
অকালে চলে গেলেন আকাশবাণীর অস্থায়ী ঘোষক তথা কৃষি বিভাগের কর্মী রথীন্দ্র চক্রবর্তী
কঠিন সময় শিলচরবাসীকে শোকোস্তব্ধ করে তুলছে বারবার, প্রতিনিয়ত। মৃত্যু মিছিলে আরও এক সংযোজন। চলে গেলেন রথীন্দ্র চক্রবর্তী। আকাশবাণী শিলচরের অস্থায়ী ঘোষক তথা কৃষি বিভাগের ফিল্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট। যদিও কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিলেন, তবে হোম আইসোলেশনেই এক সময় নেগেটিভ হয়ে এই রোগ থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। কিন্তু এর কিছুদিন পর শ্বাসকষ্ট শুরু হলে তাঁর যন্ত্রণা প্রবল হয়। বাধ্য হয়ে গত ১৯ মে গ্রিন হিলস’য়ে ভর্তি হন। শুক্রবার রাত ৯টা ৭ মিনিটে এতদিনের লড়াইয়ের অবসান ঘটিয়ে পোস্ট কোভিড জটিলতার ফলে রথীন্দ্র চক্রবর্তী চলে যান আর না ফেরার দেশে। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৮ বছর। তিনি স্ত্রী রিমা, দুই পুত্র সৌরভ, সৌম্য এবং অসংখ্য প্রিয়জনদের রেখে চলে গেলেন এই অসময়ে।
আকাশবাণী শিলচর কেন্দ্র বিশেষভাবে কৃষি বিভাগের অনুষ্ঠান যারা শুনেন তাদের কাছে রথীন্দ্র চক্রবর্তীর কন্ঠ খুবই পরিচিত একটা কন্ঠ। শুধু পরিচিত নয়, কথা বলার স্টাইল এবং সুকন্ঠের সুবাদে যথেষ্ট জনপ্রিয় ছিলেন রথীন্দ্র চক্রবর্তী। ১৯৮৮ ইংরেজি থেকে তিনি আকাশবাণীর সঙ্গে জড়িত ছিলেন। অস্থায়ী ঘোষক হিসেবে কাজ করা ছাড়াও তিনি ‘চাষ আবাদের কথা’ অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করতেন। সাবলীল কন্ঠে তার পরিবেশিত গল্প ‘চাষ আবাদের কথা’ অনুষ্ঠানে অন্যতম আকর্ষণ ছিল। আকাশবাণী শিলচর কেন্দ্রে সহকর্মীদের মধ্যে খুবই জনপ্রিয় ছিলেন তিনি। এই অবস্থায় শিলচর শহরে বিশেষভাবে আকাশবাণী শিলচর কেন্দ্রে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সহকর্মীরা কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না তার এভাবে অসময়ে চলে যাওয়া।
শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ার পর থেকেই তিনি গ্রিন হিলস হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছিল। অবস্থার কিছুটা উন্নতিও হয়েছিল। পরে অবস্থার উন্নতি হওয়ায় তাকে জেনারেল ক্যাবিনে স্থানান্তরিত করা হয়। কিন্তু হঠাৎ করে শুক্রবার সকালে স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটায় তিনি কোমাতে চলে যান। আবার তাঁকে আইসিইউ’তে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু শেষ রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। পোস্ট কোভিড নিউমোনিয়া এবং সেপ্টিসেমিয়ার ফলে মৃত্যু হয় তাঁর। জীবন যুদ্ধে হেরে শোকস্তব্ধ করে গেলেন তার অসংখ্য প্রিয়জনদের।
আজ ভোরে তার নশ্বর দেহ শিলচর শ্মশান ঘাটে দাহ করা হয়।
তারাপুর রায়গর এলাকায় মূলবাড়ী হলেও তিনি সুভাষ নগর এলাকায় ফ্ল্যাটে থাকতেন।
মৃত্যুকালে তিনি রেখে গেলেন দুই পুত্র অনিরুদ্ধ(সৌরভ) এবং অনুভব (সৌম্য) ও স্ত্রী রিমা চৌধুরিকে এবং অসংখ্য গুণমুগ্ধকে।
Comments are closed.