শেষমেষ করিমগঞ্জে আটক মালুগ্রামে শিশু কন্যাকে দুবার ধর্ষণে অভিযুক্ত যুবক
শেষমেষ করিমগঞ্জে ধরা পরল মালুগ্রামে ৮-বছরের শিশু কন্যাকে দুবার ধর্ষণের অভিযুক্ত যুবকটি। পুলিশসুপার বৈভব চন্দ্রকান্ত নিম্বালকর বৃহস্পতিবার রাত দুটোয় জানান, বিশেষ অভিযান চালিয়ে করিমগঞ্জ থেকে আটক করা হয়েছে অভিযুক্তকে। মালুগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক এসকে সিমতের নেতৃত্বে একটি বিশেষ দল গভীর রাতে করিমগঞ্জ জেলায় অভিযান চালিয়ে বছর-২৫-য়ের দুষ্কৃতীকে আটক করেছে। তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন পুলিশ সুপার।
উল্লেখ্য, নিজের বাড়িতেই জ্যাঠতুতো ভাইয়ের যৌন লালসার শিকার হয়ে শিলচরের এক বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে ৮-বছর-বয়সের একটি শিশু। একবার নয়, দুবার নিজের বাড়িতেই
যৌন হেনস্থার শিকার হয়েছিল ছোট্ট শিশুটি। প্রথম ঘটনার পর তার মাকে হুমকি দিয়ে মুখ বন্ধ রেখেছিলেন পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। তবে দ্বিতীয় ঘটনার পর নিজের মেয়ের গোপনাঙ্গ দিয়ে রক্ত ঝরতে দেখে সব ভয় ভুলে যান তার মা। সোজা পুলিশের কাছে গিয়ে খবরটি জানিয়ে মামলা দায়ের করেন।
২০ এপ্রিল মালুগ্রামের ইটখোলা এলাকায় নিজের বাড়িতে ভাইয়ের হাতে প্রথমবার যৌন নিগ্রহের শিকার হয়েছিল ৮ বছরের শিশু কন্যাটি। অথচ ঘটনার পর ধর্ষণকারী যুবকটি শিশুকন্যা এবং তার মাকে প্রাণে মারার হুমকি দিয়ে মুখ বন্ধ করে দিয়েছিল। এমনকি আহত অবস্থায় ছোট্ট মেয়েটির ন্যূনতম চিকিৎসাও হয়নি। এতে ধীরে ধীরে শিশুকন্যাটির গোপন স্থানে ইনফেকশন হয়। গত সপ্তাহে আবার সুযোগ পেয়ে শিশু কন্যাটির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তার জ্যাঠতুতো দাদা। এবার জীবন সংশয় পরিস্থিতিতে চলে যায় শিশুটি, এতে তার মা সাহস যুগিয়ে পুলিশের কাছে তথ্যটি তুলে ধরেন। তবে এর আগেই গা-ঢাকা দিতে সমর্থ হয় দুষ্কৃতী।
শিশু কন্যার মা এজাহারে বলেছেন, ২০ এপ্রিল দিনের বেলা তার ভাসুরের ছেলে প্রথমবার তার মেয়ের সঙ্গে দুষ্কর্ম করে। তিনি সেই সময় বাড়িতে ছিলেন না। এরপর ছোট্ট মেয়েটিকে সে ভয় দেখায়, এই কথা কাউকে বললে তার মা-বাবাকে মেরে ফেলবে বলে। মা খবরটি জানতে পেয়ে যখন কথা বলতে যান, তখন তার ভাসুরের ছেলে আবার হুমকি দেয়, তিনি যদি প্রকাশ্যে কোনো কিছু আনেন তাহলে তার মেয়েকে মেরে ফেলবে, বাঁচতে হলে চুপ থাকতে বলে সে। এছাড়া পরিবারের কিছু সদস্য তাকে বলেন বংশের সম্মান রক্ষা করতে তিনি যাতে মুখ বন্ধ রাখেন। কন্যার ভবিষ্যতের কথা ভেবে মা মুখ বন্ধ করেছিলেন। এই পরিস্থিতিতে তার আহত কন্যার তার ন্যূনতম চিকিৎসাটুকু হয়নি।
তিনি বলেন, ‘পরিস্থিতি এই পর্যায়ে এসে পৌঁছুত না যদি আমি সময়মত সাহস যুগিয়ে প্রতিবাদ করতে পারতাম। এবার আমার মেয়ের জীবন সংকটে, এখন আমি আর চুপ করে থাকতে পারিনি। হয়ত এরপর পরিবার বা পারিপার্শ্বিক থেকে আমার ওপর নানান ধরনের চাপ সৃষ্টি করা হতে পারে। তবে এখন আর আমি তাদের ভয় পাচ্ছি না। আমি চাই দোষীকে অতিসত্বর আটক করা হোক এবং কঠোর শাস্তি প্রদানের ব্যবস্থা হোক।’
পুলিশসুপার বৈভব চন্দ্রকান্ত নিম্ললকরের বয়ান, “বিভাগের আধিকারিকরা অত্যন্ত দক্ষ হাতে কাজটি করে দুষ্কৃতীকে আটক করেছেন। তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শিশুকে যৌন নির্যাতন সহ আরও কিছু কঠোর ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণ করা হবে। এমন কাজ করা লোকেদের যাতে কোঠোর শান্তি হয়, আমরা আদালতের কাছে অনুরোধ রাখব।”
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন মেয়েটির গোপনাঙ্গে ইউটিআই নামের এক বিশেষ ধরনের ইনফেকশন হয়েছে যা অত্যন্ত গুরুতর। তবে এর পিছনে কি কারণ রয়েছে সেটা তারা পরিষ্কার বলতে পারবেন না। যেহেতু মেয়েটির মা একটি অভিযোগ করেছেন তাই ঘটনার সত্যতা প্রকাশ্যে আনতে পুলিশ শেষ কথা বলবে। তবে মেয়েটির অবস্থার উন্নতি হয়েছে, এভাবে সুস্থ হয়ে উঠলে আগামীতে তাকে হাসপাতাল থেকে মুক্তি দেওয়া সম্ভব হবে।
Comments are closed.