রাত ১টা থেকে ভোর ৪টে পর্যন্তই চলবে টিপার, স্পষ্টীকরণ জেলা প্রশাসনের
কাছাড়ের জেলা উপায়ুক্ত লায়া মাদ্দুরি বৃহস্পতিবার শিলচর শহরে টিপার ও ট্রাকসহ ভারি যানবাহন চলাচলের সময়সীমার কোনো পরিবর্তন হয়েছে বলে অস্বীকার করেন। তিনি জানান যে এই যানবাহনগুলিকে শুধু রাত একটা থেকে চারটা পর্যন্তই শহরে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, বৃহস্পতিবার শিলচরের একটি শীর্ষস্থানীয় বাংলা সংবাদপত্রে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার কাছাড় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয় এবং সেই সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী টিপার ও ভারি যানবাহনগুলোকে রাত একটার পরিবর্তে রাত এগারোটা থেকে শহরে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হবে। এই খবরটি প্রকাশিত হওয়ার পর সামাজিক মাধ্যমে বিপুল সংখ্যক জনগণ এ বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বিশেষত মিডিয়ার পক্ষ থেকে ব্যাপারটা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।
জেলাশাসক লায়া মাদ্দুরি বৃহস্পতিবার টেলিফোন যোগে বরাক বুলেটিনকে জানান যে শহর এলাকায় ট্রাকের মত ভারি যানবাহন চলাচলের অনুমতি কেবল রাত ১ টা থেকে সকাল ৪ টা পর্যন্ত রয়েছে। ভারি যানবাহন চলাচলের সময়সীমা পরিবর্তন সংক্রান্ত সংবাদ প্রতিবেদনের বিষয়ে তাকে অবহিত করা হলে তিনি জানান যে ‘এটি ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে’।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এক আদেশ জারি করা হয়েছে যে রবিবার রাতে শিলচরে সাংবাদিকের দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর ঘটনার তীব্র প্রতিবাদের পর রাত ১ টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত শহরে ভারি যানবাহন চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য,শিলচরের বিটিএন’র সাংবাদিক মলিন শর্মা ৪৩ বছর বয়সে রবিবার রাতে তারাপুরে এক দুর্ঘটনায় মারা যান। এরপর প্রচুর সংখ্যক সাংবাদিক রাস্তা ঘেরাও করেন এবং ঘাতক টিপারের চালককে গ্রেফতারের দাবি জানান। অনেক রাত পর্যন্ত চলে প্রতিবাদ। রাত প্রায় ৩টায় অবরোধ তুলে দেওয়া হয়।
এই ঘটনাটি সাধারণ জনগণের মধ্যে বিশেষভাবে মিডিয়ার লোকজনের মধ্যে প্রচন্ড ক্ষোভের সৃষ্টি করে। ভারি যানবাহনের ক্ষেত্রে বেপরোয়া গাড়ি চালানো রোধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণেরও দাবি জানান হয়।
এদিকে বুধবারের এই বৈঠক সম্পর্কে মাদ্দুরি জানান, এদিন ট্রাফিক উপদেষ্টা কমিটির একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়, যাতে বিভিন্ন প্রাসঙ্গিক সংস্থার প্রতিনিধিরা তাদের দৃষ্টিভঙ্গি জানান। সভায় সময় শিথিল করার ওপর জোর দেওয়া হয়েছিল। তবে এ নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। ‘সব স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া পর্যন্ত রাত একটা থেকে চারটা অব্দি সময়সীমা বরাদ্দ করা হয়েছে ভারি যানবাহন চলাচলের জন্য।’
বৃহস্পতিবার দুপুরে এ বিষয়ে একটি স্পষ্টীকরণ দিয়ে বলা হয়েছে যে শিলচর শহরে ভারি যানবাহন চলাচলের জন্য এখনও সময়সীমা একটা থেকে চারটা অব্দি রয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে দৈনিক যুগশঙ্খের সিনিয়র রিপোর্টার তমোজিৎ ভট্টাচার্য বলেন, রাতে শিলচর শহরের রাস্তায় বেপরোয়া ও ভয়ঙ্কর গাড়ি চালানো সবার জীবনের জন্যই একটা বড় হুমকি। তিনি আরও বলেন, কমপক্ষে বারোটা অবধি(যদি রাত একটা সম্ভব না হয়) শহরের ভেতরে ভারি যানবাহন চলাচলের অনুমতি দেওয়া উচিত নয়।
প্রাগ নিউজ’র সংবাদদাতা অভিজিৎ ভট্টাচার্য বলেন, একটি সিন্ডিকেট এ ব্যাপারে সক্রিয় রয়েছে এবং রাতের বেলা শিলচরের রাস্তায় টিপার চালানো সংক্রান্ত ব্যাপারে প্রচুর অর্থও জড়িত রয়েছে। তিনি আরো বলেন, শিলচর শহরের মধ্যে ভারি যানবাহন চলাচলের সময়টি অপরিবর্তিত (রাত ১ টা থেকে ৪ টা পর্যন্ত) থাকা উচিত।
Comments are closed.