Also read in

কোভিড ওয়ার্ড থেকে পালিয়ে রোগী সোজা শ্বশুরবাড়ি! শেষমেষ ধরে বেঁধে আবার আনা হলো হাসপাতালে

৫৫ বছর বয়সের স্বপন কুমার পাল করিমগঞ্জের বাসিন্দা এবং সম্প্রতি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য এসেছিলেন। তবে রবিবার ভোর রাতে হঠাৎ করেই তিনি হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান। চুপিসারে বেরিয়ে সোজা রাস্তায় চলে আসেন তিনি। সেখান থেকে ফোন করেন পরিবারের সদস্যদের। পরিবারের লোকেরা তার এই কাজে সাড়া না দেওয়ায় তিনি তাদের চোখের আড়ালে চলে যান করিমগঞ্জের ভাঙ্গা এলাকায় তার শ্বশুরবাড়িতে। এদিকে শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পক্ষ থেকে তাকে খোঁজার জন্য পুলিশের কাছে আবেদন জানানো হয়। কাছাড় এবং করিমগঞ্জ পুলিশের যৌথ প্রয়াসে শেষমেষ তাকে ফিরিয়ে আনা হয়। অ্যাম্বুলেন্সে শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনা হয় তাকে।

শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘তিনি সকালে বাথরুমে যাওয়ার কথা বলে ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে যেতে সমর্থ হন। তার শরীর আগে থেকেই দুর্বল ছিল, এই ঘটনায় আরও দুর্বল হয়ে পড়েছেন। তাকে হাসপাতালে আইসিইউ ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রাখা হয়েছে। পাশাপাশি বুঝিয়ে বলা হয়েছে, এমনটা করে তিনি নিজের এবং পরিবারের লোকেদের বিপদে ফেলেছিলেন। যেহেতু তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না, পুলিশের সাহায্য নেওয়ার জন্য একটি এজাহার দায়ের করা হয়েছিল।’

ঘটনায় অনেকগুলো প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, হাসপাতালে সুরক্ষা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিয়ে একজন রোগী কিভাবে বেরিয়ে রাস্তায় চলে গেলেন? কোভিড ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে তিনি করিমগঞ্জে নিজের বাড়ির লোকেদের ফোন করে ডেকে আনলেন, তাদের চোখেও ফাঁকি দিয়ে চলে গেলেন করিমগঞ্জের ভাঙ্গায়, এতটা সময় শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পক্ষ থেকে তাকে খোঁজার বা আটক করার মতো পর্যাপ্ত পদক্ষেপ কেন নেওয়া হয়নি? শোনা গেছে, তিনি পরিবারের লোকদের সঙ্গে একটি চায়ের দোকানে বসে আলোচনা করেছেন, এরপর হয়তো কোনও পাবলিক ট্র্যান্সপোর্ট ব্যবহার করে করিমগঞ্জ গেছেন, এতে কত ব্যক্তির শরীরে সংক্রমণ ছড়িয়ে দেওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, তার কোনও হিসেব নেই।

কেন এমনটা করলেন ৫৫ বছর বয়সের স্বপন কুমার পাল? সেটা এখনও জানা নেই তবে অনেকেই বলছেন কোভিড ওয়ার্ডে তিনি মানসিক যন্ত্রণা পেয়েছেন। এখন পর্যন্ত অনেকেই এমন অভিযোগ দিয়েছেন, ওয়ার্ডের ভিতরে নানাভাবে মানসিক এবং শারীরিক যন্ত্রণার শিকার হওয়ার কথা তারা তুলে ধরেছেন।

এমনকি রোগীর মৃত্যুর পর তার শরীরে থাকা মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি করা হয়েছে এবং এব্যাপারে মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তবে কারণ যাই হোক, শেষমেশ রোগী ওয়ার্ডে ফিরে এসেছেন এবং তিনি যাতে সুস্থ হয়ে ওঠেন এটাই কাম্য।

Comments are closed.