল পাচ্ছিল না স্পোর্টিং। মনে হচ্ছিল এদিনও বুঝি আক্রমণভাগের শনির দশা তারা কাটিয়ে উঠতে পারবেনা। অবশেষে ৪২ মিনিটে জিহ্বার পাস থেকে গোল করে স্পোর্টিং কে ১-০ গোলে এগিয়ে দেন জেরি পুলামতে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই সমতায় ফেরার জন্য মরিয়া চেষ্টা চালায় অরুণাচল। টানা আক্রমণে কিছুটা ডিফেন্সিভ হয়ে পরে স্পোর্টিং। চলতি সুপার ডিভিশনে বারবার দেখা গেছে অরুণাচলকে একটু সুযোগ দিলেই তারা মাথায় চড়ে বসে। ডিফেন্সিভ ফুটবল খেলে প্রতিপক্ষকে এই সুযোগটাই করে দিল স্পোর্টিং। ‌ অরুণাচলের আক্রমণভাগে যে কোয়ালিটি রয়েছে তাতে এই সুযোগ লুফে নেওয়া ছিল সময়ের অপেক্ষা মাত্র। সেটাই হলো। ৬১ মিনিটে গোল করে দলকে সমতায় ফেরান রাকেশ দাস (১-১)।
এই গোলের সঙ্গেই হারানো আত্মবিশ্বাস ফিরে পায় অরুণাচল। ‌ এই সময়ে তাদের মাঝেমাঠকে ও বেশ আত্মবিশ্বাসী মনে হয়েছে। তবে কাউন্টার এটাকে স্পোর্টিং বেশ কয়েকটি ভালো আক্রমণ গড়ে তুলে। তবে ফিনিশিং স্কিল এর অভাবে তারা আর গোল করতে পারেনি। ‌৮৮ মিনিটে পুরো পয়েন্ট আদায় করার সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করেন স্পোর্টিংয়ের জিহ্বা। অরুণাচলের গোলকিপার কে সামনে একা পেয়েও বাইরে মেরে বসেন তিনি। এদিন টুর্নামেন্টের প্রথমবারের মতো অরুণাচলকে বেশ চাপে মনে হয়েছে। এর জন্য কৃতিত্ব দেওয়া উচিত স্পোর্টিংয়ের কোচ সুবীর দে-কে। তিনি যখন দায়িত্ব নিয়েছিলেন তখন স্পোর্টিং একটা ছন্নছাড়া দল। সেই ছন্নছাড়া দলটাকে তিনি একজোট করে তুলেছেন। অন্যদিকে, অরুণাচলের জন্য স্পোর্টিং ম্যাচ অনেক কিছু শিক্ষা দিয়ে গেল। যা আগামী ম্যাচগুলোতে তাদের খুব কাজ দেবে।

Comments are closed.

error: Content is protected !!