Also read in

পঞ্চায়েত ভোটে  হাইলাকান্দিতে কংগ্রেসের ভরাডুবি: রাহুল, গৌতমকে  দায়ী করলেন একাংশ  কংগ্রেস নেতা

 

পঞ্চায়েত ভোট শেষ হতেই ফের সরগরম হয়ে উঠেছে হাইলাকান্দির কংগ্রেস রাজনীতি।হাইলাকান্দিতে কংগ্রেসের ভরাডুবির জন্য  পিতা গৌতম রায় আর পুত্র রাহুল রায়কে সরাসরি দায়ী করলেন হাইলাকান্দি জেলা কংগ্রেসের একাংশ নেতা।।

সোমবার হাইলাকান্দি জেলা কংগ্রেস ভবনে  নবনিযুক্ত কার্যকরী সভাপতি জয়নাল উদ্দিন লস্করের উপস্থিতিতে এক সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করে   রাহুল, গৌতম  রায়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভ  প্রকাশ করেন জেলা কংগ্রেসের সহ সভাপতি  নুরুল হুদা চৌধুরী, প্রদেশ কংগ্রেসের সদস্য আনাম উদ্দিন লস্কর, নুরুল আমিন ,সহসভাপতি সাহাব উদ্দিন চৌধুরী, সম্পাদক রুকন উদ্দিন বড়ভুইয়া, সহসভাপতি ইশাক আলি বড়ভুইয়া,প্রাক্তন সম্পাদক সামস উদ্দিন বড়লস্কর, সম্পদক দক্ষিনা রঞ্জন চন্দ, নাসির উদ্দিন প্রমুখ।

নবনিযুক্ত কার্যকরী সভাপতি জয়নাল উদ্দিন লস্কর এদিন  কংগ্রেসের বিশিষ্ট পদাধিকারী ও কর্মীদের নিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে  বলেন, সমগ্র রাজ্যে কংগ্রেসের ভাল অবস্থান থাকা সত্বেও কংগ্রেসের দুর্গ বলে পরিচিত হাইলাকান্দি জেলায় কংগ্রেস একটি আসনও লাভ করতে পারে নি।  আর তার জন্য মূলত সাংগঠনিক দুর্বলতা ও  প্রার্থী মনোনয়নে অস্বচ্ছতা,  দলীয় কর্মীদের মতামতকে গুরুত্ব না দেওয়া, জেলা কমিটি,  ব্লক কমিটি সহ শাখা সংগঠনের    নিস্ক্রিয়তা, কংগ্রেসের অভিভাবক বলে পরিচিত প্রাক্তন মন্ত্রী গৌতম রায়ের  দলবদল নিয়ে  রটনার মোকাবিলায় তাঁর  দুর্বল অবস্থানই দায়ী।  তাছাড়া বিগত দু’বছর ধরে জেলা কংগ্রেসের নেতৃত্ব নিয়ে মতবিরোধ  মোকাবিলায়
এপিসিসি কর্তৃক গৌতম রায়ের নেতৃত্বে গঠিত
কোঅর্ডিনেশন  কমিটির  নিস্ক্রিয় ভূমিকাও অন্যতম কারণ।।  আর এসব কারণেই তৃনমূল স্তরের কংগ্রেস কর্মী সমর্থকরা বহুধাবিভক্ত হয়ে  দলকে পরাজয়ের মুখ দেখায় বলে মন্তব্য করেন কার্যকরী সভাপতি জয়নাল উদ্দিন লস্কর।।  তিনি আর ও জানান, হাইলাকান্দি জেলায় কংগ্রেসের ভরাডুবির পোস্টমর্টেম রিপোর্ট আগামীতে  এপিসিসি সভাপতি  রিপুন বরার কাছে  তুলে ধরে  সংগঠনকে ঢেলে সাজানোর
সুপারিশ করবেন।  তিনি বলেন,  লোকসভা নির্বাচনে
দলের ভরাডুবি আটকাতে এ মুহুর্তেই দলের জেলা ও ব্লক কমিটিগুলো পুনর্গঠন
করা একান্ত জরুরি হয়ে উঠেছে।  এক্ষেত্রে দলের প্রবীন সদস্যদেরকে প্রাধান্য দেওয়া দরকার।।

বৈঠকে আনাম উদ্দিন, সাহাব উদ্দিন সহ অন্যরা  পঞ্চায়েত নির্বাচনে কংগ্রেসের ভরাডুবির জন্য জেলাসভাপতি রাহুল রায়কে সরাসরি  দায়ী করেছেন। টিকেট বন্টনে রাহুল রায়ের স্বজনপোষণ আর আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে অযোগ্যদের প্রার্থী করায় সাধারণ মানুষ রাহুল রায়ের প্রার্থীদের ছুড়ে ফেলে দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন।  প্রদেশ  কংগ্রেসের সদস্য এবং প্রাক্তন জেলাপরিষদ চেয়ারম্যান আনাম উদ্দিন লস্কর ক্ষোভ  ব্যক্ত করে বলেন, ৯৫   শতাংশ সাধারণ মানুষ  কংগ্রেসমুখী হয়েছিলেন। কিন্তু অযোগ্য প্রার্থী মনোনয়নের জন্য কংগ্রেসি ভোটাররা বাধ্য হয়ে বিজেপি এ আই ইউ ডি এফকে ভোট দিয়েছেন।।সাংবাদিক সম্মেলনে আনাম উদ্দিনরা আরও বলেন, গত দুই বছর থেকে তারা  রাহুল রায়কে সরিয়ে একজন সংখ্যালঘুকে সভাপতির পদে বসানোর দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু রাজ্য কিংবা কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তাদের কথাকে গুরুত্ব না দেওয়ার জন্য নির্বাচনে  হাইলাকান্দি কংগ্রেসকে এভাবে মুখ থুবড়ে পড়তে হয়েছে। রাহুল রায়ের অযোগ্যতা, টিকেট বন্টনে দুর্নীতি, প্রাক্তন মন্ত্রী গৌতম রায়ের নীরবতা এসব কারণের জন্যই হাইলাকান্দি কংগ্রেসকে এভাবে বাজে দিন দেখতে হচ্ছে বলে মনে করেন নুরুল হুদা চৌধুরী, ইশাক আলি বড়ভুইয়া, রুকন উদ্দিন বড়ভুইয়া প্রমুখ।

এদিকে এদিন রাহুল রায়ের সমর্থক গোষ্ঠীর পক্ষে
জেলা যুবকংগ্রেস নেতা ফকরুল ইসলাম, মনিরুল ইসলাম, আলতা হুসেন বড়ভুইয়া, বাবলু লস্কর আজমল হুসেন চৌধুরী, কবির আহামেদ লস্কর, আব্দুল কালাম বড়ভুইয়া প্রমুখ  এদিন আনাম উদ্দিনদের পাল্টা    সমালোচনা করে রাহুল রায়ের নেতৃত্বে কংগ্রেস অনেক সবল হয়েছে  বলে দাবি করেন।  তিনি আরও বলেন, রাহুল রায়ের প্রতি আস্থা ব্যক্ত করে  দুই শতাধিক এ আই ইউ ডি এফ কর্মী আনুষ্ঠানিকভাবে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন।। জেলা কংগ্রেস সভাপতি রাহুল রায়  তাদেরকে দলে বরণ করেন।

Comments are closed.