Also read in

'স্বপ্নপূরণ' এর চাপ সহ্য করতে না পেরে নিজের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিল ছাত্র

পড়াশোনার চাপ সহ্য করতে না
পেরে কিশোর-যুবকদের আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনা ক্রমশই বেড়ে চলেছে। অনেকের এও অভিযোগ, একদিকে স্কুলে পড়াশোনার চাপ, ভালো ফলাফল করার চাপ, অন্যদিকে অভিভাবকদের শাসন, সব মিলিয়ে ছাত্রদের দিশেহারা অবস্থা। অন্যদিকে অভিভাবকদের অভিযোগের সুরও স্পষ্ট, পড়াশোনায় অহেতুক অমনোযোগিতা, তার উপর মোবাইলে গেম খেলা, সবমিলিয়ে ছাত্রছাত্রীরা নিজেরাই অহেতুক বাড়তি চাপ সৃষ্টি করছে। তবে অভিযোগের তীর যেদিক থেকেই আসুক কিংবা কারণ যাই হোক, ছাত্র-ছাত্রীদের নিজেদের ক্ষতি করার প্রবণতা বেড়েই চলেছে। এ রকমই একটা ঘটনা ঘটলো নিউ শিলচর এলাকায় শনিবার বিকেলে। জানা যায়, পড়ার চাপ সহ্য করতে না পেরে নিজের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় উজ্জীবন দাস (পরিবর্তিত নাম)। ষোল বছরের কিশোরটি কয়েকদিন ধরেই পড়াশোনার ধকল সহ্য করতে না পেরে মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল। উল্লেখ্য, মাধ্যমিকে ভালো ফলাফল করার পর কলা শাখায় ভর্তি হতে চেয়েছিল উজ্জীবন, কিন্তু বিজ্ঞান শাখায় তাকে ভর্তিি করানো হয় ।

খবরে প্রকাশ, কিশোরটি হঠাৎ করে নিজের বাড়ির বিছানায় আগুন লাগিয়ে দেয়। আগুন দেখতে পেয়ে হইচই পড়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে ফায়ার ব্রিগেডে খবর দেওয়া হয়। যদিও ছেলেটি তখন পাশের ঘরে শুয়ে ছিল। পরে পুলিশ তাকে ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করতে থানায় নিয়ে যায়।

ছেলেটি সাই বিকাশ স্কুলে একাদশ শ্রেণীতে পড়ছে বলে জানা যায়। কয়েকদিন ধরেই ছেলেটি মানসিক অশান্তিতে ভুগছিল বলে তার মার কাছ থেকে জানা যায় । তার মানসিক অশান্তি এই পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে সে তার পড়ার বই পুড়িয়ে দেয়। শুধু তাই নয়, সে তার বোনের বইপত্রেও আগুন লাগিয়ে দেয়।

ছেলেটির এই অবস্থা দেখে তার মা এবং অন্যান্যরা এ ব্যাপারে এগিয়ে আসেন। পরে ছেলেটির মা থানা থেকে তাকে কাউন্সেলিং এর জন্য হাসপাতালে নিয়ে যান। এ ব্যাপারে ছেলেটির মামা তাদের সাহায্য করেন। উল্লেখ্য, ছাত্রটির বাবা এক আধা-সরকারি অর্থকরী সংস্থার কর্মী যিনি বর্তমানে শিলচরের বাইরে রয়েছেন।

এধরনের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ছেলেটির মা মনে করেন, পড়াশোনার ক্ষেত্রেও ছেলেমেয়ের ১০০ শতাংশ চেষ্টা চালানো উচিত। তারপরও যদি তাদের পক্ষে সম্ভব না হয়, তাহলে অবশ্যই অভিভাবককে জানানো উচিত। তবে চেষ্টা না করে শুধু মোবাইলে গেম খেলে কিংবা সময় নষ্ট করে কেউই নিজের ভবিষ্যৎকে উজ্জ্বল করে তুলতে পারে না। আর ছেলে মেয়েরা যদি সত্যিকার অর্থে পড়াশোনার চাপ সহ্য করতে না পারে কিংবা তাদের জন্য অত্যধিক হয়ে যায় তবে কোন অভিভাবকও জোর করবে না।

বরাক উপত্যকায় এ ধরনের ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর কারণ যাই হোক, কিন্তু এ ধরনের সমস্যার সমাধান বের করতে না পারলে ছাত্র-ছাত্রী তথা অভিভাবকদের মধ্যে চিন্তা বাড়বে বৈ কমবে না।

Comments are closed.

error: Content is protected !!