রবিবারের ঘটনা লজ্জাজনক : সাংসদ সুস্মিতা, যা কিছু ঘটলো, তা মোটেও ভালো হয়নি: কংগ্রেস নেতা তমাল বণিক, বিক্ষোভ প্রদর্শন পার্টির সিদ্ধান্ত ছিল না: কাছাড় বিজেপি সভাপতি
রবিবার শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থায় যা কিছু ঘটেছে, তা নিয়ে গোটা শহরেই চর্চা চলছে। যেভাবে ডি এস একে কেন্দ্র করে শাসকদল ভারতীয় জনতা পার্টি প্রকাশ্যে ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে নেমে পড়েছে সেটাকে মোটেও ভালো চোখে দেখছেন না শিলচরের ক্রীড়াপ্রেমীরা। সংস্থার প্রধান গেটের সামনে তুমুল বিক্ষোভের জেরে অবশেষে বিশেষ সাধারণ সভা মুলতবি করতে হয় ডি এস একে। বিক্ষোভকারীরা প্রধান গেটের সামনে ধর্না দিয়ে কাউকেই ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়নি। ফলে সংস্থার প্রধান গেটের ঠিক উল্টোদিকের রাস্তাতেই প্রায় দুই ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয় সংস্থার সদস্যসহ অতীতের দিকপাল খেলোয়ারদের। স্বাভাবিকভাবেই রাজনীতির মাঠেও এই ইস্যুটা ঝড় তুলেছে। তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন বিরোধীপক্ষের নেতারাও।
তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ তথা শিলচর ডি এস এর জেনারেল কাউন্সিল মেম্বার সুস্মিতা দেব রবিবারের ঘটনা কে লজ্জাজনক আখ্যা দিয়েছেন। ঘটনার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বরাক বুলেটিন কে সুস্মিতা বলেন, ‘শিলচর ডি এস এ একটা অটোনমাস বডি। এর নিজস্ব সংবিধান রয়েছে। ক্রীড়া জগতের সঙ্গে জড়িতরাই এই সংস্থাটাকে চালাচ্ছেন। কাজেই ডি এস এ রাজনীতির স্থান নয়। রবিবার যা কিছু ঘটেছে সেটা লজ্জাজনক।’
কংগ্রেসের নেতা তথা প্রাক্তন খেলোয়ার ও ডি এস এর জেনারেল কাউন্সিল মেম্বার তমাল কান্তি বণিক ও গোটা বিষয়টাকে ভালো চোখে দেখছেন না। তিনি বলেন, ‘যা কিছু ঘটেছে তা মোটেও ভালো হয়নি। অতীতের দিকপাল খেলোয়াড়রা যারা ক্রীড়া জগতে জেলার সুনাম করেছেন তাদেরকে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে হল। আমি মনে করি, খেলাধুলার সঙ্গে জড়িতরাই স্পোর্টস বডিতে আসলে ভালো।’ তমাল বাবু আরও বলেন, ‘একটা বিষয় আমার বোধগম্য হলো না, ডি এস এর বর্তমান কমিটি তো গত দু বছর থেকেই রয়েছে। তাহলে যারা বিক্ষোভ দেখালেন তারা এতটা দিন কোথায় ছিলেন? এতটা দিন তাদের কেন মনে হল না ডি এস এর জন্য খেলাধুলার অবনতি হচ্ছে। এখনই কেন তাদের বিক্ষোভ প্রদর্শন করার কথা মাথায় এলো।’ প্রাক্তন পুরপ্রধান বলেন, ‘আমি তো মনে করি বর্তমান কমিটি ঠিক কাজ করেছে। কারণ আজ যদি আমি জি সি কলেজের প্রাক্তনী হিসেবে ডিএস এতে প্রতিনিধিত্ব করতে চলে যাই তাহলে সেটা তো ঠিক হবে না। যারা কলেজের ক্রীড়া বিভাগের দায়িত্বে রয়েছেন যাওয়া উচিত তো তাদের।’
রবিবারের ঘটনায় কিন্তু সরকারের ভাবমূর্তি তেও ধাক্কা লেগেছে। বিশেষ করে স্থানীয় ক্রীড়াপ্রেমীদের কাছে তো বটেই। এমনকি যারা শিলচর ডি এস এর সঙ্গে জড়িত নন, কোনো খোঁজ খবরও রাখেন না, তারাও কিন্তু শাসকগোষ্ঠীর এই বিক্ষোভ প্রদর্শনের সমালোচনা করছেন। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, বিজেপির কাছাড় জেলা সভাপতি বিমলেন্দু রায় বরাক বুলেটিন কে জানিয়েছেন, রবিবার শিলচর ডিএস এতে বিক্ষোভ প্রদর্শন পার্টির সিদ্ধান্ত ছিল না। তিনি বলেন, ‘আমি অসুস্থ ছিলাম। তাই কি ঘটেছে, সে সম্পর্কে জানতাম না। পরে পত্র পত্রিকার মাধ্যমে বিষয়টা জানতে পারলাম। আমি দু-চারজন কর্মকর্তার সঙ্গে এ নিয়ে আলাপ করেছি। ওদের কাছে জানতে চেয়েছি এটা তো পার্টির সিদ্ধান্ত ছিল না। তাহলে কেন ওরা বিক্ষোভ প্রদর্শনে গেল। ওরা আমায় জানিয়েছে, সদস্যপদ বাতিল হওয়া স্কুল কলেজের প্রাক্তনী হিসেবেই ওরা গিয়েছিল। যা কিছু ঘটেছে তা দুর্ভাগ্যজনক। নিজেদের মধ্যে এমনটা হওয়া উচিত নয়। এ নিয়ে আমরা এক বৈঠকে বসবো। দেখবো কিভাবে কি করা যায়।’
Comments are closed.