Also read in

বিধায়ক দিলীপ পালের বাড়ির সামনে ধর্না কাগজকল কর্মীদের, ফোনে বেতনের সমস্যা মেটানোর আশ্বাস মুখ্যমন্ত্রীর

কাছাড় এবং নগাও কাগজ কল বহুদিন ধরে বন্ধ হয়ে আছে। বছরের পর বছর ধরে বেতন পাননি কর্মচারীরা। এখন পর্যন্ত দুই কাগজকলের মোট ৮০ জন কর্মচারী প্রাণ হারিয়েছেন। সেই ৮০ জন মৃত ব্যক্তির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এবং নিজেদের কথা সরকারের কাছে পৌঁছে দিতে গতমাসে একটি শান্তিপূর্ণ মোমবাতি মিছিল আয়োজন করেছিলেন কাগজ কল কর্মচারীরা, তবে সেটা আটকে দেয় প্রশাসন। এরপর তারা সিদ্ধান্ত নেন জনপ্রতিনিধিদের বাড়ির সামনে বসে শান্তিপূর্ণভাবে ধর্না দেবেন। সেই অনুযায়ী মঙ্গলবার সকালে বিধায়ক দিলীপ কুমার পালের বাড়ির সামনে উপস্থিত হন তারা। বিধায়ক দিলীপ কুমার পাল এটা দেখে নিজেই বেরিয়ে আসেন, চেয়ার এগিয়ে দিয়ে তাদের বসতে বলেন, তাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের সামনে বসেই মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। যদিও মুখ্যমন্ত্রী ব্যস্ত থাকায় কথা হয়নি। পরে মুখ্যমন্ত্রী দিলীপ কুমার পালকে ফোন করেন এবং কর্মচারীদের সমস্যার কথা শুনবেন বলে আশ্বাস দেন।

দিলীপ কুমার পাল এব্যাপারে বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী জানতে চেয়েছেন কাগজ কল কর্মীরা মূলত কি কি দাবি নিয়ে ধর্নায় বসেছেন। আপাতত তাদের দীর্ঘদিনের বকেয়া বেতন মিটিয়ে দেওয়া হচ্ছে আমাদের প্রথম লক্ষ্য। পরবর্তীতে কেন্দ্র সরকারের সহায়তায় কাগজ কল পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়ার ব্যাপারে পদক্ষেপ নেবেন বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী, তবে সেটা অনেক লম্বা একটি প্রক্রিয়া। যে কারণেই কাগজ কল বন্ধ হয়ে থাকুক, কর্মচারীরা যেহেতু কষ্ট পাচ্ছেন আমরা তাদের পাশে থাকতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

কাছাড় এবং নগাঁও কাগজ কলের জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটি, এইচপিসি পেপারমিল রিভাইবাল অ্যাকশন কমিটি এবং কাগজ কল কর্মীদের পরিবারের তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল তারা বরাক উপত্যকার প্রত্যেক নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির বাড়ির সামনে শান্তিপূর্ণভাবে ধর্না দেবেন। এর সূত্রপাত হয় মঙ্গলবার সকালে বিধায়ক দিলীপ কুমার পালের বাড়ির সামনে ধর্নার মাধ্যমে। তবে মুখ্যমন্ত্রীর তরফ থেকে আশ্বাস পেয়ে আপাতত তারা ধর্না স্থগিত করেন এবং বাড়ি ফিরে যান।

তারা জানিয়েছেন, প্রতিশ্রুতির সম্মান রক্ষার্থে তারা ধর্না তুলে নিয়েছেন তবে এখানে তাদের আন্দোলন শেষ হয়ে যায়নি। যদি সরকার কথা না রাখে তারা লাগাতার এভাবেই আন্দোলন করে যাবেন। এছাড়া অসমাপ্ত মোমবাতি রেলি শেষ করতে ১১ ফেব্রুয়ারি ধর্মীয় শোক মিছিলও হবে।

HPC workers stage Dharna

তারা বলেন, “কাগজ কলের ৮০ জন মৃত কর্মচারীর আত্মার শান্তির উদ্দেশ্যে ২৫ জানুয়ারি এক মোমবাতি মিছিল করা হয়েছিল। তবে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে প্রশাসন অনুমতি দেওয়ার পরেও মিছিল আটকে দিয়েছিল প্রশাসন। সেই অসমাপ্ত মিছিল পূর্ণ করার উদ্দেশ্যে ১১ ফেব্রুয়ারি আবার পথে নামছি আমরা। এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘ধর্মীয় শোক মিছিল’। দুই কাগজকল বন্ধ হওয়ার পর এখন পর্যন্ত ৬৮ জন হিন্দু এবং ১২ জন ইসলাম ধর্মাবলম্বি কর্মচারীর মৃত্যু হয়েছে। তাই এদিন শিলচর শ্মশান ঘাটে কালী মন্দিরে হিন্দুদের জন্য এবং কলেজ রোড সংলগ্ন ফজল শাহ মোকামে ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের আত্মার শান্তি কামনা করব।”

কাগজ কল কর্মচারীরা অনেকেই এদিন বিধায়কের সামনে নিজেদের নানান সমস্যা তুলে ধরেন। বিধায়ক বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের ফর্ম তাদের হাতে তুলে দেন এবং আবেদন করতে বলেন। তাদের সামনে বসেই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করার চেষ্টা করে তাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন বিধায়ক, অবশ্যই রাজনীতিবিদদের এই দিক খুব কম চোখে পড়ে।

Comments are closed.

error: Content is protected !!